মেথি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম

জিরা পানির উপকারিতা জানতে ক্লিক করুনআমাদের অতি প্রিয় পাঁচফোড়নের একটি মসলা হলো মেথি। মেথির ব্যবহার শুধুমাত্র রান্নাঘরের সীমাবদ্ধ নয়। আয়ুর্বেদিক ঔষধ প্রস্তুতি থেকে শুরু করে চুলের পরিচর্যায় মেথি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও মেথির প্রচুর উপকারিতা রয়েছে। আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানবো মেথি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
মেথি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম
মেথি আমাদের শরীরের জন্য এতটাই উপকারী যে ,ডাক্তারেরা মেথির ব্যবহার করা কে ইস্ট্রোজেন- রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির সাথে তুলনা করেছেন।

পোস্ট সূচীপত্রঃআজ এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনাদের জানাবো মেথি মানব দেহের জন্য আসলে কতটা উপকারী। মেথি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

মেথি খাওয়ার উপকারিতা - ভূমিকা

মেথি রান্নার কাজে ব্যবহৃত হলেও মেথি রয়েছে অনেক উপকারিতা। আপনি যদি নিয়মিত মেথি খেতে পারেন তাহলে দূরে থাকা যাবে শারীরিক অনেক সমস্যা থেকে। আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে মেথির উপকারিতা সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরেছি। 

এই আর্টিকেলটি যদি আপনারা মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আপনারা জানতে পারবেন মেথি খাওয়ার নিয়ম, মেথি চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা. গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম, মেথি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। 

মেথি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে অবশ্যই আপনাকে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। আশা করছি আর্টিকেলটি পড়লে আপনি অনেক উপকৃত হবেন।

মেথি খাওয়ার নিয়ম

পাঁচফোড়ন মসলার মধ্যে খুবই পরিচিত একটি মসলা হলো মেথি। মেথি সাধারণত মসলা হিসেবে বেশি ব্যবহার করা হয়। সব বাঙালির রান্না ঘরে মেথি খুব পরিচিত একটি মসলা। যা খাবারের স্বাদ ও সুগন্ধ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এছাড়াও মেথির রয়েছে অনেক ওষুধই গুণ। 

আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কয়েকটি মেথি চিবিয়ে খান অথবা এক গ্লাস পানিতে কিছু পরিমাণ মেথি ভিজিয়ে রেখে সেই পানি যদি আপনি পান করেন তাহলে আপনি অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত থাকবেন। নিয়মিত মেথি খাওয়ার ফলে রক্তে সুগারের মাত্রা কমতে সাহায্য করবে এবং দেহের ক্ষতিকর কোলেস্টরলের মাত্রা কমে যাবে। 


যা আপনাকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করবে। এছাড়াও হজম জনিত সমস্যার সমাধান করে এবং চুল পড়ার সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে মেথি খুবই উপকারী একটি উপাদান। এছাড়াও মেথির আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। কারণ মেথিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফ্যাট, ডায়েটারি ফাইবার এবং খনিজ উপাদান। এই উপাদানগুলো না না ভাবে আমাদের শরীরের উপকার করে থাকে। 

তাই আপনি যদি এই ধরনের সমস্যার হাত থেকে বাঁচতে চান তাহলে নিয়মিত সকাল বেলায় খালি পেটে কিছু পরিমাণ মেথি চিবিয়ে খেতে পারেন অথবা রাতে এক গ্লাস পানিতে কিছু পরিমাণ মেথি ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে সেই পানি পান করতে পারেন। চাইলে ভেজানো মেথি গুলো চিবিয়ে খেতে পারে উপকার পাবেন। আশা করছি মেথি খাওয়ার সঠিক নিয়ম আপনি জানতে পেরেছেন।

মেথি চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

স্বাস্থ্য উপকারিতার অন্যতম একটি উপাদান হলো মেথি। বিভিন্ন ধরনের কঠিন রোগ ত্বক ও চুলের যত্নে খুবই কার্যকরী একটি উপাদান হলো মেথি। মেথিতে রয়েছে বেশ কিছু উপকারী উপাদান যেমন ফলিক এসিড, রিবোপ্ল্যাবিন, পটাশিয়াম, কপার, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন অসংখ্য উপকারী উপাদান। 

