১৬ ই ডিসেম্বর কি দিবস - ১৬ ডিসেম্বরে কি হয়েছিল ২০২৩
প্রিয় পাঠক আপনি নিশ্চয়ই ১৬ই ডিসেম্বর কি দিবস - ১৬ই ডিসেম্বর কি হয়েছিল ২০২৩ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাকে ১৬ই ডিসেম্বর সম্পর্কে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব। বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃআর্টিকেলটিতে ১৬ই ডিসেম্বর সম্পর্কে বেশ কিছু ইম্পরট্যান্ট পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়লে আপনি বিস্তারিত জানতে পারবেন। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আমাদের সঙ্গেই থাকুন।
ভূমিকা
১৬ই ডিসেম্বর বাঙালি জাতির কাছে দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে সারা জীবন। যতদিন বাংলাদেশ আছে বা থাকবে ততদিন এই দিনটিকে বাঙালিরা মহান বিজয় দিবস হিসাবে পালন করে আসবে। কারণ এই দিনটিতেই বাঙালি জাতি পেয়েছিল একটা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ কে। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করে।
১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি একটি প্রজ্ঞাপনে ১৬ই ডিসেম্বর কে বাংলাদেশের জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা এবং সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। তখন থেকেই প্রতিবছর ১৬ই ডিসেম্বর বাঙালি জাতিরা বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় বিজয় দিবস উদযাপন করে আসছে।
১৬ই ডিসেম্বর কি দিবস
বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সকলের জানা উচিত ১৬ই ডিসেম্বর সম্পর্কে। এই দিনটিকে বাঙালি জাতিরা বিশেষ গুরুত্বের সাথে পালন করে আসছে কেননা দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দিনটিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা বাঙ্গালীদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
এরপর ১৯৭২ সাল থেকে প্রতিবছর ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পরবর্তী প্রজন্মকে জানানোর জন্য এই দিনটিকে বিশেষভাবে পালন করা হয়।
১৬ই ডিসেম্বরে সরকারি বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এখন আপনি নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন ১৬ই ডিসেম্বর হল মহান বিজয় দিবস।
১৬ই ডিসেম্বরে কি হয়েছিল
পাকিস্তান সৃষ্টি লগ্ন থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের ওপর পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষ বিভিন্নভাবে শোষণ নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। এই নির্যাতনের মাত্রা যখন অতিরিক্ত হয়ে যায় এবং পূর্ব পাকিস্তানের সহ্যের সীমা অতিক্রম করে ফেলে।
পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল ১৯৭০ সালে যখন বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয় কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তান আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা দেয়নি। এরপর বঙ্গবন্ধু নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তানের যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
এই যুদ্ধের স্থায়িত্ব ছিল দীর্ঘ নয় মাস। অনেক মানুষের প্রাণের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় লাভ করে। পাকিস্তানি বাহিনীদের আত্মসমর্পণের ফলে এই বিজয় অর্জিত হয়। যা বর্তমানে 16 ডিসেম্বর বা বিজয় দিবস হিসেবে আমরা উদযাপন করি।
১৬ ই ডিসেম্বর ভোরে কত বার তোপধ্বনি হয়
১৬ই ডিসেম্বর ভোরবেলায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিনটি শুরু করা হয়। জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে সম্মিলিত সামরিক কুচকাওয়াজে নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর সদস্যরা যোগদান করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কিংবা রাষ্ট্রপতি এই কুচকাওয়জে সালাম গ্রহণ করেন। বিপুল সংখ্যক লোক ১৬ই ডিসেম্বরে প্যারেড গ্রাউন্ডে উপস্থিত থাকেন।
বিজয় দিবসের কত বছর হলো
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের আত্মসমর্পণের ফলে পূর্ব পাকিস্তান চূড়ান্তভাবে বিজয়ের জন করে। সে অনুযায়ী হিসাব করলে বর্তমানে ২০২৩ সাল অনুযায়ী বিজয়ের ৫২ বছর পূর্ণ হল। প্রতিবছর ১৬ই ডিসেম্বর বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে উদযাপন করা হয়ে থাকে। আজ বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ৫২ বছর পূর্ণ হল।
