মেয়েদের জন্য ঘরে বসে ব্যবসা করার দুর্দান্ত কিছু আইডিয়া
প্রিয় পাঠক আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করব মেয়েদের জন্য ঘরে বসে ব্যবসা করার দুর্দান্ত কিছু আইডিয়া সম্পর্কে। বর্তমানে অধিকাংশ মেয়েরাই চেষ্টা করছে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। বাবা-মা কিংবা স্বামীর শরণাপন্ন না হয়ে নিজেরাই চেষ্টা করছে কিছু একটা করার। আর্টিকেলটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের সঙ্গেই থাকুন।
পোস্ট সূচীপত্রঃযে সকল মেয়েরা নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে জানতে চাচ্ছে তাদের জন্য আজ আমাদের এই আর্টিকেলটি। চলুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক।মেয়েদের জন্য ঘরে বসে ব্যবসা করার আইডিয়া গুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
মেয়েদের ব্যবসার আইডিয়া
একজন সফল ব্যবসার মালিক হওয়ার সাথে লিঙ্গ, অবস্থান বা বয়সের কোন সম্পর্ক নেই। আপনার এবং আপনার পরিবারের কিছু বাড়তি আয়ের জন্য ঘরে বসে বিভিন্ন ধরনের লাভজনক ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বর্তমানে মেয়েরা অনেক দিক দিয়ে এগিয়ে আছে। পুরুষের পাশাপাশি মেয়েরাও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছে।
তবে অনেকে আছে যারা বাচ্চা এবং সংসার সামলিয়ে বাহিরে চাকরি করার মতো পরিস্থিতি থাকে না। তাই তাদের জন্য ঘরে বসে অনলাইন ভিত্তিক কিছু ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে এসেছি। আপনি ঘরে বসেই এই সহজ এবং অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা গুলি করতে পারবেন। সংসার এবং বাচ্চাকে সময় দেওয়ার পাশাপাশি আপনি নিজের একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে পারবেন।
প্রতি মাসে আপনার সেখান থেকে ভালো একটা এমাউন্ট আসবে যা আপনার সংসারে স্বচ্ছলতা আরো বাড়িয়ে দিবে। অবসর সময়টাকে অবহেলা না করে আপনার পছন্দ অনুযায়ী যে কোন একটা ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যা আপনার জীবনটাকে পরিবর্তন করতে সহায়তা করবে।
বর্তমান সময়ে অধিকাংশ মেয়েরাই অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করছে এবং অনেকে সফলতা ও পেয়েছে। তাহলে আপনি কেন পিছিয়ে থাকবেন। এখনই তো সময় আপনার প্রতিভাটাকে সবার সামনে তুলে ধরা। তাই আর দেরি না করে আসুন জেনে নেই মেয়েদের জন্য ঘরে বসে দুর্দান্ত কিছু ব্যবসার আইডিয়া।
বিউটি পার্লারের ব্যবসা
বর্তমানে মেয়েদের ঘরে বসে ব্যবসা করার একটি সুন্দর আইডিয়া হল বিউটি পার্লার। বিউটি পার্লারের ব্যবসা শুরু করার আগে বিভিন্ন ধরনের মেকআপ সম্পর্কে জ্ঞান থাকা সবার আগে জরুরী। কোন প্রোডাক্টটা ভালো, কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট ভালো এই সম্পর্কে জ্ঞান থাকা অনেক বেশি জরুরী।
