ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম - ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা
লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতাআপনারা অনেকেই ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম - ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান। তাই আপনাদের জন্য ইসবগুলের ভুষি সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরেছি এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে। আশা করছি আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা উপকৃত হবেন।
আমরা অধিকাংশ মানুষই শুধুমাত্র কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য ইসুবগুলের ভুষি খেয়ে থাকি। আমরা অনেকেই জানিনা কোষ্ঠকাঠিন্য ছাড়াও ইসবগুলের ভুসি শরীরে অনেক উপকার করে থাকে।
পোস্ট সূচিপত্রঃচলুন তাহলে আর দেরি না করে ইসবগুলের ভুসি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম - ভূমিকা
বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যার জন্য ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার পরামর্শ দেন। কোষ্ঠকাঠিন্য ছাড়াও এই ভুসি শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে থাকে। যেমন অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও এর ভূমিকা রয়েছে। আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ইসবগুলের ভুসি সম্পর্কে যে বিষয়গুলো জানতে পারবো তা হলো
কোষ্ঠকাঠিন্য ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম,খালি পেটে ইসবগুলের ভুসি খেলে কি হয়,ওজন কমাতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম,ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা,ইসবগুলের ভুসি উপকারিতা ও অপকারিতা,ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা,ইসবগুলের ভুষির অপকারিতা,রাতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
কোষ্ঠকাঠিন্য ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম
আপনি কি কোষ্ঠকাঠিন্যে ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই পর্বটি আপনার জন্য। আমি এই পর্বে কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য ইসবগুলের ভুষি সম্পর্কে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব। আশা করছি বিষয়গুলো জানতে পেরে আপনারা উপকৃত হবেন।
ইসবগুল হল একটা সলিউঅ্যাবল ফাইবার বা আঁশ। যা আসলে রেচক হিসেবে কাজ করে। ইসবগুল আমরা সাধারণত যে ধারণা থেকে খেয়ে থাকি তা হলো কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে। কারণ কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ইসবগুলের ভুসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আরও পড়ুনঃ ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
ইসবগুলের ভুষি অথবা পাউডার আপনি যেভাবেই খান না কেন, রেচক বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি পানির সাথে গঠন করে অন্ত্র থেকে মাল বের হয়ে আসা সহজ করে। যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ হয় এবং যখন কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ হয়, তখন যাদের পাইলস বা অ্যানাল ফিশারের সমস্যা থাকে সেটাও অনেকটা কমে আসে।
তাই আপনারা যারা পায়খানা সমস্যায় ভুগছেন এবং যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা রয়েছে তারা আপনাদের খাদ্য তালিকায় নিয়মিত ইসবগুলের ভুষি রাখতে পারেন। এছাড়াও সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস নরমাল পানিতে এক থেকে দুই চা চামচ ইসবগুল মিশিয়ে সাথে সাথে খেয়ে নিতে হবে।
এভাবে কয়েক দিন খাওয়ার ফলে আপনার পায়খানার যে কোন সমস্যা এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা খুব সহজেই দূর হবে।
খালি পেটে ইসবগুলের ভুসি খেলে কি হয়
আপনি কি জানতে চান খালি পেটে ইসবগুলের ভুষি খেলে কি হয়? ইসবগুলের ভুষি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান। অধিকাংশ মানুষই জানে সকালে খালি পেটে ইসবগুলের ভুসি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা এবং গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