আরও পড়ুনঃ সাইবার ক্রাইম থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বরে পর থেকে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ শক্তিশালী দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মনে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা বাড়াতে এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানাতে বিশেষ এই অনুষ্ঠানগুলো উদযাপন করা হয়।
বিজয় দিবস সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য
আপনাদের সুবিধার্থে বিজয় দিবস সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য নিচে তুলে ধরা হলোঃ
- বিজয় দিবস এই দিনটি ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।
- ১৯৭১ সালের পর থেকে ১৬ই ডিসেম্বর কে বিজয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং এই দিনটিকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে সারা দেশে ব্যাপকভাবে পালন করা হয়।
- ১৬ই ডিসেম্বরে সকল প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
- বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য স্মরণীয় একটি দিন হল বিজয় দিবস।
- সারা বিশ্বকে দেখানোর জন্য বিজয় দিবস একটি দিন যে দিনটিকে বাঙালিরা তুলে ধরে একটি শক্তিশালী এবং স্বাধীন জাতি হিসেবে।
বিজয় দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য
সম্মানিত সুধী,
আপনাদের সকলকে জানাই মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা। আজকের এই দিনটি মহান বিজয় দিবস পাওয়াটা অতটা মসৃণ ছিল না। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লক্ষ শহীদদের রক্তের বিনিময়ে এবং দুই লক্ষ মা বোনদের সম্মানের বিনিময়ে আমরা এই দিনটিকে অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।
শুধুমাত্র মাতৃ ভাষায় কথা বলার অধিকারের জন্য এবং স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার জন্য যেসব দামাল ছেলেরা ঝাপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের বিরুদ্ধে সেই সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জানাই অন্তরের অন্তস্থল থেকে গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মান ।
কতশত মানুষের রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা স্বাধীন দেশে বিচরণ করতে পারছি। আজ আমাদের ওপর নেই কোন জুলুম নেই কোন অত্যাচার। শুধুমাত্র তাদের জন্য যারা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য পাকিস্তানি বর্বর বাহিনীর সামনে রুখে দাঁড়িয়েছে।
যার কারনে আমরা স্বাধীন ভাবে মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারছি, স্বাধীন ভাবে বাঁচতে পারছি। একটু যদি পিছনে ফিরে তাকানো যায় বা পিছনের ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায় তাহলে বুঝতে পারবেন কতটা ত্যাগের বিনিময়ে এই বিজয় অর্জন হয়েছে।
সকল বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমার আজকের এই সংক্ষিপ্ত বক্তব্য আমি এখানে শেষ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে
১৬ ডিসেম্বর নিয়ে কিছু কথা
১৬ই ডিসেম্বর হল বাঙালি জাতির বিজয় অর্জনের দিন। এই বিজয় অর্জন খুব সহজ ছিল না। এই বিজয় অর্জনের জন্য বাঙালি জাতিকে তরতাজা প্রাণ খোয়াতে হয়েছে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষকে। আর 2 লক্ষ মা বোনকে হারাতে হয়েছে তাদের সম্মান। তবুও বাঙালি জাতি থেমেছিল না শেষ রক্ত বিন্দু পর্যন্ত তারা যুদ্ধ চালিয়ে গেছে।
শেষ পর্যন্ত যখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা বুঝতে পারল তারা হেরে যাবে। তখনই তারা আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নিল। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। আত্মসমর্পণ এর জায়গাটি ছিল ঢাকার কেন্দ্রস্থলে রেসকোর্স ময়দানে।
পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষ থেকে আত্মসমর্পণের দলিল স্বাক্ষর করেন জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী। এই স্বাক্ষরিত দলিলের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ একটি সর্বভৌম জাতি হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে নেয়। তখন থেকেই আমরা পাই একটি স্বাধীন বাংলাদেশ এবং স্বাধীন রাষ্ট্র।
শেষ কথা
বাঙালি জাতির জন্য বিজয় দিবস একটি বিশেষ দিন। এই দিনটিকে প্রত্যেক বাঙালি শ্রদ্ধার সাথে বরণ করে। দেশের প্রতি সম্মান জানিয়ে পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত, কুচকাওয়াজ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিনটিকে উদযাপন করা হয়। প্রতিবছর এই দিনটিতে সমস্ত সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে।
আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে অথবা কোন উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url