একটি বিউটি পার্লার খোলার আগে আপনি মেকআপ , ব্রাইডাল মেকাপ, হেয়ার স্টাইল সম্পর্কে একটা কোর্স করে নিতে পারেন। এতে আপনার অভিজ্ঞতা বাড়বে এবং কাজে অনেক দক্ষ হবেন। ভালো সার্ভিস দিলে প্রতিনিয়ত আপনার কাস্টমার বাড়বে।
বিউটি পার্লারের ক্ষেত্রে আপনার বিভিন্ন ধরনের মেকআপ প্রোডাক্ট সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে যেমন ধরেন প্রাইমার, ফাউন্ডেশন, আইশ্যাডো প্যালেট, কন্ট্রোলার, কালার কারেক্টিং, ব্রাশ, সেটিং স্প্রে ইত্যাদি বিষয়ে আপনার খুব ভালো ধারণা থাকতে হবে। এবং এই প্রোডাক্টগুলো কিভাবে স্ক্রিনে এপ্লাই করতে হবে সে সম্পর্কে আপনার ভালো ধারণা থাকতে হবে।
এছাড়াও রয়েছে হেয়ার স্টাইল, বিভিন্ন ধরনের হেয়ার স্টাইল সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা থাকতে হবে। কেননা একজন কাস্টমারের চাহিদা আলাদা আলাদা হেয়ার স্টাইল। তাই আপনাকে অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের হেয়ার স্টাইল সম্পর্কে জানতে হবে। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন উৎসবে মেহেদী পড়ানো। যেমন ঈদ, পূজা, বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠান বাঙালিরা মেহেদী পড়তে ভীষণ পছন্দ করে।
তাই এই মেহেদী ডিজাইন সম্পর্কে আপনার বিশদভাবে জ্ঞান থাকতে হবে। আপনার যদি এইসব বিষয়ে দক্ষতা থেকে থাকে তাহলে বসে না থেকে অল্প পুজিতে আপনি বিউটি পার্লার খুলে ফেলতে পারেন। এই ব্যবসাতে অল্প পুজিতে ভালো লাভ করতে পারবেন।
অনলাইনে জামা কাপড়ের ব্যবসা
যেসব মেয়েরা চাকরি খুঁজছেন কিন্তু চাকরি পাচ্ছেন না বা মনের মত হচ্ছে না তারা বাসায় বসে না থেকে অনলাইনে জামা কাপড় বিক্রির ব্যবসা শুরু করতে পারেন অথবা যাদের বাচ্চা এবং সংসার সামলানোর পর যাদের হাতে অনেকটা সময় থাকে তারা চাইলে অনলাইনে জামা কাপড় বিক্রির ব্যবসা করতে পারেন।
এক্ষেত্রে অল্প পুজিতে আপনি ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। অনলাইনে জামা কাপড় বিক্রির ব্যবসাটি মহিলাদের জন্য ঘরে বসে ব্যবসা করার একটি সেরা আইডিয়া কেননা এই ব্যবসায় অল্প পুজিতে অনেক পরিমাণে লাভ করা যায়।
আপনি ফেসবুকে ঢুকলেই দেখতে পাবেন বিভিন্ন পেজ জামা কাপড় বিক্রি করে। আপনিও চাইলে তাদের মত একটা পেজ খুলে অল্প কিছু টাকা দিয়ে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। এর ফলে আপনার সময়ও কাটবে এবং আপনি কিছু টাকা আর্ন করে লাভবান হতে পারবেন।
হোমমেড খাবারের ব্যবসা
বর্তমানে অনলাইনে বিভিন্ন ব্যবসার পাশাপাশি হোমমেড খাবারের ব্যবসা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ কর্মব্যস্ততার জন্য বাসায় খাবার তৈরি করাটা বিরক্তি কর কাজ মনে করে তাই তারা নির্দ্বিধায় অনলাইনে খাবার অর্ডার করে থাকে। যার ফলে এই ব্যবসার প্রসার আরও দিন দিন বাড়ছে। আপনিও চাইলে এই ব্যবসায় নাম লেখাতে পারেন।
