বাংলাদেশে মাদকাসক্তির কারণ ও প্রতিকার জানুন

একটি শীতের সকাল রচনাবর্তমান সময়ে সারা বিশ্বে মাদকাসক্তি ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। কারণ মাদক ব্যবসায়ীদের মেইন টার্গেট হল যুবসমাজ। আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে বাংলাদেশে মাদকাসক্তির কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানব।
বাংলাদেশে মাদকাসক্তির কারণ ও প্রতিকার জানুন
আধুনিক মানব সভ্যতা যে দুটি বিষয়ে আতঙ্কগ্রস্থ তার একটি হল মাদকাসক্তি। মাদক এমন একটি দ্রব্য যা শারীরিক ও মানসিক বিপর্যয় ঘটানোর বস্তু হিসেবে পরিচিত।

পোস্ট সূচিপত্রঃআজ আমরা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে মাদকাসক্তির কারণ ও প্রতিকার রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানব

বাংলাদেশে মাদকাসক্তির কারণ ও প্রতিকার - ভূমিকা

মাদকদ্রব্য বলতে বোঝায় এমন কোন রাসায়নিক পদার্থ যা ব্যক্তির আবেগ, চিন্তা চেতনার উপর প্রভাব বিস্তার করার মাধ্যমে ব্যবহার পরিবর্তন আনতে পারেন। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য যুব সমাজের উপর বেশি প্রভাব ফেলছে। কারণ এই যুবসমাজই হল ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের মেরুদন্ড। 

আর এই যুবসমাজে যদি রসাতলে চলে যায় তাহলে দেশ ঝুঁকির মুখে পড়বে। যে কারণে মাদকবিরোধী বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বাংলাদেশ। আজ আমরা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে বাংলাদেশের মাদকাসক্তির কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে যে বিষয়গুলো জানতে পারবো তা হলো-

মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার কবিতা,মাদকাসক্তি ও তার প্রতিকার প্রবন্ধ রচনা ssc,বাংলাদেশের মাদকাসক্তির কারণ ও প্রতিকার,মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার উক্তি,মাদকাসক্তি ও তার প্রতিকার নিয়ে প্রতিবেদন সম্পর্কে। বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার কবিতা

অনেকেই আছে যারা অনলাইনের মাধ্যমে মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার কবিতা সম্পর্কে জানতে চান। আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদের সুবিধার জন্য মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার নিয়ে একটি কবিতা উল্লেখ করছি। আশা করছি কবিতাটি আপনাদের উপকারে আসবে। চলুন আর দেরি না করে কবিতাটি জেনে নেই।

মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
মোঃ মনিরুল ইসলাম মনির

সমাজের মাঝে যত অত্যাচার, অনাচার
সবকিছুর মূলে আছে মাদক ব্যবহার।
জাগো আজ, তোমরা সব তরুণ সমাজ,
রুখে দাও মরণ ঘাঁতি সব মাদক নেশার।
এরা কেন করে ক্ষমতার অপব্যবহার,
ছড়িয়ে দিচ্ছে অবৈধ মাদকের ব্যবহার।
জাগো আজ তোমরা সব ছাত্রসমাজ,
রুখে দাও সমাজের সকল অত্যাচার।
সমাজে নারী নির্যাতন ঘটছে নিত্যকার,
সবকিছুর মূলে আছে মাদকের ব্যবহার।
জাগো আজ সকল সচেতন নারী সমাজ,
রুখতে হবে বিশ্ব থেকে সকল স্বৈরাচার।
এরা কারা, মাদক ব্যবসা করছে সমাজে
এদের মুখোশ খুলতে হবে, ধরতে হবে শক্ত হাতে,
গড়তে হবে ঐক্যবদ্ধ প্রতিকার।
তাহলেই নিপাত যাবে মাদক ব্যবহার।
মাদক হল কালো টাকার অবাধ ব্যবহার,
কালো টাকার উৎস চিহ্নিত করা দরকার।
সবার আগে দুর্নীতিবাজদের ধরতে হবে,
রুখতে হবে সকল অত্যাচার, অনাচার।
তাহলেই বন্ধ হবে মাদকের অবাধ ব্যবহার।
জাগো আজ সকল পেশাজীবী, কর প্রতিবাদ
যার হাতে যা আছে তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ো,
মাদকসহ সকল অবৈধ কাজ বন্ধ কর,
গড়ে তোল ঐক্যবদ্ধ প্রতিকার।

