লাউ চাষ পদ্ধতি - লাউ গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি

টাইগার মুরগি সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুনআপনি হয়তো লাউ চাষ পদ্ধতি-লাউ গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব কিভাবে লাউ চাষ করলে আপনারা সফলতা অর্জন করতে পারবেন। তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই লাউ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে।
লাউ চাষ পদ্ধতি-লাউ গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি
আর্টিকেলটিতে লাউ চাষের পদ্ধতি ও লাউ চাষের উপযুক্ত সময় ছাড়াও বেশ কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আপনাদের সুবিধার্থে লাউ গাছের রোগ ও প্রতিকার সম্পর্কেও কিছু ধারনা দেওয়া হয়েছে।

পোস্ট সূচিপত্রঃআশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা উপকৃত হবেন। তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই লাউ চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

লাউ চাষ পদ্ধতি-ভূমিকা

বর্তমান সময়ে আধুনিক চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করে লাউ চাষ করে ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষকেরা অনেক লাভবান হচ্ছে। লাউ যেহেতু সারা বছরই চাষ করা যায় তাই লাউ চাষে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তবে শীতকাল লাউ চাষের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। শীত ছাড়াও উচ্চতা ও অতিবৃষ্টি সহিষ্ণু হওয়ার ফলে লাউয়ের চাষাবাদ গ্রীষ্মকালেও হয়ে থাকে। 

লাউ যেহেতু খুবই সুস্বাদু একটি সবজি তাই আপনি চাইলে লাউ চাষ করে খুব সহজেই সফলতার মুখ দেখতে পাবেন। অবশ্যই আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে আপনার এলাকায় কোন ধরনের লাউ এর চাহিদা বেশি। আপনি যদি আপনার এলাকার চাহিদার উপর কি করে লাউ চাষ করতে পারেন তাহলে আপনি অবশ্যই সফলতা অর্জন করতে পারবেন।  


লাউ ছিল আমাদের নবীজির প্রিয় খাবারের একটি। লাউয়ের অনেক উপকারিতা রয়েছে।জনপ্রিয় সবজি গুলোর মধ্যে লাউ অন্যতম। লাউ শীতকালীন সবজি হলেও এখন লাউ সারা বছরই চাষ করা যায়। লাউয়ের পাতা এবং ডগা শাক হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং লাউ সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হয় যা তরকারি এবং ভাজি করে খাওয়া যায়। 

লাউ এর থেকে লাউয়ের শাক বেশি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। তাই বর্তমান সময়ে বারোমাসি লাউয়ের জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যান্য লাউ চাষের মত বারোমাসি লাউয়ের জন্য মাটি প্রস্তুত করতে হয় এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ সার ব্যবহার করে লাউয়ের চারা রোপন করতে হয়। সঠিক সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে লাউ গাছের পরিচর্যা করতে হয়।

লাউ চাষ পদ্ধতি

লাউ চারা রোপন করার পূর্বে অবশ্যই পলিথিন ব্যাগে চারা তৈরি করে নিতে হবে। কারণ পলিথিন ব্যাগে চারা তৈরি করে নিলে রোপনের পর যারা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। পলিথিন ব্যাগের আকার হবে ৫/৪ ইঞ্চি সেখানে সমান পরিমাণে বালি, মাটি ও পচা গোবরের মিশ্রণ ভর্তি করতে হবে এবং পলিথিন ব্যাগের নিচে দুই থেকে তিনটি ছিদ্র করে দিতে হবে। 

এরপর সহজে আলো বাতাস চলাচল করে এমন উর্বর বীজতলা তৈরি করতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে সেখানে যেন পর্যাপ্ত পরিমাণ সূর্যের আলো থাকে। প্রতিটি মাদার ৩ থেকে ৪ টি বীজ ১ থেকে ২ ইঞ্চি গভীরে পুতে ঢেকে দিতে হবে। এভাবে কিছুদিন পরিচর্যা করার পর বীজ থেকে অঙ্কুরিত হয়ে গাছ বেরিয়ে আসবে।

লাউ চাষের উপযুক্ত সময়

লাউ এমন একটি সবজি যা কম বেশি সারা বছরই চাষ করা যায়। তবে গ্রীষ্মকালে এবং শীতকালে এই দুই সময় লাউ চাষ করলে খুব ভালো ফলন পাওয়া যায়। গ্রীষ্মকালে সাধারণত ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত লাউ চাষ করা হয়। এছাড়া শীতকালে আগস্ট মাস থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে লাউ চাষ করলে খুব ভালো ফলন পাওয়া যায়। 