প্রতিদিন যদি আপনার খাদ্য তালিকায় মেথি রাখতে পারেন তাহলে তা আপনাকে বিভিন্ন কঠিন রোগ থেকে মুক্ত রাখতে সহায়তা করবে।
  • আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১০-১৫ টি মেথি চিবিয়ে খেতে পারেন তাহলে তা আপনার শরীরের জন্য খুবই উপকারীতা বয়ে আনবে।
  • এছাড়াও যদি মেথি গোটা চিবিয়ে খেতে না পারেন তাহলে রাতের বেলায় একগ্লাস পানিতে কিছু পরিমাণ মেথি ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেলে তা আপনার খুদা কমাতে ও হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে।
  • মেথি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি কোলেস্টেরল ও রক্তচাপের মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত আপনার খাদ্য তালিকায় মেথি রাখুন।
  • আপনারা যারা চুল পড়ার মতো সমস্যায় ভুগে থাকেন তারা নিয়মিত মেথি পানি অথবা গোটা মেথি সেবন করতে পারেন। তাহলে চুল পড়ার সমস্যা খুব সহজেই সমাধান পাবেন। মেথি খাওয়ার ফলে ভেতর থেকে আপনার চুলের গোড়া শক্ত করতে সাহায্য করবে।
  • শরীরে ফোলা ভাব, পেশির ব্যথা, হাঁটুর গিঁটে ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে যদি নিয়ম মেনে খেতে পারেন মেথি।
  • এমনকি সিজনাল জ্বর সর্দি কাশি ও হাঁপানির মতো সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে নিয়মিত মেথি খাওয়ার ফলে।

গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম

বর্তমান সময়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় আমরা সকলেই ভুক্তভোগী। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দিচ্ছে। আগে মানুষ গ্যাস্টিককে সাধারণ সমস্যায় হিসেবে মনে করলেও বর্তমান সময়ে গ্যাস্ট্রিক নিয়ে মানুষ আতঙ্কিত। গ্যাস্ট্রিক থেকে মরণ ব্যাধির মতো ক্যান্সারও সৃষ্টি হতে পারে। 

এ কারণেই বর্তমানে মানুষ প্রাথমিক পর্যায়ে থেকে গ্যাস্ট্রিককে নির্মূল করার চেষ্টা করে। কারণ পরবর্তীতে যেন বড় ধরনের কোন সমস্যায় না পড়তে হয়। আর গ্যাস্ট্রিক দূর করার জন্য ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপাদান মেথি খুবই উপকারী। মেথি আমাদের সকলের ঘরেই রয়েছে। মেথি বিভিন্ন রোগের মহা ওষুধ হিসেবে কাজ করে। 

গ্যাস্ট্রিক দূর করার জন্য ঘরোয়া উপাদান মেথি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানেন না। ঘরোয়া এই উপাদান টি যদি আপনারা নিয়ম মেনে খেতে পারেন তাহলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন। আজ এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমি আপনাদের গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্ত থাকার জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানাবো। 

আশা করছি আজকে শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পরে আপনি উপকৃত হতে পারবেন। বর্তমান সময়ে দেখা যায় অনিয়মিত জীবনযাপন ও খাদ্য অভ্যাস গ্যাস্ট্রিকের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। আপনারা অনেকে আছেন যারা দীর্ঘদিন যাবত এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন। তবে এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্ত করতে পারে আপনার ঘরে থাকা খুবই পরিচিত একটি উপাদান মেথি। 


এই মেথি যদি আপনি নিয়ম মেনে খেতে পারেন তাহলে গ্যাস্টিকের সমস্যা আপনার ধারের কাছেও ঘেষতে পারবে না। মেথি এমন একটি ভেষজ ঔষধ যা শুধুমাত্র গ্যাস্ট্রিক নয় অনেক ধরনের কঠিন রোগ থেকে আপনাকে মুক্ত রাখতে পারে। মেথিতে থাকা প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
  • তাই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য ঔষধের পিছনে ছোটাছুটি না করে নিয়ম মেনে মেথি সেবন করুন। এতে আপনি কোন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়া গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে মেথি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
  • প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১০-১৫ টি মেথি নিয়ে আপনি যদি চিবিয়ে খেতে পারেন তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে খুব সহজেই মুক্ত থাকবেন।
  • এছাড়াও রাতে শোয়ার আগে এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ মেথি ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানি পান করলে এতেও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার পাশাপাশি অন্যান্য শারীরিক সমস্যা থেকেও মুক্ত থাকা যায়।
  • এছাড়াও একটি গ্লাসে পানি নিয়ে তার মধ্যে এক চামচ মেথি ভিজিয়ে রাখতে হবে 10 মিনিট এরপর সেই মেথি ভেজানো পানি পান করুন অথবা এর স্বাদ বৃদ্ধির জন্য মধু ও লেবু মেশাতে পারেন। এভাবেও মেথি পানি খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেক আছে কমে যাবে।
  • এভাবে যদি আপনি মেথি পানি খেতে না পারেন তাহলে মেথি পেস্ট করে ভাতের সাথে খেতে পারেন। এভাবেও আপনি মেথি খেলে গ্যাস্টিকের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকবেন।
  • এক গবেষণায় দেখা গেছে অন্তত ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত দিনে দুইবার করে মেথির রস নিয়মিত পান করলে এর উপকারিতা পরিপূর্ণভাবে আপনি পাবেন।

