ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম - শসা খাওয়ার উপকারিতা

সজনে পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুনশসা আমাদের শরীরের জন্য অনেক প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। আমরা বিভিন্ন খাবারের সাথে প্রতিনিয়তই শশা খেয়ে থাকি। কিন্তু শসা খাওয়ারও কিছু বিধি নিষেধ রয়েছে। চলুন জেনে নেই ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম - শসা খাওয়ার উপকারিতা কি সেই সম্পর্কে। শসা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো।
ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম - শসা খাওয়ার উপকারিতা
আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন শসা আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী। আমরা প্রতিনিয়ত শসা তো খাই, কিন্তু শসা খাওয়ার সঠিক নিয়ম টা কি আমরা জানি? হয়তো কিছু মানুষ জানি, হয়তো বা জানি না। তাই আমরা আপনাদের সুবিধার্থে চেষ্টা করেছি শসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরার। 

পোস্ট সূচীপত্রঃতাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য।

ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম - ভূমিকা

আর্টিকেলটিতে আমরা আলোচনা করেছি শসা খাওয়ার বেশ কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পর্কে। যেমন ধরেন শসা খাওয়ার সঠিক সময় ও শসা খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে। কিন্তু সঠিক সময় এবং নিয়ম সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। তাই আপনাদের সুবিধার্থে চেষ্টা করেছি কখন শসা খেলে আপনারা উপকৃত হবেন সেই সম্পর্কে তুলে ধরতে। 

এছাড়াও খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা এবং ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। আমরা অনেকেই জানতে চাই খালি পেটে শসা আমাদের জন্য কতটা উপকারী এছাড়াও ওজন কমাতে শসা আমাদের জন্য কতটা কার্যকরী সেই সম্পর্কে। আমি আপনাদের সুবিধার জন্য এসব বিষয় সম্পর্কে বিশেষভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। 


এছাড়াও আপনারা অনেকে জানতে চান শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। যদিও আপনারা জানেন শসা আমাদের জন্য সবচেয়ে উপকারী একটি উপাদানের মধ্যে অন্যতম। যা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগ ব্যাধি থেকে মুক্ত রাখতে সহায়তা করে এবং শসা আমাদের রূপচর্চায়ও বেশ কার্যকর। 

তবে এতগুলো উপকারিতা পাশাপাশি শসার কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। যা আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে অবশ্যই আপনাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

শসা খাওয়ার সঠিক সময়

এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন যারা শসা খেতে পছন্দ করে না। শসা খুবই জনপ্রিয় খাবারের একটি। আমরা সকলেই প্রায় প্রতিনিয়তই শসা খাই ।তবে শসা খাওয়ার সঠিক সময় আমরা জানি না। কোন সময়ে শসা খেলে আমাদের শরীরের জন্য সেটা উপকারী সে বিষয়ে আমরা জানিনা বললেই চলে। তাই আজ আমি জানানোর চেষ্টা করব শসা খাওয়ার সঠিক সময় কোনটি। 

শসা খান তবে সময় বুঝে, এমন সময় শসা খাবেন না যে সময় খেলে আপনার শরীর নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হবে। শসা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী যা সকলেই জানেন। শসা কে ভিটামিন, মিনারেল ও ইলেকট্রোলাইটের পাওয়ার হাউস বলা হয়। 

কিন্তু শসা খাওয়ার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন কোন সময় খাচ্ছেন। শসা খাওয়ার সঠিক সময় কোনটি? সকালে যদি শসা খাওয়া হয়, তাহলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। সকালে যদি না খেয়ে থাকেন তাহলে দুপুরের মধ্যে অবশ্যই খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তবে আপনি যদি রাতে শসা খান তাহলে পেট ভার হতে পারে। এছাড়াও রাতে শসা খেলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। 

আপনাদের যাদের হজম সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে তাদের রাতে শসা খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। তাই নিয়ম করে সঠিক সময়ে রোজ খান শসা আপনার সুস্বাস্থ্যের জন্য।