তবে অবশ্যই লাউ চাষের ক্ষেত্রে জমি নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমন জমিতে আপনাকে লাউ চাষ করতে হবে যেখানে সেচ ও পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও লাউ চাষের জমিতে যেন পর্যাপ্ত পরিমাণ সূর্যের আলো থাকে এমন জমি অবশ্যই নির্বাচন করতে হবে।

লাউ চাষের জন্য মাটি তৈরি

লাউ চাষের জন্য জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দোআঁশ, বেলে দোআঁশ বা এটেল মাটির উচু জমিলাউ চাষের জন্য সবচেয়ে ভালো।লাউ চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী সময় হলো শীতকাল। এছাড়াও গ্রীষ্মকালেও লাউ চাষ করা যায়। এটেল মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা বেশি হওয়ায় গ্রীষ্ম বা খোঁড়ার মৌসুমে এঁটেল মাটিতে লাউ চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

লাউ চাষের জমি তৈরিঃ 
  • অবশ্যই খেয়াল রাখবেন লাউ চাষের জন্য জমি হতে হবে উঁচু জায়গায় এবং সেচ ও পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত পরিমাণ সুবিধা থাকতে হবে ।এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণ সূর্যের আলো পায় এমন জায়গা।
  • যেহেতু লাউ গাছের শিকড়ের বৃদ্ধি বেশি তাই তাই চেষ্টা করবেন তিন থেকে চারবার চাষ ও মই দিয়ে মাটির ঝুরঝুরে করে নিতে। মাটি ঝুরঝুরে হলে লাউ গাছের শিকড় অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারে।

  • লাউ গাছের মাটি তৈরি করার সময় অবশ্যই জৈব সার বা গোবর সার পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে। এতে লাউয়ের ভালো ফলন আশা করা যায়।
  • লাউ চাষের জন্য বেডের উচ্চতা হবে ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার
  • আপনার জমির দৈর্ঘ্য অনুসারে লম্বা নিবেন এবং বেডের প্রস্থ নিবেন ২.৫ মিটার
  • আপনার জমি অনুযায়ী এভাবে পরপর বেড তৈরি করে নিতে হবে।
  • অবশ্যই দুটি বেডের মাঝামাঝি সেচ নালা তৈরি করে দিতে হবে।
  • দুই বেডের অন্তর ৩০ সেন্টিমিটার প্রশস্ত নিকাশ নালা থাকতে হবে।
লাউ চাষের মাদা তৈরিঃ
  • লাউ চাষের জন্য মাদা তৈরি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনি যদি সঠিক মাপে মাদা তৈরি করতে পারেন তাহলে অবশ্যই লাউ চাষে সফলতা সম্ভব। চলুন জেনে নেই লাউ চাষে মাদা তৈরি এবং মাদার দূরত্ব সম্পর্কে।
  • মাদার আকার হবে ব্যাস ৫০ থেকে ৫৫ সেন্টিমিটার এবং গভীরতা ৫০ থেকে ৫৫ সেন্টিমিটার এবং তলদেশ হবে ৪৫ থেকে ৫০ সেন্টিমিটার।
  • আপনার বেডের যেদিকে ৬০ সেন্টিমিটার প্রশস্ত সেচ ও নিকাশ নালা থাকবে সেখানে বেডের কিনারা হতে ৬০ সেন্টিমিটার বাদ দিয়ে মাদার কেন্দ্র ধরে ২ মিটার অন্তর এক সারিতে মাদা তৈরি করতে হবে।
  • এরপর একটি বেডের যে কিনারা হতে ৬০ সেন্টিমিটার বাদ দেয়া হবে, তার পার্শ্ববর্তী বেডের ঠিক একই কিনারা থেকে ৬০ সেন্টিমিটার বাদ দিয়ে মাদার কেন্দ্র ধরে একই নিয়মে মাদা তৈরি করতে হবে।

