সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা - সোনা পাতা গুরা খাওয়ার নিয়ম

করলার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুনপ্রিয় পাঠক আপনি হয়তো সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা - সোনা পাতার গুড়া খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। আজ আমি এই আর্টিকেলের মাধ্যেমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা কোরব সোনা পাতা আমাদের শরীরের জন্য কতোটা উপকারি।সোনা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা - সোনা পাতা গুরা খাওয়ার নিয়ম
আর্টিকেলটিতে আরও সোনা পাতা চেনার উপায়,ছবি,সোনা পাতা গুড়ার দাম,সোনা পাতা গুরা খাওয়ার নিয়ম,সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা আলোচনা করা হয়েছে।

পোস্ট সূচিপত্রঃতাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই সোনা পাতার বিভিন্ন গুন সম্পর্কে।

সোনা পাতার উপকারিতা-ভূমিকা

অধিকাংশ বিশেষজ্ঞদের মতে সোনা পাতা ভেষজ হিসেবে সরাসরি ব্যবহারের চাইতে গুড়া করে নিয়মিত খেলে শরীরের ভেতর থেকে অধিক পরিষ্কার হয় ।বাইরের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। সোনা পাতা অ্যান্টিসেপটিক ও এন্টি আলসার হিসেবেও কাজ করে। 
সোনা পাতা হলো কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ের সর্বাধিক কার্যকর ভেষজ। তবে সোনা পাতা মাসে সর্বোচ্চ ১০ দিন থেকে ১৩ দিনের বেশি খাওয়া উচিত নয়। সপ্তাহ হিসেবে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিনের বেশি খাওয়া ঠিক নয়। মনে রাখবেন সোনা পাতার গুড়া খেয়ে কখনো বাহিরে ভ্রমণে যাবেন না।

সোনা পাতা চেনার উপায়

আপনি কি সোনা পাতা চেনার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আরটিকালের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে সোনাপাতা চেনার উপায় সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা সোনা পাতা চেনার উপায় সম্পর্কে জেনে নেই।সোনা পাতা দেখতে অনেকটা মেহেদি পাতার মত। 

এই সোনা পাতা দেখতে কাঁচা অবস্থায় হলুদাভ সবুজ রংয়ের হয়ে থাকে এবং শুকানোর পর অনেকটা হলুদাভ সোনালী বর্ণের হয়ে থাকে। সোনা পাতা গাছের মাথায় হলুদ রঙের ফুল ফুটে থাকে তবে অনেক সময় দেখা যায় এই ফুল সাদা এবং গোলাপি রঙের হয়ে থাকে। এই গাছের ফল অনেকটা সিম জাতীয় হয়ে থাকে। 

সিমের মত ভিতরে আড়াআড়ি ভাবে বীজ থাকে। সুদান, সোমালিয়া, সিন্ধু প্রদেশ, পাঞ্জাব ও দক্ষিণ ভারতে বাণিজ্যিকভাবে সোনা পাতার চাষ করা হয়ে থাকে। উপমহাদেশের অনেক দেশসহ বাংলাদেশেও এই সোনা পাতা পাওয়া যায়। 

সোনা পাতা গাছ মূলত উষ্ণমণ্ডলীয় যার কারণে যে সকল দেশে উষ্ণতা বেশি সেই সকল দেশে এই গাছ বেশি জন্মে। যেমন আরব দেশের বিভিন্ন জঙ্গলে প্রচুর পরিমাণে সোনা পতাকা জন্মে থাকে। আশা করছি আপনি আর্টিকেল এর এই পর্ব টি পড়ার মাধ্যমে সোনা পাতা চেনার উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

সোনা পাতা গাছের ছবি

আপনি কি সোনা পাতা গাছের ছবি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আরটিকালের এই পর্বে উপস্থাপন করা হয়েছে সোনা পাতা গাছের ছবি। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা সোনা পাতা গাছের ছবি দেখে নেই। আপনারা যারা সোনাপাতা গাছ এবং সোনা পাতা গাছের পাতা চেনেন না তাদের সুবিধার জন্য সোনা পাতা গাছের ছবি নিচে দেওয়া হল।

সোনাপাতা গাছ ও গাছের ফুল
শুকনা সোনা পাতা

সোনাপাতার গুড়া

সোনা পাতা গুরা খাওয়ার নিয়ম

আপনি কি সোনা পাতা গুরা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে সোনাপাতা গুরা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা সোনা পাতা গুরা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই।