মেথি খাওয়ার উপকারিতা

মেথি খুবই উপকারী একটি উপাদান। মানবদেহের বিভিন্ন রোগ সারাতে মেথির ভূমিকা অনেক। আজ আমরা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে জানবো মেথি আমাদের শরীরের জন্য কি কি উপকার করে থাকে। তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই মেথি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে

আমরা সকলেই জানি মেথি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কারণ মেথিতে রয়েছে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, তামা, প্রোটিন, ভিটামিন বি৬, ফাইবার ও অনেক উপকারী খনিজ উপাদান থাকে। 

তাই প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পানিতে ভেজানো মেথি বীজ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে শরীরে ফাইবারের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবে খিদে কমে যায়। এমনটা হওয়ার কারণে অতিরিক্ত খাওয়ার পরিমাণে লাগাম পরে। যার কারনে খুব সহজেই আপনার ওজন কমতে শুরু করে।

হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়

বর্তমান সময়ে প্রচুর মানুষ গ্যাস ও অম্বলের মত সমস্যায় ভুগে থাকেন। সে ক্ষেত্রে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটাতে পারলে এই ধরনের সমস্যা থেকে অনেকটা মুক্ত থাকা যেতে পারে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত মেথি বীজ অথবা মেথি বীজ ভেজানো পানি খেলে বাওল মুভমেন্টের উন্নতি ঘটে। যার কারনে পেট সংক্রান্ত আর কোন সমস্যা থাকে না। 

আসলে মেথিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা হজমজনিত সমস্যার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও প্রতিদিন সকালে মেথি ভেজানো পানি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর হয়ে যায়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে

আপনারা যারা ইতোমধ্যে ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন আপনারা প্রতিদিন সকালে নিয়মিত মেথি ভেজানো পানি খেতে পারে। যার কারনে শরীরে লেকটোমেনেনের পরিমাণ বাড়তে থাকে। যা আপনার শরীরের শর্করা শোষণের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। 


ফলে সুগার লেভেল বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। কারণ মেথিতে উপস্থিত কিছু অ্যামাইনো এসিড ইনসুলিনের কর্ম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তার জন্য টাইপ টু ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা।

চুল পড়ার হার কমায়

বর্তমান সময়ে ধুলো ও দূষণের ফলে চুল ঝরে যাওয়ার মত সমস্যায় প্রায় সকলেই ভুগে থাকে। এই ধরনের সমস্যা থেকে চুলকে রক্ষা করতে মেথির ভূমিকা অপরিসীম। কারণ মেথিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি। এই উপাদান গুলো টাক পড়ে যাওয়ার সমস্যা থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে। 

আমাদের চুলে লিথিসিন নামক এক ধরনের পদার্থ থাকে। এই পদার্থটি চুল ঝরে পড়ে যাওয়াকে আটকাতে সাহায্য করে। আর মেথি দিয়ে বানানো পেস্ট চুলের জন্য ব্যবহার করলে এই লিথিসিন তৈরি হয় যা কিনা চুলকে মজবুত ও ঘন করে চুলের সমস্যা থেকে মুক্ত রাখে।

একটি পাত্রে এক টেবিল চামচ মেথি বীজের গুঁড়ো নিয়ে সামান্য পরিমাণ পানি দিয়ে ভালোভাবে একটা পেস্ট তৈরি করে নিন। এরপর চুলের গোড়ায় ভালোভাবে এপ্লাই করুন। এরপর ২০ মিনিট অপেক্ষা করার পর ভালোভাবে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। সপ্তাহ যদি একবার এই প্যাক আপনি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার চুল পড়ে উঠবে ঘন কালো ও সুন্দর।

খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়

বিভিন্ন পরিসংখ্যান বলছে গত কয়েক বছরে আমাদের দেশে হৃদরোগের প্রবণতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এমনটা হওয়ার পেছনে হাই কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপের ভূমিকা কে কোনভাবে অস্বীকার করা যায় না। এর কারণে ২৫ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সী সকলের নিয়মিত মেথি ভেজানো পানি খাওয়া উচিত। 

