২৫শে ডিসেম্বর বড়দিন হওয়ার কারণ - যীশু খ্রিস্টের জন্মদিন ২০২৩

প্রিয় পাঠক আপনি নিশ্চয় ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন হওয়ার কারণ - যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন ২০২৩ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব। আশা করছি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
২৫ শে ডিসেম্বর বড়দিন হওয়ার কারণ-যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন২০২৩
পোস্ট সূচীপত্রঃএখানে ২৫ শে ডিসেম্বর বড়দিন হওয়ার কারণ সম্পর্কে বেশ কিছু ইম্পরট্যান্ট পয়েন্ট তুলে ধরা হয়েছে। আশা করছি আমাদের সঙ্গে থাকবেন।

ভূমিকা

খ্রিস্টান ধর্মের শিশুদেরকে এটা শেখানো হয় যে যারা সারা বছর বাবা মার সাথে ভালো ব্যবহার করে, ভদ্র হয়ে থাকে তাদেরকে বড়দিনের আগের রাতে স্যান্টাক্লজ এসে বিভিন্ন গিফট ও চকলেট উপহার দেয়। এই খুশিতে তারা ঘরের কোথাও একটা মোজা রেখে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে। এরপর তারা সকালে উঠে দেখে সুন্দর সুন্দর উপহার রাখা। 

আসলে বাচ্চার বাবা মারাই বা প্রিয়জনরা তাদের এই উপহারগুলো দিয়ে থাকে। স্যান্টাক্লজকে বাস্তবে দেখা না গেলেও খ্রিস্ট ধর্মের শিশুরা বিশ্বাস করে স্যান্টাক্লজ আছে। খ্রিস্টান ধর্মের শিশুদের জন্য বড়দিনের এটা সবচেয়ে আনন্দের বিষয়।

যিশুখ্রিস্টের জন্ম কোথায় হয়েছে

আমরা বাইবেল হতে জানতে পারি যে যিশুর জন্ম হয়েছিল জেরুজালেম হতে ছয় মাইল দক্ষিণে চুনা পাথরের পাহাড়ী দেশ যার নাম বেথলেহেমের। এখনও এই স্থানটিকে প্রাচীনতম খ্রিস্টান চার্চ, যিশুর জন্মের ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। 


যীশুর এই পবিত্র জন্মস্থানে প্রায় প্রতি বছর দুই লক্ষ্যের অধিক দর্শনার্থী ঘুরতে আসেন। বিশেষ করে বড়দিনে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় লেগে থাকে।

২৫ ডিসেম্বর বড় দিন হওয়ার কারণ

সারা বিশ্বে ২৫শে ডিসেম্বরকে যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন বা বড়োদিন হিসাবে পালন করা হয় কিন্তু যিশুর জন্ম তারিখ নিয়ে ঐতিহাসিক পত্রে উল্লেখ নাই। ৩৩৬ খ্রিস্টাব্দে রোমে প্রথম ২৫ ডিসেম্বর যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন হিসাবে পালন করা হয়। 

তারপর ৩৫০ খ্রিস্টাব্দে পোপ জুলিয়াস এই দিনটিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন হিসেবে ঘোষণা দেন। তারপর থেকেই এই দিনটিই ‘ক্রিসমাস ডে’ হিসাবে উদযাপন করা হয়।

যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন

কিংবদন্তিদের অনুসারে জানা যায়, যিশু খ্রীস্টের জন্ম হয়েছিল ২৪ অথবা ২৫ ডিসেম্বরে ০ সালের মাঝ রাতে। তারপর থেকেই সারা বিশ্বের খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীরা এই তারিখে মশীহ বা ঈশ্বরের পুত্রের জন্মদিন হিসেবে উদযাপন করে।

কিন্তু যীশু জন্মের প্রকৃত তারিখ সকলের অজানা। কারণ যিশু নিজে কখনো তার জীবনের গল্প লেখেননি। নিউ টেস্টামেন্টে যিশুর জন্ম তারিখ উল্লেখ নাই। এমনকি থিওলজি এবং চার্চের এনসাইক্লোপিডিয়া বলে: "যীশুর প্রকৃত জন্মদিন এখনও অজানা" কারণ তখনকার মানুষেরা বছর এবং দিন সম্পর্কে বেশি একটা অসচেতন ছিল না।। 