মাদকাসক্তি ও তার প্রতিকার প্রবন্ধ রচনা ssc

অনেক শিক্ষার্থী বন্ধুরা রয়েছে মাদকাসক্তি ও তার প্রতিকার প্রবন্ধ রচনা ssc সম্পর্কে জানতে চাই। তাদের সুবিধার্থে আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে রচনাটি উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করছি রচনাটি ভালোভাবে পড়লে পরীক্ষায় ভালো নাম্বার পাবে। তাহলে চলো আর দেরি না করে প্রবন্ধ রচনাটি সম্পর্কে জেনে নেই।

ভূমিকা
মাদকাসক্তি নামক এই ছোট অথচ ভয়ংকর শব্দটি বর্তমান বিশ্বের বিশেষ করে বাংলাদেশের যুব সমাজের জন্য আরও ভয়ঙ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। আদিকাল থেকেই মানুষ এই নেশার জালে আচ্ছন্ন হয়ে আছে। এই নেশারই নাম মাদকাসক্তি। 
মাদকদ্রব্য এমন একটি দ্রব্য, যা সেবন করলে একজন অসুস্থ মস্তিষ্কের মানুষে পরিণত হয়ে যেতে পারে এবং তার স্থায়িত্ব যতক্ষণ পর্যন্ত এই দ্রব্যের নেশা দেশের মধ্যে থাকবে। তবুও মানুষ যুগ যুগ ধরে এই নেশায় আসক্ত। এই নেশায় আসক্ত ব্যক্তি সহজে নেশা কাটিয়ে উঠতে পারে না। তার জীবনে নেমে আসে দুদিন এবং নেমে আসে অন্ধকার।

মাদকাসক্তি কি
বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করে নেশা করার প্রবণতায় মাদকাসক্তি। নেশা ক্ষণিকের জন্য মনের যন্ত্রণা লাঘব করে। সকল বেদনা থেকে রেহাই পেতে সাহায্য করে। নেশার ফলে বাস্তব চৈতন্য কে অবলুপ্ত করে তাকে নিয়ে যায় এক স্বতন্ত্র জগতে এসব বিশ্বাস থেকেই মাদকাসক্তির বিকাশ। 

মাদকদ্রব্য হিসেবে বহু উপকরণ রয়েছে যেমন মদ, ভাঙ, আফিম, গাঁজা, মারিজুয়ানা, ফেনসিডিল, চরস ইত্যাদি। সম্প্রীতিকালে হিরোইনের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। জীবনের হতাশা, ব্যর্থতা, বিষাদ, কৌতুহল এসব থেকে নেশা গ্রহণের সূত্রপাত ঘটে। 

জীবনে অস্থিরতা, নৈতিক মূল্যবোধের অভাব, সঙ্গ দোষ, কালো টাকার উত্তাপ ও ব্যয়ের অপরিচ্ছন্ন পন্থা যুবসমাজকে বিভ্রান্তির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

মাদকাসক্তির ক্ষতিকর দিক
মাদকদ্রব্য গ্রহণে আসক্তি সুপ্রাচীন কাল থেকে প্রচলিত আছে যা যুগে যুগে সমস্যার সৃষ্টি করছে। একসময় চীন দেশের লোকজন আফিম খেয়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। সম্প্রীতি কালে মাদকাসক্তির প্রভাবে বহুলকের বিশেষ করে সমাজের ধ্বংস নেমে এসেছে। শুরু হয়েছে এক ভয়াবহ অবক্ষয়ের। বিভিন্ন রকম দৈহিক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়ে দেহের অক্ষমতা বৃদ্ধি করছে। 