শসা খাওয়ার নিয়ম

শসা এমন একটা জিনিস যেটা খাওয়ার কোন বাধা ধরা নিয়ম আমরা জানি না। আমাদের যখন মন চায় আমরা তখনই শশা খেয়ে থাকি। বা অনেকে ওজন কমানোর জন্য প্রতিনিয়ত শশা খেয়ে থাকেন। তবে আমরা যদি শসা খাওয়ার সঠিক নিয়ম না জানি এই উপকারী সবজিটি হতে পারে আমাদের শরীরে ক্ষতির কারণ। 

তাই চলুন শসা খাওয়ার আগে শসা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমরা জেনে নেই। আমরা অনেকেই আছি যারা দ্রুত রোগা হতে ভরসা রাখি শসার উপরে। তবে রোগা হওয়ার পূর্বে শসা খেয়ে নেই তাহলে তো আর হলো না। তাই শসা খেতে হবে নিয়ম মেনে। খালি পেটে শসা খেলে হতে পারে নানা ধরনের পেটের সমস্যা যেমন গ্যাস, বদহজম এছাড়াও বমি বমি ভাব। 

তাই অবশ্যই চেষ্টা করবেন ভারী খাবারের পর শসা খাওয়ার। সকালে বা বিকেলের খাওয়ার পরে খেতে পারেন দই দিয়ে শসা অথবা শসা ও পুদিনা পাতার স্মুদি। এছাড়াও সালাত তৈরি করেও শসা খেতে পারেন। তবে অনেকের ধারণা রয়েছে বেশি তেল মশলা জাতীয় খাবার ও ভাজিপুরি জাতীয় খাবার খাওয়ার সাথে শসা খেলে হয়তো শরীরের কোন ক্ষতি করে না। 

তবে এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কেননা বেশি তেল মসলা জাতীয় খাবার কে শসা হজম করতে সহায়তা করে থাকে। এর থেকে বেশি কোন উপকারে আসে না। অবশ্যই চেষ্টা করবেন নিয়ম মেনে সঠিক উপায়ে শসা খাওয়ার। যা আপনার শরীরের জন্য উপকারে লাগবে।

খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা

শসা এমন একটি খাবার যা আমাদের শরীরের জন্য বেশ কার্যকর। শসাতে থাকা বিভিন্ন ধরনের উপাদান যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এবার আমরা জানব খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
  • শসাতে রয়েছে পরিমাণ মতো ফাইবার এবং প্রায় ৯০% পানি। এছাড়াও পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকার কারণে শসা উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণ রাখতে অনেকটাই সাহায্য করে থাকে।
  • খালি পেটে শসা খেলে অনেক ধরনের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

  • শসা ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় আমাদের শরীরের বদহজম, গ্যাস, এসিডিটি ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা থেকে মুক্ত রাখতে পারে। এছাড়াও হজম জনিত সমস্যা সমস্যা থেকেও মুক্ত রাখতে বেশ কার্যকর।
  • ওজন কমানোর পাশাপাশি রক্তের কোলেস্টরেল কমাতে অনেক বেশি উপকারী হল শসা। তাই প্রতিনিয়ত শসা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।
  • এছাড়াও আপনি যদি প্রতিদিন খালি পেটে শসার রস অথবা শসার সালাদ খেতে পারেন তাহলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।
  • শসাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ থাকার চোখের নানা ধরনের সমস্যা থেকে আপনাকে মুক্ত রাখতে পারে।
  • আপনি যদি প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী শসা খেতে পারেন। কারণ শসাতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি যা আপনার প্রতিদিনের পানির চাহিদা মেটাতে বেশ কার্যকর। তাই আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে শসা খেতে পারেন আপনার শরীরের পানির ঘারতি হবে না।
  • আপনার ত্বককে সুস্থ ও সতেস রাখতে শসা বেশ কার্যকর। কারণ শসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি এবং ক্যালরির পরিমাণ একেবারেই কম।
  • এছাড়াও খালি পেটে শসা খেলে কিডনি, ইউরিনারি, ব্লাডার, লিভার ও প্যানক্রিয়াসের সমস্যার শসা অনেকটাই সাহায্য করতে পারে। তাই এই ধরনের সমস্যায় আপনি নিয়মিত শসা খেতে পারেন। তবে অবশ্যই এই ধরনের রোগের জন্য শসা খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া ভালো।

ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম

চিকিৎসকদের মতে সুস্থ থাকতে হলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। অতিরিক্ত ওজন বেড়ে গেলে শরীরের নানা ধরনের সমস্যা দেখা। তাই ওজন বেড়ে গেলে সে ক্ষেত্রে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে নানা ধরনের শরীরচর্চা করতে হয়। বিভিন্ন ধরনের শরীরচর্চার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তবে পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে রাখতে হবে এমন খাবার যা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করতে পারে সে ক্ষেত্রে আমরা শসার কথা সকলেই জানি। যা আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করতে পারে।আমরা প্রায় সকলেই জানি শসা অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে বেশ কার্যকর। 

শসা তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়ামে ভরপুর এই ফলটি আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। শসাতে পানির পরিমাণ বেশি থাকার পাশাপাশি ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম যা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে বেশ কার্যকর। এছাড়াও শসাতে রয়েছে পরিমিত পরিমাণে ফাইবার।

পুষ্টিবিদদের মতে শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন ছোট বড় রোগ থেকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করে শসা। শসা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। আপনারা যারা ডায়াবেটিসের মত সমস্যায় ভুগছেন তারাও অনায়াসে শসা খেতে পারেন। শুধু শসা খেলেই হল না শসা খাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে সেই নিয়ম মেনে শশা খেতে হবে। 

যেমন খালি পেটে শসা না খেয়ে ভারী খাবারের পরে আপনি বিভিন্ন উপায়ে শসা খেতে পারেন। আপনি টকদের সাথেও শসা খেতে পারেন অথবা শসা ও পুদিনা পাতার স্মুদি তৈরি করেও খেতে পারেন। এছাড়াও সালাদ হিসেবে শসা রাখতে পারেন আপনার পাতে। যা আপনার শরীরকে ফিট রাখতে এবং ওজন কমাতে সহায়তা করবে।

তবে আপনি যদি দ্রুত ওজন কমাতে চান তাহলে আপনি শসা ও ধনিয়া পাতার স্মুদি তৈরি করে প্রতিদিন খেতে পারেন। অনেকেই এই স্মুদি তৈরি করতে জানেন না। চলুন জেনে নেই কিভাবে তৈরি করবেন শসা ও পুদিনা পাতার স্মুদি। একটি শসা ভালো করে ধুয়ে কুচি করে কেটে নিতে হবে। 

এরপর কিছু পুদিনা পাতা নিয়ে ভালো করে ধুয়ে শসা কুচি এবং পুদিনা পাতা একসাথে ব্লেন্ডার দিয়ে পরিমাণ মতো পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। ব্লেন্ড করা হয়ে গেলে একটি গ্লাসে ঢেলে পানীয়টির সাথে সামান্য পরিমাণ বিট লবণ অথবা লেবুর রস মিশিয়ে স্মুদিটি খেতে পারেন। যা আপনার ওজন কমাতে বেশ কার্যকর হবে।

শসা খাওয়ার উপকারিতা

শশা এমন একটি সবজি যা আমাদের শরীরের নানা ধরনের সমস্যার সমাধান করে দিতে পারে। সারা বিশ্বে আবাদ হওয়ার দিক থেকে ৪ নম্বরে রয়েছে শসা। শসার উপকারিতা কথা কমবেশি সকলেরই জানা। তবুও আজ আমি আপনাদের সাথে শসা খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। চলুন আর দেরি না করে জেনে নেই শসা খাওয়ার উপকারিতা কি কি।

ওজন নিয়ন্ত্রণ ও হজম বাড়াতে সহায়কঃ শসাতে রয়েছে কম ক্যালরি ও অধিক পরিমাণে পানি। তাই ওজন কমানোর জন্য শসা হতে পারে আদর্শ টনিক। আপনারা যারা ওজন কমাতে চান তাদের খাদ্য তালিকায় নিয়মিত পরিমাণমতো শসা রাখবেন।


