কাঁচা জিরা খাওয়ার উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক - জিরা চাষ পদ্ধতি
সুস্বাদু ৭ টি সবজি রান্না জানতে ক্লিক করুনপ্রত্যেক বাঙালি রান্নাঘরে জিরা সুপরিচিত একটি মসলা। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের খাবার এর স্বাদ বৃদ্ধি করতে জিরা ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে জিরা শুধু রান্নার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।, জিরার রয়েছে ভেষজ কিছু ঔষধি গুণ। তাই আজ আমরা জানবো কাঁচা জিরা খাওয়ার উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক - জিরা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে।
জিরার উপকারিতার কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা না থাকলেও প্রাচীনকাল থেকে ভেষজ ঔষধ হিসেবে জিরা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বর্তমান সময়েও জিরার ঔষধি গুণের বেশ কদর রয়েছে।আজ আমরা এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে জানব জিরার বেশ কিছু উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে।
পোস্ট সূচিপত্রঃতাই আর দেরি না করে চলুন আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পরা যাক।
জিরা খাওয়ার উপকারিতা - ভূমিকা
মানব শরীরে জিরার উপকারিতা অনেক। গোটা জিরা চিবিয়ে খাওয়া এবং জিরা পানিও আমাদের জন্য খুবই উপকারী। পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে জিরা পানি দারুন কাজ করে।
আর্টিকেলটি যদি আপনারা মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন জিরা চাষ পদ্ধতি,জিরা খাওয়ার নিয়ম,জিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা,রাতে জিরা খেলে কি হয়,জিরা পানি কিভাবে খেলে ওজন কমে,কাঁচা জিরা খাওয়ার উপকারিতা ও জিরার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে। এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানার জন্য আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো।
জিরা চাষ পদ্ধতি
উপযুক্ত মাটিঃ প্রত্যেক বাঙালির রান্নাঘরের খুবই জনপ্রিয় একটি মসলা হলো জিরা। জিরা ছাড়া যেন বাঙ্গালীদের রান্নাই অসম্পন্ন থেকে যায়। এছাড়াও জিরা বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা ও রয়েছে। এর জন্যই জিরার কদর আরো দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের জিরা চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। জিরা চাষের জন্য উপযুক্ত আবহাওয়া হল বাংলাদেশে শীতকাল।
কারণ নাতিশীতোষ্ক এবং শুষ্ক আবহাওয়া জিরা চাষের জন্য প্রয়োজন। এজন্য বাংলাদেশের শীতকালে চিরা চাষ করা সম্ভব। সঠিক পরিচর্যার ফলে প্রতি হেক্টর প্রতি ৬০০ থেকে ৮০০ কেজি জিরার ফলন পাওয়া সম্ভব। জিরা চাষের জন্য উপযুক্ত মাটি হল সুনিষ্কাশিত উর্বর, গভীর ও বেলে দোঁআশ মাটি।
বীজের পরিমাণ ও বপনঃ জিরার রোপনের উত্তম সময় হলো অক্টোবর, নভেম্বর মাস। জমিতে ছিটিয়ে বীজ বপন করতে চাইলে প্রতি হেক্টরে ১২-১৫ কেজি বীজ লাগবে। তবে উপযুক্ত নিয়ম হল মাদা তৈরি করে বীজ বপন করা। মাদা তৈরি করে বীজ বপন করলে প্রতি হেক্টর জমিতে ৮-১০ কেজি বীজ লাগবে।
সারিতে বীজ বপন করতে দূরত্ব হবে ২৫×১৫ সেন্টিমিটার। জিরা জমিতে রোপন করার ২-৩ দিন আগে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। জিরা রোপনের আগে শোধন করার জন্য প্রতি কেজির সাথে ২ গ্রাম হারে ভিটাভেক্স মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
জমি তৈরিঃ জিরা রোপনের পূর্বে লাঙ্গল এবং মই দিয়ে ভালোভাবে জমির মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে।
সার প্রয়োগঃ জিরা রোপনের জন্য হেক্টর প্রতি ৫ টনের মত জৈব সার এবং শেষ চাষ দেওয়ার আগে ২০ কেজি ইউরিয়া, ৭০-৭৫ কেজি এমওপি, ৮০-১০০ কেজি টিএসপি সার প্রয়োগ করতে হবে। এরপর বীজ রোপনের ৩০ দিন পর একবার এবং ৬০ দিন পর আরেকবার ২০ কেজি করে ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করতে হবে। সার প্রয়োগের পরে অবশ্যই হালকা শেচ দিতে হবে।
জমি পরিচর্যাঃ বীজ রোপন করার কিছুদিন পর অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে জমিতে আগাছা জন্মালে তা পরিষ্কার করতে হবে। এবং অতিরিক্ত ঘন গাছ হলে কিছু গাছ তুলে ফেলতে হবে। এছাড়াও চারার গোড়ার মাটিগুলো আলগা করে দিতে হবে।
