ঢাকা টু কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচী ও ভাড়া জেনে নিন

প্রিয় পাঠক আপনি নিশ্চয়ই ঢাকা টু কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচী ও ভাড়া সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। আজ এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার এবং আসার বিস্তারিত তথ্যসমূহ। তাই আর দেরি না করে ঢাকা টু কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচী ও ভাড়া জেনে নিন।
ঢাকা টু কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচী ও ভাড়া জেনে নিন
পোস্ট সূচিপত্রঃআর্টিকেলটি বিস্তারিত পড়লে ঢাকা টু কক্সবাজার যাওয়ার পুরো প্রসেসটি আপনার কাছে সহজ ও তর মনে হবে। তাই পুরো বিষয়টি সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ঢাকা টু কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচী-ভূমিকা

রাজধানী থেকে সরাসরি কক্সবাজার যেতে চালু হচ্ছে ট্রেন। ট্রেনে চড়বেন ঢাকা থেকে সকালে ঘুম ভাঙলেই দেখবেন সাগর পাড়ে বিশাল এক ঝিনুক দাঁড়িয়ে আছে আপনাকে অব্যাহর্থনা জানাতে। আপনি চাইলেই স্টেশনের লকারে আপনার ব্যাগ পত্র রেখে ঘুরে আসতে পারবেন সাগর পাড় সহ কক্সবাজারের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে। 

ট্রেনের দোলনিতে এমন স্বপ্ন দেখতে দেখতে কক্সবাজার এলে দেখবেন স্বপ্ন নয় সত্যি ঝিনুক আদলে আইকনিক স্টেশনে পৌঁছে গেছেন আপনি। কক্সবাজারের আইকনিক স্টেশনের চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য দেখে আপনি অবাক হয়ে যাবেন। 


বাংলাদেশের মাটিতে এত সুন্দর স্টেশন এর আগে নির্মাণ করা হয়নি। অবশ্য এই ট্রেন লাইন নির্মাণের আগে কক্সবাজারের সাথে ঢাকার কোন রেললাইন সংযোগ ছিল না।ঢাকা থেকে কক্সবাজারে যেতে আপনার খরচ পড়বে মাত্র ১৮৮ টাকা।

কক্সবাজার স্টেশনের সুবিধা সমূহ

বাংলাদেশের অন্যান্য স্টেশনের তুলনায় কক্সবাজারের আইকনিক স্টেশন অন্যতম। চলুন জেনে নেওয়া যাক কক্সবাজারের আইকনিক স্টেশনে কি কি সুবিধা রয়েছে।স্টেশনটি এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যে দেখে মনে হবে এটি একটি তারকা মানের হোটেল। 

আইকনিক স্টেশনে রয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য বড় তিনটি জায়গা। স্টেশনের ভবনে রয়েছে কাউন্টার, আপনাকে স্বাগত জানানোর জন্য অভ্যর্থনা কক্ষ, রেস্তোরাঁ, মালামাল রাখার জন্য লকার, শিশু যত্ন কেন্দ্র, মসজিদ সহ আধুনিক সব ধরনের সুযোগ সুবিধা। 

বিশেষ করে পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে এ ধরনের সুযোগ সুবিধা গুলো দেওয়া হয়েছে।আপনি চাইলেই রাতের ট্রেনে কক্সবাজার পৌঁছে আপনার ব্যাগ পত্র গুলো স্টেশনের লকারে রেখে সারাদিন আপনি সমুদ্র সৈকতে অথবা বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরতে পারবেন। 

আবার রাতে ট্রেনে ঢাকায় ফিরতে পারবেন। এছাড়াও কক্সবাজার স্টেশনে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।প্রতিদিন কক্সবাজার স্টেশনে আসা-যাওয়া করে প্রায় ৯০ হাজারের বেশি যাত্রী।

কক্সবাজার স্টেশনের অবস্থান

সমুদ্র সৈকত থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ঝিলংজা এলাকায় ২৯ একর জমিতে ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নির্মিত হয়েছে ঝিনুকের আদলে দৃষ্টিনন্দন স্টেশনটি। আইকনিক এই ষ্টেশনটি নির্মাণে চীন, বেলজিয়াম, ইংল্যান্ড, ইতালি সহ বিশ্বের আধুনিক স্টেশনের সুযোগ সুবিধা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। পুরো প্রকল্পটিতে ৪ বছরের বেশি সময় ধরে ৬ শতাধিক লোক কাজ করেছে।