সোনা পাতা যেহেতু প্রাকৃতিক উপাদান তাই প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করে খাওয়াটাই উত্তম। তবে সেটা যদি সম্ভব না হয় তাহলে আপনি চেষ্টা করবেন প্রাকৃতিক উপায়ে যারা সোনা পাতার গুঁড়ো তৈরি করে তাদের থেকে সংগ্রহ করার জন্য। সোনা পাতার গুড়ো খাওয়া অধিক কার্যকর হওয়ার ফলে অবশ্যই প্রাকৃতিক সোনা পাতা খাওয়া উত্তম। 

সে ক্ষেত্রে আপনি এক কাপ কুসুম গরম পানিতে হাফ চা চামচ সোনা পাতা মিশিয়ে পাঁচ মিনিট পর খেয়ে নিতে পারেন। অথবা সোনা পাতা দিয়ে চা তৈরি করেও খেতে পারেন। যেভাবেই খান না কেন সোনা পাতার উপকারিতা আপনি পাবেন।
সতর্কতাঃ তবে যারা বিভিন্ন ধরনের পেটের সমস্যায় ভোগেন যেমন পাতলা পায়খানা, আমাশয়, অন্ত্রের প্রদাহ, আলসার এমনকি অ্যাপেন্ডিসাইড জনিত সমস্যা থাকলে সোনা পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। 

এছাড়াও গর্ভবতী মহিলারা এবং স্তন্যদানকারী মা , বৃদ্ধ এবং শিশু এছাড়াও দুর্বল প্রকৃতির মানুষ সোনা পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এক সপ্তাহে দুইদিন আপনি সোনা পাতা খেতে পারেন আর সোনা পাতা খাওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে বাসা থেকে বের না হওয়াই ভালো।

সোনা পাতা গুড়ার দাম

আপনি কি সোনা পাতা গুরার দাম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেল এর এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আরটিকালের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে সোনাপাতা গুরার দাম সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা সোনা পাতা গুড়ার দাম সম্পর্কে জেনে নেই। সোনা পাতা সাধারণত গ্রাম অঞ্চলের রাস্তাঘাটে এবং পুকুর পাড়ে বেশি দেখা যায়। 

তবে বাংলাদেশ বাণিজ্যিকভাবে সোনা পাতা উৎপাদন না হলেও সোনা পাতা গুরার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বর্তমান সময় বাংলাদেশে এক কেজি সোনা পাতার গুড়া কিনতে হলে আপনাকে ১১০০ থেকে ১৮০০ টাকা খরচ করতে হবে। এছাড়াও অঞ্চল ভেদে অনেক জায়গায় সোনা পাতার গুড়ার দাম বৃদ্ধি পেয়ে দুই হাজার টাকাও হয়ে থাকে। 

বর্তমানে বিভিন্ন অনলাইন ওয়েবসাইট রয়েছে যারা অনলাইনের মাধ্যমে সোনা পাতার গুড়া বিক্রি করে থাকে। সোনা পাতা ক্রয় করার সময় অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি সোনা পাতার গুড়া ক্রয় করবেন। সব থেকে ভালো হয় আপনি যদি সোনা পাতা সংগ্রহ করে, ভালোভাবে পরিষ্কার করে, সেই পাতা রোদে শুকিয়ে গুড়া করে সংরক্ষণ করতে পারেন।

সোনা পাতার উপকারিতা

আপনি কি সোনা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে সোনা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা সোনা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই। আমরা জানি সোনা পাতার সোনার মতোই উপকারিতা রয়েছে। 

যে এই পাতা সম্পর্কে জানে সে সোনা পাতার কদর করতে জানে। কারণ প্রাকৃতিক এই পাতা আমাদের নানান রোগ থেকে মুক্ত রাখতে পারে।বিশ্ব হারবাল গবেষণা ইনস্টিটিউট সোনাপাতা কে অত্যন্ত শক্তিশালী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সারা বিশ্বে কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ের জন্য সোনা পাতা গ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকালীন সংঘটিত কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য সাময়িক চিকিৎসা হিসেবে সোনা পাতার ব্যবহারের অনুমতি দেয়। কারণ কোষ্ঠকাঠিন্যের মহা ঔষধের মত কাজ করে এই সোনা পাতা। সোনা পাতা এতটাই উপকারী যে বাহিরে যেমন আমরা সাবান দিয়ে আমাদের শরীর ধুয়ে ফেলি তেমনি সোনা পাতা আমাদের পেটের মধ্যেকার সমস্ত বজ্র ধুয়ে ফেলতে সাহায্য করে। অর্থাৎ পায়খানা পরিষ্কার করার জন্য সোনা পাতার জুড়ি মেলা ভার।