জমিতে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ জো না থাকে তাহলে বীজ রোপন করার পরে হালকা শেচ দিতে হবে। এছাড়াও খেয়াল রাখতে হবে ফুল আসার সময় এবং জিরা পুষ্ট হওয়ার সময় মাটি যেন অতিরিক্ত শুকনা না থাকে।
ফসল তোলার সময়ঃ জিরা তোলার উপযুক্ত সময় হল ৯০ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে। জিরা পাকার পর ছোট ছোট আটি বেঁধে চাতালে এনে রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে বীজ জিরা আলাদা করতে হবে। ভালোভাবে যদি চাষ করতে পারেন তাহলে হেক্টর প্রতি ৮০০-১০০০ কেজি ফলন পাওয়া সম্ভব হবে।
জিরা খাওয়ার নিয়ম
আমাদের রান্নার কাজে ব্যবহৃত মসলাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো জিরা। রান্নার কাজে জিরা ব্যবহার করার ফলে তরকারির গন্ধ ও স্বাদ দুটোই বৃদ্ধি পায়। ছাড়াও বিভিন্ন মুখরোচক খাবারে ভাজা জিরা গুড়ার ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়। ভাজা জিরার গুড়া ব্যবহার করার ফলে মুখরোচক খাবার গুলোর স্বাদ অনেকটা বৃদ্ধি পায়।
এছাড়াও জিরা কাঁচা অবস্থায় চিবিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। আবার জিরা ভেজানো পানি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। আমরা যদি নিয়মিত জিরা ভেজানো পানি খাই তাহলে আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, হজমে সমস্যা দূর, রক্তস্বল্পতা দূর, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি সাহায্য করবে ওজন কমাতে।
সুস্বাস্থ্যের সুস্থতা বজায় রাখতে জিরার গুনাগুন অনেক। পুষ্টি গুণের দিক দিয়ে বিবেচনা করলে জিরাতে রয়েছে আয়রন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, তামা, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম ও জিংক। সেই প্রাচীন যুগ থেকে বিভিন্ন ঘরোয়া চিকিৎসায় জিরা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী একটি পানীয় হল জিরা পানি।
এই জিরা পানি যদি আপনি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে পারেন তাহলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। যা আপনার সুস্থতার জন্য যথেষ্ট।
জিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
জিরা অনেকেই অনেক ভাবে খেয়ে থাকেন। তবে বেশিরভাগ মানুষ জিরা পানি বেশি খেয়ে থাকেন। তবে আপনারা কি জানেন জিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে ? জানলে হয়তো অবাক হবেন। আপনি যদি প্রতিদিন কিছু পরিমাণ জিরা নিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া যাবে।
এছাড়াও আপনার শরীরে যদি ভাইরাসজনিত জ্বর অথবা যে কোন সিজনাল জ্বর থেকে থাকে তাহলে আপনি যদি কিছু পরিমাণ জিলা চিবিয়ে খেতে পারেন তাহলে জ্বরের প্রকোপ থেকে খুব সহজে রেহাই পাবেন। জিরা আমাদের শরীরের জন্য এতটাই উপকারী যে হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধান করতে জিরা খুবই কার্যকরী।
জিরা পানীয় আপনাকে তৈরি করতে হলে অনেকটা পরিশ্রম করতে হবে। তবে আপনি চাইলে গোটা জিরা চিবিয়ে খেলেও সমান উপকারগুলো পাবেন। তবে অবশ্যই আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে পরিমাণ এর তুলনায় অতিরিক্ত না খাওয়া। কারণ অতিরিক্ত পরিমাণে জিরা খেলে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
রাতে জিরা খেলে কি হয়
জিরার উপকারিতার কথা হয়তো এতক্ষণে আপনারা অনেকটাই জেনে গেছেন। তবুও হয়তো এটা জানেন না রাতে জিরা খেলে কি হয় ? আপনি যদি নিয়ম করে রাতে কিছু পরিমাণ জিরা খেতে পারেন অথবা জিরা পানি খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের হজম শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি অনিদ্রার মত সমস্যা দূর করতে সহায়তা করবে।
রাতে ভালো ঘুমের জন্য জিরা খাওয়ার অভ্যাসটি গড়ে তুলতে পারেন। বিভিন্ন ধরনের মানসিক টেনশন বা দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য জিরা বেশ কার্যকর। জিরা মানুষকে মানসিক প্রশান্তি দিতে সহায়তা করে। এছাড়াও মানব শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে জিরা খুবই উপকারী। জিরাতে এত পরিমাণ ঔষধি গুণ রয়েছে যে জিরা আপনি যেভাবেই খান না কেন আপনার শরীরের উপকার করবে।
তবে অবশ্যই এর পরিমাণটি খেয়াল রাখতে হবে। পরিণত পরিমাণে সবসময় জিরা খাওয়ার চেষ্টা করবেন। আপনি যদি পরিমাণের থেকে বেশি জিরা খেয়ে ফেলেন তাহলে তা কিন্তু আপনার শরীরের জন্য ক্ষতি হতে পারে। তাই অবশ্যই সেদিকে নজর দিবেন।