আপনি যদি খোসা সহ কাঁচা শসা চিবিয়ে খান তাহলে এটি আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে। এছাড়াও নিয়মিত শসা খাওয়ার ফলে দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর করতে সহায়তা করবে।


পানি শূন্যতা দূর করতে শসার ভূমিকাঃ শসা তে প্রচুর পরিমাণ পানি থাকায় তৃষ্ণার্ত অবস্থায় পানির পরিবর্তে যদি আপনি একটি বড়সড় শশা চিবিয়ে খেতে পারেন তাহলে পানির চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে। কারণ সহ সাথে রয়েছে ৯০% পানি।

শরীরের বিষাক্ততা দূর করেঃ আমাদের শরীরে থাকা বর্জ্য ও বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করতে শসা বেশ কার্যকর। কারণ শসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি যা আমাদের শরীরে থাকা বিষাক্ত পদার্থগুলো বের করে দিতে ঝাটার মতো কাজ করে। এছাড়াও নিয়মিত শসা খাওয়ার ফলে কিডনিতে সৃষ্ট পাথর গলতে সহায়তা করে।

দেহের তাপ শোষণ করতে সহায়তা করেঃ অনেক সময় দেখা যায় অতিরিক্ত গরমের ফলে আমাদের শরীরের ভেতরে এবং বাহিরে জ্বালাপোড়া করে। এমন সময় যদি আপনি একটি শসা চিবিয়ে খেয়ে নিতে পারেন তাহলে দেখবেন অনেকটাই উপশম পেয়েছেন। 

এছাড়াও অতিরিক্ত রোদের কারণে আমাদের ত্বক জ্বালাপোড়া করে এ সময় যদি আপনি শশা কেটে তাকে ঘষে নিতে পারেন তাহলে অনেকটা আরাম পাবেন।

ত্বকের সমস্যা দূর করেঃ শসাতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম, সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম যা আমাদের ত্বকের পরিচর্যায় বেশ কার্যকর। এজন্য বিভিন্ন সময় শসা আমাদের ত্বকে ব্যবহার করা হয়।

ভিটামিনের শূন্যতা পূরণ করতেঃ আমাদের প্রত্যেক জীবনে যে সকল ভিটামিনের প্রয়োজন রয়েছে তার বেশিরভাগ ভিটামিন ই শসাতে রয়েছে। বিশেষ করে ভিটামিন এ , বি ও সি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ও শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। 

তাই আপনি যদি গাজর ও সবুজ শাকের সাথে সাথে রস করে খেতে পারেন তাহলে এই তিন ধরনের ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করতে সহায়তা করবে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করতেঃ শসাতে থাকা বেশ কিছু আয়ুর্বেদিক উপাদান আমাদের জরায়ু, স্তন ও মূত্র গ্রন্থিসহ বিভিন্ন স্থানের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমাতে পারে। তাই সুস্থ থাকতে নিয়মিত শসা খাওয়ার অভ্যাস খুবই কার্যকর।

চোখের জ্যোতি বাড়াতেঃ সৌন্দর্য চর্চার অংশ হিসেবে শশা কে গোল করে কেটে চোখের উপর বসিয়ে রাখা হয় যাতে করে চোখের ময়লা অপসারণ করতে সহায়তা করে। এছাড়াও এভাবে শসা রাখার ফলে চোখের জ্যোতি বাড়াতেও সাহায্য করে এবং চোখের প্রদাহ প্রতিরোধ উপাদান প্রচুর পরিমাণে থাকায় ছানি পড়ার মতো সমস্যা অনায়াসে সমাধান করতে পারে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ নিয়মিত শসা খেলে ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন এবং কোলেস্টরেল কমানোর পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।