লাউ গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি

সারের পরিমাপ ও প্রয়োগঃ লাউ গাছে সার প্রয়োগ করতে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আপনার জমির পরিমাপের ওপর নির্ভর করছে কতটুকু স্যার প্রয়োগ করবেন। চলুন জেনে নেই প্রতি শতক এর জন্য কি পরিমান সার লাউয়ের জমিতে প্রয়োগ করবেন।
  • গোবর বা কম্পোস্ট সার প্রতি শতকের জন্য ৪০ কেজি করে প্রয়োগ করতে হবে।
  • ইউরিয়া প্রতি শতকের জন্য ২ কেজি করে প্রয়োগ করতে হবে।
  • টি এস পি প্রতি শতকের জন্য ১.৬ কেজি করে প্রয়োগ করতে হবে।
  • এমপি প্রতি শতকের এর জন্য ১.২ কেজি করে প্রয়োগ করতে হবে।
  • বোরন প্রতি শতকের জন্য ১০ গ্রাম করে প্রয়োগ করতে হবে।
জমিতে বীজ রোপন করার 10 থেকে 15 দিন পূর্বে বিট তৈরি করার সময় সমুদয় গোবর অথবা কম্পোস্ট,টি এস পি, বোরন, অর্ধেক পটাশ এবং পাঁচ ভাগের একভাগ ইউরিয়া সার মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। অবশিষ্ট যে সার গুলো রয়ে যাবে সেই ইউরিয়া ও পটাশার সমান ৪ কিস্তিতে পুরো লাউ গাছের জীবনকালে উপরিভাগে প্রয়োগ করতে হবে।

সেচ ব্যবস্থাপনাঃ লাউ চাষের ক্ষেত্রে সেচ ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।লাউ গাছে পানির অভাব দেখা দিলে ফল ধারন ব্যাহত হবে এবং যে ফল গুলো ধরেছিল আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যাবে।লাউ গাছের জন্য যে সেচ নালা তৈরি করা হয়েছে সেই নালাতে পানি দিয়ে আটকে রাখতে হবে।

এর ফলে গাছ প্রয়োজন মতো পানি টেনে নিবে।সমস্ত লাউ জমিতে প্লাবন সেচ দেওয়ার কোন প্রয়োজন নাই।তবে শুষ্ক মৌসুমে ৫-৭ দিন অন্তর সেচ দেওয়ার প্রয়োজন পরে।

আগাছা দমনঃ লাউ গাছে অতিরিক্ত আগাছা জম্মালে অবশ্যই সে বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে।সার ও সেচ দেওয়ার পর যখন জমিতে জো আসবে তখনই সমস্ত আগাছা পরিস্কার করতে হবে।লাউ গাছের চারা গজানোর ২০-২৫ দিনের মধ্যে আগাছা দমন করতে হবে।গাছ অতিরিক্ত ঘন থাকলে অবশ্যই উঠিয়ে পাতলা করে দিতে হবে।

লাউ গাছের রোগ ও প্রতিকার

লাউ গাছে বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা যায়। যা আমাদের লাউ গাছে বৃদ্ধিতে এবং ফলন আসতে সমস্যা সৃষ্টি করে। তেমনি কিছু লাউ গাছের রোগ সম্পর্কে চলুন জেনে নেই।
  • লাউয়ের গ্রে মোল্ড রোগ
  • লাউয়ের স্ক্যাব রোগ
  • লাউয়ের লিফ কার্ল রোগ

  • লাউয়ের পাতা পোড়া রোগ
  • লাউয়ের পাউডারী মিলিডিউ রোগ
  • লাউয়ের ভাইরাস জনিত রোগ
লাউ চাষ করার ক্ষেত্রে এই ধরনের রোগ গুলো প্রতিনিয়ত আমাদের লাউ জমিতে দেখা যায়। তবে এসব রোগের প্রতিষেধক রয়েছে। নিচে কিছু রোগের নাম ও প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

রোগের নামঃ পাউডারি মিলডিউ রোগ

প্রতিকারঃ রোগ দমনে সালফার জাতীয় ছত্রাক নাশক যেমন কুমুলাস ৪০ গ্রাম অথবা কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমন গোল্ডাজিম ৫ মিলিটার বা কমপ্যানিয়ন ২০ গ্রাম করে প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর আক্রমণের শুরু থেকে মোট ২ থেকে ৩ বার প্রয়োগ করতে হবে। ঔষধ স্প্রে করার সময় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

রোগের নামঃ ফল পচা রোগ বা এনথ্রাকনোজ

প্রতিকারঃ ফল পচা রোগ দমনের জন্য কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাক নাশক যেমন এমকোজিম ২০ গ্রাম করে প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি পাঁচ শতকে ১২ থেকে ১৫ দিন পর পর দুই থেকে তিনবার ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে। স্প্রে করার সময় অবশ্যই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