প্রতিদিন তো আপনার বাসায় রান্না করতেই হয় পাশাপাশি না হয় আপনি একটু বেশি রান্না করে সেগুলো সেল করলেন। যার ফলে আপনি বাড়তি আয় ও করতে পারবেন। তাই যারা গৃহিণী বা বাসায় বসে আছেন তাদের জন্য হতে পারে এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ। ফেসবুকে একটা পেজ খুলে আপনার বিভিন্ন খাবারের ছবি বা ভিডিও সেখানে আপলোড করতে পারেন।
এতে আপনার ভিউ বাড়বে এবং অনেক বেশি অর্ডার পাবেন। আপনার হাতে রান্না যদি সুস্বাদু হয় তাহলে আপনাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হবে না। একটি ব্যবসার মূল মন্ত্র হলো আপনাকে মানসম্মত প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে হবে। আপনি বিভিন্ন ধরনের খাবার সেল করতে পারেন।
রেগুলার রান্নার খাবারের পাশাপাশি আপনি আচার তৈরি করতে পারেন বা বেকারি রাইট এ তৈরি করতে পারেন। বর্তমানে মানুষের চাহিদার উপর বিবেচনা করে আপনি আপনার ব্যবসাটা সফলতার সাথে চালিয়ে যেতে পারেন। আরেকটি কথা না বললেই নয় হোমমেড খাবারের ব্যবসা লাভের পরিমাণটা অনেক বেশি।
হাতে তৈরি পোশাকের ব্যবসা
যদি আপনার হাতে যদি অনেক বেশি সময় থাকে তাহলে আপনি হাতে তৈরি পোশাকের ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। আপনার যদি সেলাই সম্পর্কে কোন অভিজ্ঞতা থেকে থাকে তাহলে সেই অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগিয়ে আপনি পোশাক তৈরির ব্যবসাটা এতে আপনার পুঁজি খুব একটা বেশি লাগবে না। শুধু মানসম্মত ডিজাইন আপনার কাস্টমারদের প্রোভাইড করলে আপনারা পিছন ফিরে তাকাতে হবে না।
থেকে থাকে। তাহলে সে সম্পর্কে আপনি একটা কোর্স করে নিতে পারেন। এতে আপনার কাজের মান আরো বৃদ্ধি পাবে। আপনি যদি মনে মনে ভাবেন কিছু একটা করতে হবে। তাহলে আপনি হাতে তৈরি পোশাকের ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। এর ফলে আপনার নিজের সচ্ছলতার পাশাপাশি আপনার পরিবারকেও সাহায্য করতে পারবেন।
ঘরে বসে মেয়েরা কন্টেন রাইটিং করতে পারে
আপনার যদি লেখালেখির উপর ভালো ধারণা থেকে থাকে বা আপনি লেখালেখি করতে পছন্দ করেন তাহলে আপনি কন্টেন রাইটিং শুরু করতে পারেন। কেননা ঘরে বসে কন্টেন রাইটিং করে আপনি ভালো একটা এমাউন্ট আয় করতে পারবেন।
মেয়েদের জন্য এটি দুর্দান্ত ব্যবসার আইডিয়া হতে পারে। আপনার বাহিরে কোন চাকরির জন্য ছোটাছুটি করতে হচ্ছে না। আপনি ঘরে বসে প্রতি মাসে ভালো একটা এমাউন্ট উপার্জন করতে পারছেন। তাই আপনার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এই কাজটাকে আপনার পেশা হিসেবে গড়ে নিতে পারেন।
মেয়েদের জন্য ব্লগিং আইডিয়া
মেয়েদের জন্য ঘরে বসে ব্লগিং আইডিয়াটা অনেক দুর্দান্ত একটি বিষয়। আপনি দৈনন্দিন কি করছেন ,কি খাচ্ছেন, কোথায় যাচ্ছেন সেই বিষয়গুলো ভিডিও আকারে সবার সামনে উপস্থাপন করায় হল ব্লগিং। আপনি ব্লগিং করে অনেক ভালো একটা এমাউন্ট উপার্জন করতে পারবেন।
যার জন্য আপনার বাড়তি কোন টাকা খরচ করতে হচ্ছে না। শুধুমাত্র হাতের ফোনটি দিয়েই শুরু করতে পারেন এই ব্লগিং যাত্রা। ব্লগিং করার জন্য আপনি যে ভিডিওগুলো করবেন সেগুলো আপনাকে মানুষের চোখে লাগার মত করে এডিট করে নিতে হবে।