মাদকাসক্তির ফলে মানসিক ভারসাম্যহীনতাও সৃষ্টি হয়। দেশে ৩৫০ টি বৈধ গাজার দোকান আছে। দর্শনায় রয়েছে সরকার অনুমোদিত একমাত্র মদ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কেরু এন্ড কোম্পানি। বৈধ লাইসেন্স ছাড়াই দেশের বিভিন্ন জায়গায় দেশীয় মদ প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন ও বিক্রি হয়।

মাদক দ্রব্যের ব্যবহার
আজকাল মাদকদ্রব্য বিভিন্নভাবে সেবন বা গ্রহণ করা হয়। এক ধরনের মাদক আছে যা নাকে টানা হয়। আবার কোন দ্রব্য ধোঁয়ার সাথে পান করা হয়। কোনটি গিলে খাওয়া হয়। আবার কোনটি ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। 

বিভিন্ন জরিপের মাধ্যমে দেখা গেছে যে, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ লক্ষের মতো মাদক সেবনকারী রয়েছে এবং এর সংখ্যা দিন দিন আরো বাড়ছে। বিভিন্ন পেশাজীবী, শ্রমজীবী থেকে শুরু করে স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা নেশায় আসক্ত হচ্ছে।

মাদকদ্রব্যের ধরন বা প্রকাশ
বর্তমানে বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য চালু রয়েছে। মদ, গাঁজা, ভাং, আফিম ইত্যাদি নেশা জাতীয় দ্রব্য যা প্রাচীনকাল থেকেই পাওয়া যায়। বর্তমানে হিরোইন, মারিজুয়ানা, এল.এস.ডি, হাসিস, কোকেন, প্যাথিড্রিন, ফেনসিডিল ইত্যাদি বেশি প্রচলিত। এ পর্যন্ত যেসব মাদকদ্রব্যের কথা জানা গেছে তার মধ্যে নারকাটকসই প্রধান। 

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে হিরোইন সবচেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টিকারী মাদকদ্রব্য। অন্যান্য মাদকদ্রব্যের চেয়ে এর দাম তুলনামূলক বেশি এবং নেশায় আক্রান্ত করে গভীরভাবে।

মাদক সেবনের কারণ
সাময়িক জীবনের প্রতি বিমুখতা ও নেতিবাচক মনোভাব থেকেই মাদকাসক্তির জন্ম। অভ্যাস থেকে আসক্তি, ধূমপান একদিন পরিণত হয়। হিরোইন আসক্তিতে ধনতান্ত্রিক সমাজে ও অর্থনীতিতে ব্যক্তির ভোগের উপকরণ অবাধ ও প্রচুর। 

বর্তমানে সিনেমা ও টেলিভিশনে যেসব অশ্লীল নৃত্য, ছবি, কাহিনী ইত্যাদি দেখানো হচ্ছে সেসব অনুকরণ করতে গিয়ে তরুণ সমাজ তাদের নৈতিক অধঃপতন ডেকে আনছে। তাছাড়া আবার অনেক সময় অস্থিরতা, কোচিন্তা, অভাব অনটন, পারিবারিক কলহের কারণে তরুণ সমাজ এই মোহের জালে আচ্ছন্ন হয়।

মাদকের উৎসভূমি
গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল ( লাওস, মায়ানমার, থাইল্যান্ড) গোল্ডেন ক্রিসেন্ট (আফগানিস্তান, ইরান, পাকিস্তান)। গোল্ডেন ওয়েস হেরোইনের মূল উৎস। মাদকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন হলো আফিম। পপি ফুলের নির্যাস থেকে কৃষকরা তৈরি করেন কাঁচা আফিম। তা থেকে হয় মারফিন বেস। আফিম থেকেই তৈরি হয় সর্বনাশা হেরোইন। 