রোগের নামঃ জাবপোকার আক্রমণ

প্রতিকারঃপাতায় হলদে মোজাইক রোগের বাহক পোকা হলো জাবপোকা। জাব পোকা দমনের জন্য প্রয়োজনীয় কীটনাশক হল ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক। যেমন এডমায়ার দশ সাত থেকে দশ মিলিলিটার অথবা দুই মুখ ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি পাঁচ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পর পর দুই থেকে তিনবার। ওষুধ স্প্রে করার সময় অবশ্যই বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।

লাউ গাছের ফলন বৃদ্ধি

বর্তমানে অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে এবং নিজেদের পারিবারিক চাহিদা মেটানোর জন্য লাউ চাষ করে থাকে। তবে লাউ চাষে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফলন না পাওয়ায় অনেকে হতাশ হয়ে যান। তবে কিছু নিয়ম মেনে যদি লাউ চাষ করেন সেক্ষেত্রে ভালো ফলন আশা করা যায়। 

কোন ধরনের রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে ঘরে থাকা কিছু উপাদান দিয়েই আপনারা লাউ গাছের ফলন বৃদ্ধি করতে পারবেন। চলুন জেনে নেই কোন পদ্ধতি অবলম্বন করলে আপনার লাউ গাছে প্রচুর পরিমাণে ফলন বৃদ্ধি করতে পারবেন।

ডিমের খোসাঃ আমাদের লাউ গাছে যে ফুল ফল ঝরে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে এবং লাউ গাছ বৃদ্ধির জন্য ডিমের খোসা খুবই উপকারী। কারণ ডিমের খোসা তো রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। যা আমাদের লাউ গাছের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে প্রচুর পরিমাণে স্ত্রী ফুল আসতে সাহায্য করে।

পেঁয়াজের খোসাঃ পেঁয়াজের খোসা আমাদের লাউ গাছের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান। পেঁয়াজের খোসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম , ফসফরাস, জিংক , কপার, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন ইত্যাদি ।বিভিন্ন উপাদান থাকার ফলে পেঁয়াজের খোসা আমাদের গাছগুলোকে সবুজ ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে।

চা পাতাঃ আমরা ব্যবহার করার পর যেসব চা পাতাগুলো ফেলে দেই সেই চা পাতাগুলো না ফেলে দিয়ে যদি সঠিকভাবে লাউ গাছে প্রয়োগ করতে পারি তাহলে আমাদের লাউ গাছগুলো সবুজ ও সতেস রাখতে সাহায্য করবে। কারণ আমাদের লাউ গাছে যে নাইট্রোজেন সারের প্রয়োজন হয় সেটা আমরা প্রাকৃতিক ভাবে খুব সহজেই চা পাতার মধ্যে পেয়ে থাকি। 

তবে এই চা পাতাটা ব্যবহার করার আগে অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। নয়তো এর মধ্যে থাকা দুধ অথবা চিনির জন্য আমাদের গাছে পোকামাকড়ের আক্রমণ বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই অবশ্যই ধুয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।

এই উপাদান গুলো প্রয়োগ করার পূর্বে অবশ্যই লাউ গাছের গোড়া ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে কোন আগাছা যেন সেখানে না থাকে। পরিষ্কার করা হয়ে গেলে লাউ গাছের গোড়ার মাটিগুলো আলগা করে নিতে হবে। তা না হলে সারগুলো প্রয়োগ করার পরে গাছের গোড়ায় আলগা করে না নিলে ভালোভাবে কাজ করবে না। 

এরপর চেষ্টা করবেন ডিমের খোসা গুলো ভালোভাবে গুঁড়ো করে গাছের গোড়াতে প্রয়োগ করার। এবং পেঁয়াজের খোসা গুলোকে পানিতে ভিজিয়ে ২৪ ঘন্টা পর সেই পানি নরমাল পানির সাথে মিশিয়ে গাছে প্রয়োগ করতে হবে। কাজটি অবশ্যই বিকেল বেলায় করতে হবে তাহলে কিছুদিনের মধ্যে লক্ষ্য করবেন গাছে প্রচুর পরিমাণে স্ত্রী ফুল আসছে এবং আপনার লাউ গাছে ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি থেকে লাউ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পেরেছেন। কিভাবে লাউ চাষ করবেন এবং লাউ চাষের ফলন বৃদ্ধি করবেন বিষয়গুলো জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর্টিকেলটি পরে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার মন্তব্য কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।

ভালো লাগলে ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখবেন এবং কোন কিছু জানতে বা বুঝতে না পারলে অবশ্যই আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url