সোনা পাতার অনেক উপকারিতা রয়েছে। এর মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য উপকারিতা গুলো নিচে বর্ণনা করা হলো।
  • বিভিন্ন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে সোনা পাতা কে কোষ্ঠকাঠিন্যের মহা ঔষধ বলা হয়ে থাকে। কারণ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সোনা পাতা ব্যাপক উপকারে আসে।
  • এছাড়াও লিভার, ইস্টুর এবং কোলনের সমস্যায় সোনা পাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • রেক্টামের ব্যথার সমস্যা সোনা পাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • সোনা পাতা ব্যবহারের ফলে শরীরের ওজন কমার পাশাপাশি ক্ষুধা অনেকাংশে কমে আসে।
  • আপনি যদি নিয়ম অনুযায়ী সোনা পাতা খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করবে।
  • এছাড়াও যারা কৃমির সমস্যায় ভুগছেন কৃমিজনিত সমস্যা দূর করার জন্য সোনা পাতা বেশ কার্যকর।
  • বর্তমান সময়ে অর্শ রোগের সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। যাদের অর্শ রোগের আছে তারা নিয়মিত সোনা পাতা সেবন করলে অর্শ রোগের প্রতিরোধ ও প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করবে।
  • ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় সোনা পাতা খুব ভালো সমাধান দিতে পারে।
  • সোনা পাতায় রয়েছে বিদ্যমান এনথ্রানয়েড রেচক যা হজম প্রক্রিয়াকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। এতে কোলনের সঞ্চালন উদ্দীপিত হয় যার কারণে খুব অল্প সময়ে এবং খুব সহজেই মল দেহ থেকে বাইরে নিষ্কাশিত হয়।

সোনা পাতার অপকারিতা

অনেকেই আছেন যারা সোনা পাতার অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আর্টিকেলের এই পর্বে সোনা পাতার অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। সোনা পাতার সোনার মতো উপকারিতা রয়েছে তা আমরা অনেকেই জানি। তবে প্রাকৃতিক উপাদান হওয়া সত্ত্বেও সোনা পাতা ব্যবহারের বেশ কিছু বিধি নিষেধ রয়েছে। 

তাই যারা দীর্ঘদিন যাবত পেটের নানা ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তারা এই পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কারণ দীর্ঘদিন যাবৎ যদি আপনি সোনা পাতা খেতে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার উপকারের থেকে অপকার বেশি হবে। চলুন তাহলে জেনে নেই কারা এই সোনা পাতার গুড়া সেবন করতে পারবেন না।
  • সোনা পাতার গুড়া গর্ভবতী মা ও শিশু , বয়স্ক ও দুর্বলদের জন্য নয়।
  • এছাড়াও যারা পেটের সমস্যায় দীর্ঘদিন যাবত ভুগছেন যেমন ডায়রিয়া, আমাশয় এ ধরনের রোগ রয়েছে তাদের সোনা পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • এছাড়াও অন্ত্রের রোগ অ্যাপেন্ডিসাইটিস, আলসার ওন্ত্রের প্রদাহ থাকলে সে সব রোগীদের সোনা পাতার গুড়া খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
আশা করছি আপনি সোনা পাতার অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। তাই আপনার যদি উপরে উল্লেখিত সমস্যাগুলো থেকে থাকে, তাহলে সোনা পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

লেখকের মন্তব্য

মানবদেহের জন্য সোনা পাতার গুরুত্ব অনেক।আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে সপ্তাহে অন্তত ২ দিন সোনা পাতার গুড়া পানিতে মিশিয়ে অথবা চা তৈরি করে খেতে পারেন।আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আপনার মন্তব্য জানাতে ভুলবেন না।

ভালো লাগলে ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখবেন এবং কোন কিছু জানতে বা বুঝতে না পারলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন।এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url