প্রাপ্ত তথ্য মতে যুক্তরাষ্ট্র, কলম্বিয়া, গুয়াতেমালা, জ্যামাইকা, ব্রাজিল, প্যারাগুয়ের, ঘানা, নাইজেরিয়া, কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রভৃতি দেশে মারিজুয়ানা উৎপন্ন হয়। হাসিস উৎপন্ন করার জন্য জ্যামাইকা, মরক্কো, জর্দান, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ভারত ও নেপাল সমাধিক পরিচিত।

আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্তব্য
বিশ্বের সকল দেশের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসা উচিত। এর উৎপাদন, বিপণ ও পাচার রোধ করার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থা সমূহ কে সচেতন হতে হবে। তাহলে এ ব্যবস্থার উত্তরণ অনেকাংশে কমানো সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়। এজন্য সকল দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সজাগ থেকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে।

মাদকাসক্তির প্রতিকার
মাদকাসক্তির ভয়াবহ পরিণাম থেকে বর্তমান সময় ও মানুষকে বাঁচাতে হলে এই ভয়াবহ ব্যাধির বিরুদ্ধে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বেকারত্বের অভিশাপ মানুষকে মাদকাসক্ত করে। তরুণদের কর্মসংস্থান করলে তারা কর্মময় জীবন যাপন করবে। 

শিক্ষার যথার্থ প্রসার ঘটলে মানুষের নৈতিক জ্ঞান অর্জিত হলে নেশাগ্রস্ত হওয়ার প্রবণতা কমে। সবচেয়ে বড় কথা, মাদকাসক্তের যেমন নিরাময়ের জন্য চিকিৎসা জরুরী তার চেয়ে অনেক বেশি জরুরী ব্যবসায়ীদের আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া।

উপসংহার
মাদকের ব্যবহার এখন জাতীয় সমস্যার রূপেই বিবেচিত হচ্ছে।, ক্ষমতার লোভী, দুর্নীতিবাজ, রাজনীতিবিদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা এরা প্রত্যেকেই এই ভয়াবহ অবস্থার জন্য দায়ী। সবাই মিলে সংগঠিতভাবে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। 

নইলে জাতি হিসেবে আমাদের অস্তিত্ব বজায় রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। আমরা সেই দিন মাদক বিরোধী আন্দোলনে সফল হব যেদিন সকলে মিলে সুস্থ জীবন বোধের চেতনায় উদ্ভাসিত হয়ে গেয়ে উঠতে পারব জোরালো মাদকবিরোধী সংগীত।

বাংলাদেশের মাদকাসক্তির কারণ ও প্রতিকার

বাংলাদেশের মাদকাসক্তির কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে একটি রচনা নিচে উল্লেখ করা হলো। আশা করছি রচনাটি পড়লে শিক্ষার্থীরা মাদকাসক্তির কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে ধারণা পাবে। তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই বাংলাদেশের মাদকাসক্তির কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে।

ভূমিকা
বর্তমান সময়ে মাদকাসক্তি এক ভয়াবহ বৈশ্বিক সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে। অপার সম্ভাবনাময় তরুণ সমাজের জন্য মাদকাসক্তি এখন এক মরণ ফাঁদ। এই ঘাতক ব্যাধিতে আসক্ত হবার ফলে সমাজ হচ্ছে কলুষিত এবং দেশ, জাতি ও পৃথিবীর জন্য অপেক্ষা করছে মর্মান্তিক পরিণতি। 
তাই একটি সুন্দর পৃথিবীর জন্য আলোকিত আগামীর জন্য মাদকাসক্তির মত মরণ থাবা থেকে তরুণ ও যুব সমাজকে রক্ষা করা একটি অবশ্যকর্তব্য বিষয়।

মাদক ও মাদকাসক্তি
মাদকদ্রব্য হল প্রাকৃতিকভাবে অথবা রাসায়নিকভাবে উৎপন্ন পদার্থ যার নেশা তৈরি করে। এসব পদার্থ যারা সেবন করে তাদেরকে মাদকাসক্ত বলা হয়। মাদক সেবনের উগ্র আকাঙ্খা কে বলা হয় মাদকাসক্তি। মাদকাসক্তি এমন এক নেশা যাতে একবার জড়িয়ে পড়লে, তা থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যায় না। এর পরিণতি অকাল মৃত্যু। পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য রয়েছে। 