মুখ পরিষ্কার রাখতেঃ আপনাদের যাদের মাড়ি সংক্রমণের কারণে দুর্গন্ধযুক্ত, তারা যদি নিয়মিত শসা গোল করে কেটে একটি স্লাইস শসা জিহ্বার উপরে রেখে সেটি টাকরার সঙ্গে চাপ দিয়ে আধা মিনিট রাখতে পারেন তাহলে শসার সাইটোকেমিক্যাল এর মধ্যে বিশেষ বিক্রিয়া ঘটিয়ে আপনার মুখে জীবানু ধ্বংস করবে। যার ফলে সজীব হয়ে উঠবে আপনার নিঃশ্বাস।

চুল ও নক সতেজ রাখতেঃ শসা তে থাকা সিলিকা ও সালফার চুলের বৃদ্ধিতে বেশ কার্যকর। এছাড়াও শসাতে থাকা খনিজ সিলিকা আমাদের চুল ও নখকে সতেজ ও শক্তিশালী করে তুলতে সহায়তা করে।

মাথা ধরা থেকে নিষ্কৃতিঃ শসা তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ও সুগার। যার কারনে আপনি যদি ঘুমাতে যাওয়ার আগে কয়েক স্লাইস শসা খেতে পারেন তাহলে ঘুম থেকে ওঠার পরে মাথা ঘুরানো এবং শরীর ম্যাজম্যজ করার মত সমস্যা আর থাকবে না।

গেটে বাত থেকে মুক্তিঃ গেটে বাত ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে গাজরের রসের সঙ্গে শসার রস মিশিয়ে খেলে দেহের ইউরিক এসিডের মাত্রা নেমে আসে যার ফলে গেঁটে বাত ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কারণ শসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সিলিকা।

শসা খাওয়ার অপকারিতা

শসাতে ক্যালরির পরিমাণ একেবারেই কম তাই শশাকে লো ক্যালোরিযুক্ত খাবার বলা হয়। এছাড়াও শসার মধ্যে পানির পরিমাণ থাকে অনেক। ১০০ গ্রাম শসা তে পানির পরিমাণ থাকে ৯৪.৯ গ্রাম এবং ক্যালরি থাকে ২২ কিলো ক্যালরি। এছাড়াও শসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়াও শসাতে রয়েছে কিছু পরিমাণ ভিটামিন, মিনারেল এবং আশঁ। 

এই উপকারী একটি খাবার অনেক সময় দেখা যায় মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কারণ অনেক মানুষ মনে করে শুধুমাত্র শসা খেয়েই ওজন কমানো যায়। শুধুমাত্র শসা কে একমাত্র ওজন কমানোর ওষুধ মনে করে থাকে। ডায়েটেশিয়ানরা ডায়েট চার্টে শসা রাখে কারণ শশা ওজন কমাতে সহায়তা করে। 

তবে শুধুমাত্র শসা খেয়ে যে ওজন কমাতে হবে এমন কোন কথা ডায়েটেশিয়ানরা বলে না। তবে অনেক মানুষ ওজন কমানোর জন্য শসা কে ঔষধ হিসেবে ধরে নিয়ে সারাদিন শুধু ক্ষুধা লাগলে শশায় খেয়ে যায়। যার কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয়। 

শসা যেহেতু একটি কম ক্যালরিযুক্ত খাবার তাই শশা যদি একনাগারে খাওয়া যায় তাহলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিবে। এছাড়াও অন্যান্য খাবার বাদ দিয়ে সারাদিন শুধু ক্ষুধা লাগলে শসা খেলে পেটের নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন বদহজম, গ্যাস, পেট ফাঁপা, পেটব্যথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি। 

আপনি যদি একনাগারে ওজন কমাতে গিয়ে শুধু সারাদিন কষাই খান তাহলে পুষ্টি জনিত অভাবের কারণে আপনার শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে, কাজ করা শক্তি হারিয়ে ফেলতে পারেন। এছাড়াও শরীরের রক্ত কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। এছাড়া রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমে গিয়ে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার মত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা অনেকটাই উপকৃত হয়েছেন। আমি আপনাদের সুবিধার জন্য জানানোর চেষ্টা করেছি শসার বিভিন্ন উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আর্টিকেলটি পরে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আপনার মন্তব্য জানাবেন।

ভালো লাগলে ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখবেন এবং কোন কিছু জানতে বা বুঝতে না পারলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url