ঢাকা টু কক্সবাজার ট্রেনের ভাড়া

বহুল প্রতীক্ষিত কক্সবাজারের আইকনিক স্টেশনটি উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১ ডিসেম্বর ২০২৩ সাল থেকে ঢাকা টু কক্সবাজার পুরোপুরি চালু হয়েছে ট্রেন। ট্রেন চালু হওয়ার পর এই রুটে ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়া যাবে মাত্র ১৮৮ টাকায়। তবে এটি নন এসি মেইল ট্রেন। ঢাকা থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ৫৫১ কিলোমিটার। 


রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার ভাড়া নন এসি অর্থাৎ শোভন চেয়ারে ৫১৫ টাকা। এছাড়াও এসি সিটে ভাড়া ৯৮৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসি সিটে ভাড়ার সাথে ভ্যাট ধরা হয়েছে ১৫ শতাংশ অর্থাৎ ভাড়া হবে ১১৩২ টাকা। 

এসি কেবিনে ভ্যাটসহ ভাড়া হবে ১৩৬৩ টাকা। এছাড়াও এসি বার্থে ভাড়া পড়বে ২০৩৬ টাকা। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ধারণা করছে ঢাকা থেকে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালু হলে প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হবে।

ঢাকা টু কক্সবাজার ট্রেনের বগি ও আসন সংখ্যা

চলুন জেনে নেওয়া যাক ঢাকা টু কক্সবাজার ট্রেনের বগিও আসন সংখ্যা কয়টি। ট্রেনে রয়েছে একটি পাওয়ার কার, দুটি খাবার বগি, তিনটি এসি কেবিন, পাঁচটি এসি চেয়ার , ছয়টি শোভন চেয়ার এবং একটি নন এসি ফাস্ট সিট বগি থাকবে। 

ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার সময় আসন সংখ্যা হবে ৭৯৭ টি। ফেরার সময় কক্সবাজার থেকে ঢাকায় আসার সময় আসন সংখ্যা হবে ৭৩৭ টি। রেলওয়ে সূত্রে জানিয়েছে আপাতত ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের তূর্ণা নিশিতার বগি দিয়ে ঢাকা কক্সবাজার ট্রেন চালানো হবে।

ঢাকা টু কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচী

রেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানিয়েছে, প্রতিদিন একটি ট্রেন ঢাকা থেকে রাত ১০ টা ৩০ মিনিটে যাত্রা শুরু করে বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রাম স্টেশনে বিরতি দিয়ে সকাল ৬ টা ৪০ মিনিটে কক্সবাজারে পৌঁছাবে। আবার সেই একই ট্রেন কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে দুপুর ১ টায় যাত্রা শুরু করবে এবং ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ৯ টা ১০ মিনিটে। ফেরার সময়ও চট্টগ্রাম ও বিমানবন্দর স্টেশনে বিরতি দিবে। 

ট্রেনটির নাম এখনো নির্ধারণ না হলেও বেশ কয়েকটি ট্রেনের নাম প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এগুলো হল: হিমছড়ি এক্সপ্রেস, প্রবাল এক্সপ্রেস, লাবনী এক্সপ্রেস, ইনানী এক্সপ্রেস ও সেন্ট মার্টিন এক্সপ্রেস এর মধ্যে থেকে যে কোন একটি অথবা অন্য কোন নাম দিতে পারেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণের খরচ

রেলপথ নির্মাণের আগে কক্সবাজারের সঙ্গে কোন রেল যোগাযোগ ছিল না। শুরুতে এটি ছিল দোহাজারী থেকে রামু হতে গুনধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েট গ্যাসট্রাক নির্মাণ প্রকল্প। এতে মোট ১২৯.৫৮ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণের কথা ছিল। পরে রামু থেকে গুনধুম অংশের কাজ স্থগিত হয়। 


বর্তমানে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০.৭৩ কিলোমিটার রেল নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। রেল নেটওয়ার্কের বাইরে থাকা পর্যটন নগরীতে ট্রেন নীতি প্রকল্পটি ২০১০ সালে অনুমোদনের সময় ব্যয় ধরা হয় ১৮৫২ কোটি টাকা।

২০১৬ সালে প্রকল্পটি সংশোধনের মাধ্যমে ব্যয় বেরে ১৮০৩৪ কোটি টাকা দাঁড়ায়। শুধুমাত্র মানুষের সুবিধার জন্য বাংলাদেশকে উন্নত জাতিতে রূপান্তরিত করার জন্য এত টাকা ব্যয় করে বিভিন্ন ধরনের বড় বড় কার্যক্রম সম্পূর্ণ করা হচ্ছে।

শেষ কথা

বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কক্সবাজার কে ঘিরে অন্তত ছয় জোড়া ট্রেনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তবে শুরুতেই ছয় জোড়া ট্রেন না চালালেও দুই থেকে তিন জোড়া ট্রেন চালানো হবে। পর্যায়ক্রমে সবগুলো ট্রেন চালানো হবে।

আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে অথবা কোন উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url