এডিট করতেও আপনার কোন কোর্স করার প্রয়োজন নেই সে ক্ষেত্রে আপনি ইউটিউব থেকে বিভিন্ন টিউটোরিয়াল দেখে এডিট সম্পর্কে ধারণা নিতে পারে। বর্তমানে ইউটিউবে ভিডিও এডিটিং এর অনেক টিউটোরিয়াল ভিডিও রয়েছে।
রান্না শিখানোর কোর্স করাতে পারেন
আমরা বাহির থেকে যে সমস্ত খাবার কিনে খাই সাধারণত আমরা সেগুলো বাসায় খুব ভালো করে তৈরি করতে পারি না। বাহিরের খাবার যেমন বিরিয়ানি, তেহারি, পোলাও কোরমা, ফাস্ট ফুড আইটেম, বেকারি আইটেম এবং বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক আচার এই খাবারগুলো বেশিরভাগ মানুষ বাসায় ভালো করে তৈরি করতে পারে না।
তাই বাইরের আনহাইজেনিক খাবার গুলোর প্রতি মানুষ বেশি ঝুঁকে। যার ফলে দেখা দেয় না না ধরনের পেটের সমস্যা। আপনি যদি একজন ভালো রাধুনী হন। এবং সব ধরনের রান্না সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকে। তাহলে আপনি অনায়াসে একটা রান্না শিখানোর কোর্স শুরু করতে পারেন। আপনার বাসায় বসে থেকে এই কাজটা করতে পারবেন।
এতে আপনি ভালো একটা এমাউন্ট ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়াও বর্তমানে অনেক মেয়েরাই ইউটিউবে রান্নার চ্যানেল খুলে বিভিন্ন ধরনের রান্নার রেসিপি আপলোড করে। আপনি চাইলে সেভাবেও আপনার ব্যবসাটি দ্বার করাতে পারেন।
সেলাইয়ের কাজ শেখানোর কোর্স করাতে পারেন
বর্তমানে আমরা ইউটিউবে সেলাই শেখানোর কোর্স লিখে যদি সার্চ করি তাহলে বিভিন্ন ধরনের সেলাইয়ের কোর্স আমাদের সামনে চলে আসবে। সেখান থেকে প্রতিনিয়ত মানুষ সেলাই শিখে কাজ করছে। তাই আপনিও যদি চান বা আপনার যদি সময় থাকে তাহলে আপনিও এই কাজটি করতে পারেন। এই কাজ শেখানোর জন্য বেশি কিছু প্রয়োজন হয় না।
আপনার শুধু সেলাইয়ের কাজ সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। আপনি যেভাবে সেলাইয়ের কাজগুলো করেন ঠিক সেভাবেই আপনি মানুষকে শিখিয়ে দিতে পারবেন। সেলাই শেখানোর জন্য আপনার প্রথমে প্রয়োজন একটা ইউটিউব চ্যানেল খোলা।
সেখানে আপনি প্রতিনিয়ত সেলাইয়ের ভিডিও আপলোড করতে পারেন। আপনার ভিডিও টিউটোরিয়াল গুলো যদি সাধারন মানুষের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার চ্যানেলটি অনেক পরিচিতি পাবে। তাই ঘরে বসে না থেকে করাতে পারেন। ইনকাম করতে পারবেন।
শেষ কথা
সব মানুষেরই কিছু না কিছু দক্ষতা রয়েছে। তাই আপনার হাতে যদি সময় থেকে থাকে তাহলে ঘরে বসে না থেকে আপনি যে সম্পর্কে ভালো জানেন। সেটাকে কাজে লাগিয়ে আপনি একটা ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে পারেন ।যা ধীরে ধীরে আপনাকে সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিবে। তাই অবসর সময় ঘরে বসে না থেকে অল্প কিছু পুঁজি দিয়ে শুরু করতে পারেন আপনার স্বপ্নের ব্যবসা।
আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে বা কোন উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url