কিছু কিছু মাদকদ্রব্য বেতন আসুক ও চেতনা নাশক হিসেবে চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে অধিকাংশ মাদকই নেশা কারি পদার্থ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সিগারেট, মদ, গাঁজা, আফিম, ভাং, ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন, প্যাথেডিন, মরফিন, কোকেন, পপি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য মাদক।

মাদকের উৎস
মাদকের উৎস বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মাদক উৎপাদিত হয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে একটি অসাধু মুনাফা নবী বিশাল চক্র। মাদকের প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিপণ, চোরা চালান ও হয় অনেক দেশে থাইল্যান্ড-মায়ানমার-লাওস (গোল্ডেন ট্রাঙ্কেল), আফগানিস্তান-ইরান-পাকিস্তান (গোল্ডেন ক্রিসেন্ট) মাদক চোরা চালানোর প্রধান অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। 

মাদকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন হল আফিম। পপি নামক উদ্ভিদ থেকে আফিম তৈরি হয়। আফিম থেকে তৈরি হয় মরফিন বেস। মরফিন বেস থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি করা হয় হেরোইন। ব্রাজিল, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, ইকুয়েডোর প্রভৃতি দেশে মাদক উৎপাদন ও চোরাচালানের বড় একটি নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে।

মাদকাসক্তির কারণ
জীবনের হতাশা ও দুঃখবোধ থেকে সাময়িক স্বস্তি লাভের আশায় মানুষ প্রথমবার মাদক গ্রহণ করতে আগ্রহী হয়। অনেকে অন্যের প্ররোচনায় মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে। অনেকে কৌতূহলবশত ও প্রথমবার মাদক গ্রহণ করে থাকে। তবে যেভাবেই হোক কেউ একবার মাদক গ্রহণ করলে সেই আসক্তি থেকে বের হওয়া তার পক্ষে কঠিন হয়ে যায়। 

সেই সুযোগে বিপদগামী কিছু মানুষ এবং বহুজাতিক মাদক সংস্থাগুলো অবৈধ অর্থের রমর ব্যবসা চালিয়ে যেতে থাকে।

মাদকাসক্তির কুফল
মাদকে আসক্ত ব্যক্তির বিবেক বুদ্ধি লোপ পায়, ক্ষুধা তৃষ্ণার অনুভূতি কমে যায়, নিদ্রাহীনতা দেখা দেয়, দেহের ওজন কমতে থাকে, হাসি কান্নার বোধ ও বিচার বুদ্ধি বোধ থাকে না, এক পর্যায়ে সে জীবন মৃত্যুর অবস্থায় পৌঁছে যায়। মাদকের মূল্য বেশি হওয়ায় খুব অল্প দিনেই মাদকাসক্তের সঞ্চিত অর্থ ফুরিয়ে যায়। তখন তারা অবৈধ উপায়ে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করে। 

ক্রমে চুরি, ডাকাতি ছিনতাইসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়ে। মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা এভাবে নিজেদের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির পাশাপাশি পরিবার ও সমাজের সুস্থ থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

মাদকাসক্তির প্রতিকার
মাদকাসক্তি সর্বনাশা প্রভাব থেকে মানুষকে বাঁচানোর জন্য বিশ্বজুড়ে প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে। সকলেই ভাবছেন, কেমন করে এর করাল গ্রাস থেকে পৃথিবী রক্ষা করা যায়। ইতোমধ্যেই দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন এর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছে। বাংলাদেশ ও মাদকবিরোধী একাধিক সংগঠন কাজ করছে। 