কিন্তু আপনি কি জানেন? সকালে খালি পেটে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে কি পরিবর্তন হতে পারে। আপনি চাইলে দিনে যে কোন সময় ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন। তবে পুষ্টিবিদরা বলছেন, এসব গুলোর ভুসি খাওয়ার উপযুক্ত সময় হল সকালে খালি পেটে।
আপনি যদি সকালে খালি পেটে ইসবগুলের ভুষি খান তাহলে তা আপনার শরীরে আরও বেশি কার্যকরী হবে। যা বেশ কয়েকটি রোগের প্রতিরোধী হিসেবে শরীরে কাজ করবে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেই।
ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ থেকে রক্ষা করে
বিশেষজ্ঞদের মতে সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানিতে দুই চা চামচ ইসবগুল মিশিয়ে খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপের পাশাপাশি টাইপ টু ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে ইসবগুলের শরবত দারুণভাবে কাজ করে।
ডায়রিয়া উপশমে
ডায়রিয়াজনিত সমস্যায় ইসবগুলের ভুষি খুবই উপকারী। আপনার যদি ডায়রিয়া হয়ে থাকে তাহলে দিনে দুবার সাত থেকে ১০ গ্রাম ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন। কারণ ডায়রিয়া রোগীকে এসব গুলোর ভুসির শরবত খাওয়ালে মিলবে উপকারিতা। ডায়রিয়া থেকে সুরক্ষার জন্য স্বাস্থ্য সচেতন মানুষেরা সবসময় ইসবগুলের ভুষির শরবত খান।
আমাশয় থেকে রক্ষা করে
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাশয় এর জীবাণুকে নষ্ট করতে পারেনা ইসবগুলের ভুষি। তবে আমাশয় এর জীবাণু পেট থেকে বের করে দিতে সক্ষম ইসবগুলের ভুষি।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
পাকস্থলীর যেকোনো সমস্যায় ইসবগুলের ভুষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কারণ হজম প্রক্রিয়ায় অস্বাভাবিকতা দূর করতেও ইসবগুলের ভুষি দারুন ভাবে কাজ করে। বিশেষ করে ভাজাপোড়া খাওয়ার কারণে হজমের সমস্যা হয়ে থাকে। এই সময় যদি ইসবগুলের শরবত খাওয়া যায় তাহলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। পাকস্থলী পরিষ্কার রাখতে রোজ সকালে খালি পেটে এটি খেতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে
অতিরিক্ত কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে পাইলসের মতো সমস্যার সৃষ্টি হয়। চিকিৎসকদের মতে পাইলসের রোগীদের সারা বছরই ইসবগুলের ভুসি খাওয়া উচিত। কারণ এটি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এক থেকে দুই চা চামচ ইসবগুলের ভুষি হালকা ঠান্ডা বা হালকা গরম পানিতে আধঘন্টা ভিজিয়ে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কিংবা সকালে খালি পেটে খেয়ে নিলে উপকার পাওয়া যায়।
ওজন কমাতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম
আপনি কি ওজন কমাতে ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই পর্বটি আপনার জন্য। যারা অতিরিক্ত ওজন জনিত সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য হতে পারে ইসবগুলের ভুষি একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। সাধারণত আমরা ইসবগুলের ভুসিকে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যার জন্য চিনে থাকি। তবে এই ভুসি ওজন কমাতেও সাহায্য করতে পারে।
সাধারণত ইসবগুলের ভুষি অন্ত্রের কার্যক্রম মসৃণ করতে সহায়তা করে থাকে। বিদ তবে পুষ্টিবিজ্ঞান বলছে, পেটের নানা ধরনের সমস্যা ছাড়াও ওজন কমাতে ইসবগুলের ভুষির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেই এসব গুলোর ভুষির মাধ্যমে কিভাবে ওজন কমানো যায়।
- মানুষের শরীরের জন্য আঁশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। আর ইসবগুলের ভুষিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আশ। এতে রয়েছে দ্রাব্য এবং অদ্রাব্য দুই ধরনের আঁস থাকে। যার কারণে অন্ত্রের কাজ মসৃণ হয়। যা ওজন কমাতে সহায়তা করে থাকে।
- ইসবগুলের ভুষিতে ক্যালরির পরিমাণ একেবারেই কম যার কারণে ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এই উপাদানটি। পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতি 2 টেবিল চামচ ভুসিতে মাত্র ৩২ ক্যালোরি থাকে।
- ইসবগুলের ভুষি পানিতে মেশালে এর প্রকৃত আকারের ১০ গুন বেশি হারে ফুলে ওঠে। যার কারণে পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা থাকে। যার ফলে খুধাও কম লাগে।