জিরা পানি কিভাবে খেলে ওজন কমে
বিড়াতে প্রচুর পরিমাণ এন্টি এক্সিডেন্ট রয়েছে যা হজমে সহায়। কন্সটিপেশনের মতো সমস্যা সারাতে জিরা বেশ কার্যকরী। জিরা শরীর থেকে বাড়তি টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে এবং বাড়িয়ে দেয় বিপাকক্রিয়ার হার। যারা প্রদাহ জনিত সমস্যায় ভুগেন তাদের শরীর ঠান্ডা রাখতে জিরা পানি খুব খুবই সহায়ক।
তাই ডায়েটিং এবং নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি খালি পেটে জিরার পানি খেলে আপনার ওজন কমার হার দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাবে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। তাই চলুন জেনে নেই জিরা পানি কিভাবে খেলে ওজন কমবে।
জিরা পানি তৈরির নিয়ম
- এক গ্লাস পানির মধ্যে ২ চা চামচ গোটা জিরা ভিজিয়ে রাখতে হবে সারা রাতের জন্য। সকালে উঠে সে পানি ছেকে তার মধ্যে অল্প পরিমাণে লেবুর রস মিশিয়ে এই পানিটি পান করতে হবে খালি পেটে। ওজন কমানোর জন্য এই পানিটি কয়েক সপ্তাহ একটানা খেতে পারেন।
- এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চামচ গোটা জিরা সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানিসহ জিরা ভালোভাবে ফুটিয়ে পানি যখন একটু কমে আসবে তখন নামিয়ে ছেকে নিয়ে খালি পেটে সেই পানি চায়ের মত করে পান করবেন। এবং জিরা গুলো চিবিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাহলে দেখবেন অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে আসবে।
- এছাড়াও প্রতিদিন পাঁচ গ্রাম দইয়ের সাথে এক চামচ গুড়া জিরা মিশিয়ে খেলেও ওজন কমতে সহায়তা করবে।
কাঁচা জিরা খাওয়ার উপকারিতা
জিরা আমাদের কাছে মসলা হিসেবে সুপরিচিত। কিন্তু এই জিরা যে মানুষের শরীরের অনেক উপকারে আসে তা অনেকেরই অজানা। তাই আজ আমি জানানোর চেষ্টা করব কাঁচা জিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
ওজন কমাতে জিরা
জিরা ওজন কমানোর একটি কার্যকরী মাধ্যম। যারা অতিরিক্ত ওজন ও চর্বি নিয়ে চিন্তিত তাদের জন্য চিড়া একটি নিরাময় হিসেবে কাজ করবে। কারণ জিরা এমন একটি খাদ্য যার মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে আপনার ওজন কমিয়ে ফেলতে পারবেন। নিয়মিত জিরা গ্রহণের মাধ্যমে মাত্র ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে আপনি এর ফলাফল পেতে শুরু করবেন।
টাইমস অফ ইন্ডিয়াতে প্রকাশিত একটি পরীক্ষায় দেখা যায়, ৮০ জন স্থুল বা মোটা শরীরের মহিলাদের দুই ভাগে ভাগ করে তাদের এক ভাগ কে রেগুলার ডায়েট করতে বলা হয় এবং অন্য ভাগ্যে রেগুলার ডায়েটের সাথে জিরা পানি গ্রহণ করতে বলা হয়। কিছুদিন পর ফলাফলে দেখা যায় যে দল জিরা পানি গ্রহণ করেছে তাদের শরীরের ওজন অনেকাংশে কমেছে অন্য দলের তুলনায়।
এর কারণ হলো জিরা শরীরের মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে। এর সাথে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, যা আপনার শরীরের ওজন দ্রুত কমাতে কার্যকর। খারাপ কোলেস্টরেলকে বের করতে সাহায্য করে। তাই যারা অতিরিক্ত পরিমাণে ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা নিয়ম মেনে রেগুলার জিরা পানি পান করতে পারেন।
জিরাতে থাকা ভিটামিনের উপকারিতা
জিরাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি, ই, ম্যাগ্নেসিয়াম ও আয়রন যার উপকারিতা অনেক। এবার আমরা জানবো এই ভিটামিন গুলোর কার্যকারিতা সম্পর্কে।
- ভিটামিন বি আপনাকে দুশ্চিন্তা বা ট্রেসমুক্ত রাখতে সহায়তা করবে। এই ভিটামিন হরমোন এবং স্নায়ু স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও ভিটামিন বি শরীরের ত্বক, নখ ও চুলকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে যা চিকিৎসক কর্তৃক পরীক্ষিত। এছাড়াও ভিটামিন বি আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি ও লোহিত রক্তকণিকা বাড়াতে সহায়তা করে।
- প্রচুর পরিমাণে গুনাগুনের সমৃদ্ধ ভিটামিন হলো ভিটামিন ই। জিরায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই রয়েছে যা আপনার ত্বককে সুরক্ষিত ও উজ্জীবিত রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও ভিটামিন-ই যৌন স্বাস্থ্যের জন্য অতি উপকারী একটি ভিটামিন।