সরকারি ও বেসরকারি প্রচার মাধ্যম গুলোতে মাদক গ্রহণ ও বিস্তার প্রতি রোদে ব্যাপক প্রচারণা লক্ষ্য করা যায়। সরকারের সমাজ সেবা কর্মসূচিতে মাদক বিরোধী ও মাদকাসক্তদের পুনর্বাসন কার্যক্রম চালু আছে এবং এদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

উপসংহার
মাদকাসক্তির কারণে সমাজের কোন এক জায়গায় অশান্তি সৃষ্টি হলে, সেই অশান্তিগোটা সমাজকে গ্রাস করতে পারে। তাই মাদকাসক্তিকে বিচ্ছিন্ন কোনো বিষয় মনে করলে চলবে না। যে তরুণ সমাজ দেশের ভবিষ্যৎ, তারা যদি সুস্থতার মধ্যে দিয়ে বড় হয়, তাহলে তারা সুস্থ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দিতে পারবে, অন্যথায় নয়। তাই মাদকের করাল গ্রাস থেকে দেশ ও সমাজকে বাঁচাতে হবে।

মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার উক্তি

অনেকে আছেন যারা মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার উক্তি সম্পর্কে জানতে চান। আজ এই পর্বে মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার উক্তি সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। তাই আর দেরি না করে চলুন উক্তিগুলো জেনে নেওয়া যাক। প্রাচীনকাল থেকেই মাদকদ্রব্য গ্রাস করে রেখেছে এই সমাজকে। 

ধীরে ধীরে যেন এর করাল গ্রাস যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে। বিশিষ্ট মনীষীরা মাদকাসক্তি নিয়ে বেশ কিছু উক্তি বলে গিয়েছেন। আজ আপনাদের সুবিধার্থে মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার সম্বন্ধে কয়েকটি বিখ্যাত মনীষীদের উক্তি নিচে উপস্থাপন করেছি।
  • গাবর মাতে: তোমার আগ্রহ তোমাকে তৈরি করে আর তোমার নেশা তোমাকে খেয়ে ফেলে।
  • শেলী লস: নেশা হল একটা পারিবারিক সমস্যা কেননা একজন নেশা করলেও পুরো পরিবারকেই তার মাশুল গুনতে হয়।
  • মার্ক টোয়েন: ধূমপানের নেশা ছাড়া সত্যিই অনেক সহজ আমি এটা হাজার বার করেছি।
  • রাসেল ব্রান্ড: নেশা হল এক মারাত্মক ব্যাধি যার ইতি টানতে হলে আপনাকে হাসপাতাল কিংবা জেলে যেতেও হতে পারে।
  • সুসান চিভার: নেশা কোন বস্তুর প্রতি হয় না বরং নেশা হলো সেই অনুভূতি যখন তুমি কারোর প্রতি তোমার অনুভূতিকে লুকিয়ে রাখতে বস্তুর শরণাপন্ন হও।
  • রিভার ফোনিক্স: নেশা শুধু যে খারাপ ব্যক্তিদের জন্য তা কিন্তু নয় বরং পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষেরই কিছু না কিছু নেশা রয়েছে।
  • নাসিম নিকোলাস তালেব: সবচেয়ে বড় তিনটি নেশা হল হিরোইন, শর্করা এবং মাস শেষের বেতন।
  • সংগৃহীত: নেশাদার পথ যা কিছু পায় সবকিছুকেই ধ্বংস করে দেয়।
  • এডিক্টস টুডে: নেশা কোন দর্শক নয় বরং এর কারণে পুরো পরিবারকেই কষ্টের সাথে খেলতে হয়।
  • সংগৃহীত: আমি মাদকের প্রতি নেশাগ্রস্থ নয় আমি শুধু বাস্তবতাকে এড়িয়ে যেতে চাই।
  • কার্ল গস্তাভ জং: সকল প্রকার নেশায় খারাপ হোক না বা মাদকের নেশা কিংবা নারীবাদী আদর্শের।
  • সংগৃহীত: সবচেয়ে বড় নেশা হলো ফেসবুক নামক মাদকের নেশা।
  • ব্রেইনি রিডার্স: নেশা তোমাকে তোমার বাস্তবতা সম্পর্কে সন্দিহান এবং অন্ধ বানিয়ে ফেলে।