কারণ মেথি ভেজানো পানি খেলে মেথিতে থাকা স্টেডিওডাল সেপনিন্চ নামক উপাদান কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যার কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে যায়।

জ্বরের প্রকোপ কমে

সিজন পরিবর্তনের কারণে আপনি যদি জ্বরে বারবার আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে একগ্লাস করে প্রতিদিন মেথি ভেজানো পানি খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন দারুন উপকার মিলবে। আসলে মেথিতে থাকা কিছু উপকারী উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে এতটাই উন্নত করে যে জ্বরের প্রকোপ কমতে বেশি সময় লাগে না। এছাড়াও সর্দি কাশি সারাতেও এই ঘরোয়া টোটকাটি ব্যবহার করতে পারেন।

কিডনি ফাংশনে উন্নতি ঘটে

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত মেথি বীজ খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্তরে পলিফিনোলি ফ্লেবনইট এর মাত্রা বাড়তে শুরু করে। এই উপাদানটি কিডনি ফাংশনের উন্নতি ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সেই সঙ্গে কিডনি সেলের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

ঋতুস্রাব নিয়ন্ত্রণ করতে

ঋতুস্রাব নিয়ন্ত্রণ করতে রাতের বেলা মেথি পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে সেই মেথি ভেজানো পানি খেলে উপকারিতা পাওয়া যায়।

উপরে উল্লেখিত উপকারিতা ছাড়াও মেথির অনেক উপকারিতা রয়েছে যেমন লিভারের কার্যকারিতা বাড়ায়, বাতের ব্যথা কমায়, হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে এবং তার অন্যকে ধরে রাখতে সাহায্য করে। তাহলে বুঝতেই পারছেন মেথির অনেক উপকারিতা রয়েছে যার কারণে মেথিকে সুপার ফুড বলা হয়।

মেথি খাওয়ার অপকারিতা

মেথি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান তবে উপকারিতার পাশাপাশি প্রত্যেকটি উপাদানের কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। তেমনি মেতেরা কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে।আজ আমরা জানবো মেথি আমাদের শরীরের জন্য কি কি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেই মেথির অপকারিতা সম্পর্কে।

মাথা ঘোরা

মেথি হলো তেতো প্রকৃতির একটি মসলা তাই মেথির গুড়া মুখের মধ্যে গেলে তেতো অনুভব হয়। যার কারনে অনেকের বমি বমি ভাব লাগে এবং মাথা ঘোরার মত ঘটনাও ঘটতে পারে।

ব্লাড সুগারের ক্ষেত্রে

অতিরিক্ত পরিমাণে মেথির ব্যবহারে ব্লাড সুগারের পরিমাণ হঠাৎ করেই কমে যেতে পারে। সুতরাং আপনার শরীরের জন্য কতটুকু মেথির প্রয়োজন তা অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে জেনে নিবেন।

শরীরের দুর্গন্ধের সৃষ্টি হতে পারে

মেথি দীর্ঘদিন ধরে খাওয়ার ফলে শরীর থেকে একটা দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয় যা অস্বস্তিকর। সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিমাণে মেথির ব্যবহারের প্রতি সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।

রক্ত জমাট বাধার ক্ষেত্রে

আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে মেথিদানা সেবন করেন তাহলে তা আপনার রক্ত জমাট বাধার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যাদের শরীরে রক্ত পাতলা তারা মেথি খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিবেন।

গর্ভবতী অবস্থায়

গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে মেথি ভেজানো পানি যদি দীর্ঘদিন যাবত খেতে থাকেন তাহলে সময়ের আগেই শিশুর জন্ম দেওয়া এমন কি গর্ভপাতের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। তাই অবশ্যই মেথি খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।

মেথি খাওয়ার পূর্বে উপরে উল্লেখিত ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে অবশ্যই জানা প্রয়োজন। কারণ অতিরিক্ত পরিমাণে কোন কিছুই সেবন করা উচিত নয়। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে মেথি সেবন করার পূর্বে উপরের ক্ষতিকর দিকগুলো মাথায় রাখবেন।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আশা করছি মেথি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরে আপনি উপকৃত হয়েছেন। এছাড়াও গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী এ বিষয়েও বিস্তারিত জেনে উপকৃত হয়েছেন। 

প্রতিদিন নিত্যনতুন ও তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখুন। এছাড়াও আপনার কোন পরামর্শ বা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। এতক্ষন ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url