আজ অবধি যীশুর প্রকৃত জন্মদিন এখনও অস্পষ্ট। আদিযুগীয় খ্রিস্টান ধর্মের বিশ্বাস ২৫শে ডিসেম্বরের ঠিক নয় মাস পূর্বে যীশু তার মা মেরির গর্ভে প্রবেশ করেন। সেই ধারণা অনুযায়ী পঁচিশে ডিসেম্বর যীশু খ্রীষ্টের জন্মদিন পালন করা হয়।

যিশু খ্রিস্টের মৃত্যুর তারিখ

যিশুর মৃত্যুর প্রকৃত তারিখ এখনও পণ্ডিতদের মধ্যে বিতর্কের রয়েছে। যিশুর মৃত্যুর পর জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের তারিখ, যা ৪৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রবর্তিত হয়েছিল, এবং সেই নিয়ম অনুসরণ করে যে ঐতিহাসিক তারিখগুলি সেই সময়ে ব্যবহৃত ক্যালেন্ডারকে হিসেব করে চলে। 


এখান থেকেই হিসেব করে জানানা যায় যীশু শুক্রবার, ৩ এপ্রিল, ৩৩ খ্রিস্টাব্দে প্রায় ৩ টায়, নিস্তারপর্বের দিন এবং বিশ্রামবার শুরু হওয়ার কয়েক ঘন্টা আগে মারা যান।

বড়দিন কি আসলেই বড়দিন

পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে বাংলাদেশের অবস্থান। বছরের সবচেয়ে দীর্ঘতম দিন হলো ২১ জুন এবং ২১ ডিসেম্বর হল সবচেয়ে ছোট দিন। সেই হিসেবে ২৫ ডিসেম্বর স্বাধীনতা দিনটি ছোট হওয়ারই কথা। অথচ এই দিনটিকে কেন বড় দিন বলা হয় চলুন জেনে নেই। আয়তনের দিক দিয়ে ২৫ ডিসেম্বর দিনটি ছোট হলেও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কাছে এই দিনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ । 

কেননা তারা মনে করে এই দিনটি যীশুখ্রীষ্টের জন্মদিন। এ কারণেই তারা ২৫ ডিসেম্বরকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিন বা বড় দিন বলে আখ্যায়িত করে। আজ পর্যন্ত যীশু খ্রীষ্টের জন্ম কবে হয়েছে সে সম্পর্কে কেউ কিছু জানে না। 

তার জন্মদিন সম্পর্কে কোথাও কোনো কিছু লেখা নেই। ৩৫০ খ্রিস্টাব্দে পপ জুলিয়াস ২৫ ডিসেম্বর কে যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন থেকেই ২৫ ডিসেম্বর কে যীশু খ্রীষ্টের জন্মদিন হিসেবে বড় দিন বা ক্রিসমাস ডে উদযাপিত হয়ে আসছে।

বড়দিন কেন বলা হয়

২৫ ডিসেম্বর কে বড়দিন বলার কারণ হলো। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ মনে করে ২৫শে ডিসেম্বরের নয় মাস পূর্বে মেরির গর্ভে যীশু প্রবেশ করে। তাই ২৫ ডিসেম্বর কে যীশুর জন্মদিন হিসেবে খ্রিস্টান ধর্মের লোকেরা ক্রিসমাস ডে বা বড় দিন উদযাপন করে থাকে। 

পঁচিশে ডিসেম্বর দিনটি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং আনন্দের দিন তাই এই দিনটিকে তারা বড়দিন বলে আখ্যায়িত করে। তবে প্রকৃতপক্ষে আয়তনের দিক থেকে ২৫শে ডিসেম্বর দিনটি বড় নয়।

শেষ কথা

যীশু খ্রীষ্টের জন্মদিন সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য না থাকলেও খ্রিস্টান ধর্মের পণ্ডিতেরা মনে করেন ২৫ ডিসেম্বর হল যীশু খ্রীষ্টের জন্মদিন। তাই তারা বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনার মাধ্যমে এই দিনটি বিশেষ গুরুত্বের সাথে উদযাপন করে থাকে। এজন্য দিনটিকে তারা বড়দিন বা ক্রিসমাস ডে বলে।

আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে বা বড়দিন সম্পর্কে কিছু জানতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url