মাদকাসক্তি ও তার প্রতিকার নিয়ে প্রতিবেদন

মাদকাসক্তি ও তার প্রতিকার নিয়ে প্রতিবেদন সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। আজ আপনাদের সুবিধার জন্য প্রতিবেদনটি নিচে উপস্থাপন করা হলো। আশা করছি প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে পেরে আপনি উপকৃত হবেন।

মাদকাসক্তি ও তার প্রতিকার

নিজস্ব প্রতিবেদন: বর্তমান বিশ্ব যে প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তার মধ্যে একটি মাদক। যার বিষাক্ত ছোবলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ। বর্তমানে মাদকাসক্তি আমাদের সমাজে এক সর্বনাশা ব্যাধি রূপে বিস্তার লাভ করেছে। দুরারোগ্য ব্যাধির মতোই তা তরুন সমাজকে গ্রাস করেছে। এর ভয়াবহ পরিণতি দেখে আজ প্রশাসন বিচলিত, অভিভাবকেরা আতঙ্কিত। 

তরুণ যুব শক্তি দেশের প্রাণ মেরুদন্ড। নেশা বলে সেই মেরুদন্ড আজ ভেঙে পড়েছে। মাদকাসক্তির সমস্যা নিয়ে এখন বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। মাদকদ্রব্য হচ্ছে যেসব বস্তু যা গ্রহণের ফলে স্নায়বিক বৈকাল্যসহ নেশা সৃষ্টি হয়। সুনির্দিষ্ট সময় পর পর তা সেবনের আসক্তি অনুভূত হয়। 
যেসব মাদকদ্রব্যের সেবক সর্বাধিক সেগুলো হলো গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন, মদ, ঘুমের ওষুধ ইত্যাদি। এসব মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে নেশা সৃষ্টিকে মাদক শক্তি বলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে মাদক শক্তি হচ্ছে চিকিৎসা গ্রহণ যোগ্য নয় এমন দ্রব্য অতিরিক্ত পরিমাণে বিক্ষিপ্ত গ্রহণ করা এবং এসব দ্রব্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়া। মাদকাসক্তির কারণ বহুবিধ। 

এ পর্যন্ত বিজ্ঞানী, গবেষক, চিকিৎসক মাদকাসক্তির অন্তরালে যে কারণগুলো সক্রিয় বলে চিহ্নিত করেছে সেগুলো হল সঙ্গ দোষ, পারিবারিক কলহ, ধর্মীয় মূল্যবোধের বিচ্যুতি। তবে যারা মাদকাসক্তিতে আসক্ত হয়ে পড়েন বা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সেখান থেকে ফিরিয়ে আনতে যেসব প্রতিকার বা প্রতিরোধ গ্রহণ করা যায়। 

মাদক প্রতিরোধে পরিবার ও সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা, শিক্ষা, পরিমিত জীবনযাপন, বন্ধু নির্বাচনের সর্তকতা, দায়িত্বশীলতা ইত্যাদি মাদকাসক্তি প্রতিরোধ ও প্রতিরোধের পথ হিসেবে বিবেচিত।

লেখকের মন্তব্য - বাংলাদেশে মাদকাসক্তির কারণ ও প্রতিকার

প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনি মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার কবিতা,মাদকাসক্তি ও তার প্রতিকার প্রবন্ধ রচনা ssc,বাংলাদেশের মাদকাসক্তির কারণ ও প্রতিকার,মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার উক্তি,মাদকাসক্তি ও তার প্রতিকার নিয়ে প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন। 

চেষ্টা করব আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী আরো নতুন নতুন আর্টিকেল আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার। প্রতিদিন নিত্যনতুন ও তথ্য সমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখুন। আপনার কোন মতামত বা পরামর্শ থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url