- জিরাতে থাকা আয়রন আমাদের রক্তের পর্যাপ্ত অক্সিজেন বহন করে । ১ টেবিল চামচ জিরায় কমপক্ষে ১.৪ মিঃ গ্রাম আয়রন থাকে।
- ম্যাগনেসিয়াম আমাদের স্নায়ু ও পেশীকে সুরক্ষিত রাখতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। জিরাতে রয়েছে অধিক পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান
জিরার আরেকটি উপাদান হলো জিরাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং হৃদরোগের ঝুকি কমাতে সহায়তা করবে। আমাদের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি খুবই দরকার।
এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান
জিরাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান যা শরীরের প্রদাহ দূর করতে সহায়তা করে। সেই সাথে জিরা বদহজম, পেট ফাঁপা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
জিরা আমাদের রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। যারা নিয়মিত জিরা গ্রহণ করে তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। যারা নিয়মিত জিরা গ্রহণ করে তাদের ডায়াবেটিকস হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
জিরার ক্ষতিকর দিক
জিরা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় আপনি যদি বেশি পরিমাণে জিরা খেয়ে ফেলেন তাহলে তা আপনার শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই জিরা খাওয়ার সময় অবশ্যই সতর্কতা মেনে খাওয়া উচিত। সকল উপাদানেরই উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। তেমন জিরারো কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে।
তাই অবশ্যই জিরা খাওয়ার পূর্বে এই ক্ষতিকর দিকগুলো মাথায় রাখবেন। চলুন তাহলে এবার জেনে নেই অতিরিক্ত পরিমাণে জিরা খেলে কি কি ক্ষতি হতে পারে।
- বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত পরিমাণে জিরা খাওয়ার ফলে তা রক্তকে তরল করে দিতে পারে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে জিরা খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ হতে পারে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে জিরা খাওয়ার ফলে পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে।
- অতিরিক্ত জিরা খাওয়ার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে কমিয়ে দিতে পারে। এ কারণে হঠাৎ রক্তচাপ কমে যেতে পারে।
- গর্ভবতী মহিলারা গর্ভাবস্থায় কোনমতেই জিরা খাবেন না রান্না ব্যতীত। কারণ জিরার গর্ভপাত করার মত ক্ষমতা রয়েছে। এমনকি যে মহিলারা সন্তান লাভের প্রচেষ্টায় রয়েছেন তারাও জিরা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। তবে রান্নাতে ব্যবহারের কোন নিষেধ নেই।
- জিরা তেল অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করলে তা অতিরিক্ত প্রদাহের সৃষ্টি করতে পারে।
- এটা সত্যি যে জিরার গ্যাস দূর করার ক্ষমতা রয়েছে। যদিও বেশি পরিমাণে বা একটানা কিছুদিন জিরা খেলে হার্ড বার্ন বা বুক জ্বালা অম্বল প্রভৃতি সৃষ্টি হতে পারে।
- আপনি যদি নিয়মিত জিরা খেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই উপরে উল্লেখিত ক্ষতিকর দিক গুলোর কথা মাথায় রাখবেন। এবং পরিমিত পরিমাণে জিরা খাওয়ার চেষ্টা করবেন। আশা করছি জিরা খাওয়ার ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে আপনি জানতে পেরেছেন।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আপনি হয়তো আর্টিকেলটি পড়ে জিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন। এছাড়াও জিরার বেশ কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য আমি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সে বিষয়গুলো জানতে পেরে হয়তো আপনি উপকৃত হয়েছেন।
আর্টিকেলটি পরে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার মন্তব্য কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। ভালো লাগলে ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখবেন এবং কোন কিছু জানতে বা বুঝতে না পারলে অবশ্যই আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন।
এছাড়াও আপনার যদি আর্টিকেলটি একান্তই ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করবেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।
আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url