রূপচর্চায় নিম পাতা কাঁচা হলুদের উপকারিতা-নিম হলুদের ঔষধি গুন
স্থায়ী ভাবে ফর্সা হওয়ার উপায় জানতে ক্লিক করুনপ্রিয় পাঠক আপনি হয়তো রূপচর্চায় নিম পাতা কাঁচা হলুদের উপকারিতা - নিম হলুদের ঔষধি গুন জানতে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন। কিন্তু সঠিক কোন উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না? আজ আমি আপনাকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে নিম পাতা ও কাঁচা হলুদের গুনাগুণ সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব। বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্টসূচীপত্রঃএখানে আরও নিম পাতা ও কাঁচা হলুদের গুনাগুণ সম্পর্কে ইম্পরট্যান্ট কিছু পয়েন্ট আলোচনা করা হয়েছে। বিস্তারিত জানতে আমাদের সঙ্গে থাকুন
ভূমিকা
প্রাচীনকাল থেকে নিম পাতা ও কাঁচা হলুদের গুনাগুনের কথা আমাদের সকলেরই জানা। বিভিন্ন সময় রূপচর্চা ছাড়াও নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। নিমপাতা বিভিন্ন ধরনের চর্ম রোগের মহাওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
নিম পাতা শক্তিশালী জীবাণুনাশক হিসেবে আমরা সকলেই জানি। কাঁচা হলুদকে প্রাচীনকাল থেকে প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি শরীরে ডিটক্স হিসেবে কাজ করে থাকে। আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন নিম পাতা ও কাঁচা হলুদের ঔষধি গুন, নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ দিয়ে রূপচর্চা, রোদে পোড়া কালো দাগ, মুখের ব্রণ দূর করতে নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ, সতেজ ত্বকের জন্য নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ, তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যায় নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ সম্পর্কে।তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক রূপচর্চায় নিম পাতা ও কাঁচা হলুদের উপকারিতা সম্পর্কে।
নিম পাতাও কাঁচা হলুদের ঔষধি গুণ
নিম পাতা ও কাঁচা হলুদের ঔষধি গুণের কথা প্রায় সকলেরই জানা। তবে কিভাবে কোন নিয়মে সেবন করতে হয় সে সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। আয়ুর্বেদে নিম পাতা ও কাঁচা হলুদের অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।
- ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে নিম পাতা ও কাঁচা হলুদের মিশ্রণ খেতে পারেন। সকাল বেলা খালি পেটে নিম পাতাও হলুদের মিশ্রণ খেলে এটি শরীরের ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে। এবং শরীরের বেড়ে ওঠা ক্যান্সার কোষগুলিকে দূর করে।
- পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার রাখার জন্য আপনি নিম ও হলুদ একসাথে খেতে পারেন। আমাদের খারাপ খাদ্যাভ্যাসের জন্য ধীরে ধীরে পাকস্থলীতে টক্সিন জমতে থাকে যা ধীরে ধীরে অনেক মারাত্মক রোগের দিকে নিয়ে যায় । পাকস্থলীর বিভিন্ন সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে নিম ও কাঁচা হলুদের মিশ্রণ খেতে পারেন এতে শরীর সুস্থ সবল থাকবে।
- স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে নিম পাতার রসের সাথে সামান্য হলুদ মিশিয়ে খেতে পারেন।
- বিভিন্ন ধরনের ঠান্ডা জনিত সমস্যা সর্দি কাশি সারাতে নিমপাতা ,হলুদ , গোলমরিচ ও মধু খেতে পারেন। ৮ থেকে ১০ টি গোল মরিচ গুড়া এক চামচ মধুতে সারারাত ভিজিয়ে খেলে সর্দি কাশির উপকার হয়। আবার নিম ও হলুদের সাথে সামান্য মধু মিশিয়ে খেয়ে নিতে পারেন এতেও ভালো উপকার পাবেন।
- অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য নিম ও হলুদের রয়েছে। এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বিশেষ করে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় এই মিশ্রণটি খেতে পারেন যা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিবে।
নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ দিয়ে রূপচর্চা
প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে ত্বকের যত্নে নিম পাতা ও কাঁচা হলুদের জুড়ি নেই। প্রায় সব ধরনের নামিদামি ব্রান্ডের প্রোডাক্টে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তবে প্রকৃতিতে রূপচর্চার বহু উপাদানের মধ্যে নিম ও কাঁচা হলুদ এক অনন্য নাম।
নিয়ম মেনে নিম ও কাঁচা হলুদ ব্যবহার করলে ত্বকের ডাল নেস, বলি রেখা, রোদে পোড়া কালো ভাব, ব্রণ ইত্যাদি সমস্যা সমাধান দিবে। এই নিম পাতাও কাঁচা হলুদের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।
রোদে পোড়া কালো দাগ
রোদে পোড়া কালো দাগ থেকে ত্বক কে মুক্ত করতে কার্যকর নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ। এক চা চামচ নিম পাতা বাটার ,সাথে এক চা চামচ কাঁচা হলুদ বাটা ,এক চা চামচ মধু , এক চা চামচ মুলতানি মাটি ও লেবুর রস এক সাথে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ মধু খাওয়ার উপকারিতা ও সঠিক নিয়ম
যাদের ত্বক ড্রাই তারা মুলতানি মাটির পরিবর্তে কাঁচা দুধ ব্যবহার করতে পারেন। ২০ থেকে ৩০ মিনিট মুখে রেখে ধুয়ে নিতে হবে। এই প্যাকটি দুই থেকে তিন সপ্তাহ দুইদিন করে ব্যবহার করবেন এতে ভালো ফল পাবেন।
মুখের ব্রণ দূর করতে নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ
তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ একটি সাধারন সমস্যা। ব্রণ চলে গেলেও থেকে যায় ব্রণের দাগ যা বাড়তি দুশ্চিন্তার কারণ। এই ব্রণের দাগ থেকে ফেসকে রক্ষা করতে নিমপাতা ও কাঁচা হলুদের মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন।
কিছু নিমপাতা ও কয়েক টুকরো কাঁচা হলুদ একসাথে পিষে বা ব্লেন্ড করে মুখে লাগাতে পারেন। ২০ থেকে ৩০ মিনিট রেখে মুখ ধুয়ে নিবেন। টানা দুই থেকে তিন সপ্তাহ ব্যবহার করুন ভালো ফল পাবেন।
সতেজ ত্বকের জন্য নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ
সতেজ ত্বক পেতে কিছু নিমপাতা, কয়েক টুকরো কাঁচা হলুদ, একসাথে পিষে বা ব্লেন্ড করে তার সাথে সামান্য মধু মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে নিন। প্যাকটি আপনার মুখে, গলায় এবং হাত-পায়ে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। এটি শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
শুকিয়ে গেলে নরমাল পানিতে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করতে পারেন এতে আপনার ত্বক হবে সতেজ ও উজ্জ্বল।
তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যায় নিম পাতাও কাঁচা হলুদ
তৈলাক্ত ত্বকের তেল তেল ভাব দূর করতে কাঁচা হলুদ, নিমপাতা ও চন্দনের গুড়া ব্যবহার করতে পারেন। কাঁচা হলুদ ও নিম পাতা ভালো করে পিষে তার সাথে চন্দনের গুঁড়া মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে নিন। প্যাকটি মুখে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
এবং নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। ফলাফল আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।
লেখকের মন্তব্য
নিম পাতা ও কাঁচা হলুদের গুনাগুণের কথা কম বেশি সকলেই জানেন। নিম পাতা বিভিন্ন ধরনের চর্ম রোগ থেকে শুরু করে রূপচর্চায় ও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। নিম পাতা প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক এর কাজ করে। আর হলুদ আমাদের শরীরে ডিটক্স হিসেবে কাজ করে।
এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে বা কোন উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই আপনার পরিচিত জনদের সাথে শেয়ার করবেন। এছাড়াও প্রতিদিন নিত্যনতুন ও তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখুন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url