- অন্ত্র ও পাকস্থলীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে ইসবগুলের ভুষি। কারণ এটি খাওয়ার ফলে মলাশয় পরিষ্কার রাখে। অন্ত্র ও পাকস্থলী সুস্থ থাকার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে।
- মহাশয় পরিষ্কার রাখার ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। যার কারণে স্বাভাবিকভাবেই দেহের কার্যক্রম বৃদ্ধিতে শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা
ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার উপকারিতা অনেকেই জানে আবার অনেকেই জানে না। কারণ আমরা বাঙালিরা শুধুমাত্র কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা সম্পর্কে জানি। কিন্তু এর বাইরেও যে ইসবগুলের ভুষি অনেক রোগের ঔষধ হিসেবে কাজ করে সেটা সম্পর্কে অনেকেই অজ্ঞ।
আজ আমরা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে এসব গুলোর ভুষির উপকারিতা সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব। আশা করছি আপনারা বিষয়গুলো জানার পর অনেক উপকৃত হবেন।
প্রোবায়োটিক হিসেবে ব্যবহার
ইসবগুলের ভুসি প্রোবায়োটিক হিসেবেও কাজ করে। অর্থাৎ লুজ মোশনের (পাতলা পায়খানা) সময় ইসবগুলের ভুষি প্রোবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। ২ চা চামচ ইসবগুলের ভুষি ১৫ মিলিলিটার টক দই এর সাথে মিশিয়ে খাবারের পরে খেতে পারেন।
এরপর পুরো এক গ্লাস পানি খেয়ে নিতে হবে। দিনে এই মিশ্রণটি দুইবার খেতে পারেন। এই মিশ্রণটি ডায়রিয়াজনিত রোগে প্রোবায়োটিক হিসেবে কাজ করবে। অর্থাৎ এটি আপনার পাতলা পায়খানা সারাতে সাহায্য করবে।
প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া দূর করে
অনেক মানুষ রয়েছে যাদের প্রস্রাবে জ্বালাপোড়ার সমস্যা রয়েছে। এই ধরনের মানুষের ক্ষেত্রে উপকারী একটি খাবার হল ইসবগুলের ভুষি। আপনি যদি নিয়মিত ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার অভ্যাস করে তোলেন তাহলে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়ার সমস্যা অনেকটা কমে যাবে।
এক্ষেত্রে আপনাকে আখের গুড়ের সঙ্গে ইসবগুলের ভুষি মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন। এই মিশ্রণটি আপনি সকালে ও বিকেলে খেতে পারেন। এভাবে যদি আপনি সাত দিন খান তাহলেই আপনি পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সাধারণ মনে হলেও এটি কিন্তু সাধারণ নয়। কারণ দীর্ঘদিন যাবত কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগতে থাকলে পরবর্তীতে শরীরের নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিবে। যার ফলে আপনার স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হবে। আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আজ থেকে ইসবগুলের ভুসি খাওয়া শুরু করে দিন।
কারণ ইসবগুলের ভুষি পাকস্থলীতে গিয়ে ভেতরের সব বর্জ্য বের করে দিতে সাহায্য করে। এর জন্য প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে দুই চা চামচ ইসবগুলের ভুষি মিশিয়ে খেয়ে নিন। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করবে।
হার্ট ভালো রাখে
ইসবগুলের ভুষিতে থাকা খাদ্য আঁশ কোলেস্টরেলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। এই উপাদানটি পাকস্থলীর দেয়ালে এক ধরনের পাতলা স্তর সৃষ্টি করে। যা খাদ্য হতে কোলেস্টরল শোষণে বাধা দেয়। বিশেষ করে রক্তের সিরাম কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
এছাড়াও শরীরে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল সরিয়ে দিতে ইসবগুলের ভুষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যার কারণে ধমনিতে ব্লক সৃষ্টির ভয় অনেকাংশে কমে যায়। তাই আপনার হার্ট ভালো রাখার জন্য নিয়মিত ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
গ্যাস্ট্রিক দূর করে
সাধারণত গ্যাস্ট্রিক জনিত সমস্যায় অধিকাংশ মানুষই কুপোকাত। কারণ অধিকাংশ মানুষেরই রয়েছে ভুলভাল খাদ্যাভ্যাস। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার অন্যতম ঘরোয়া উপায় হতে পারে ইসবগুলের ভুসি খাওয়া। যা পাকস্থলীর ভেতরে দেয়ালে প্রতিরক্ষামূলক স্তর তৈরি করে। যার কারণে গ্যাস্ট্রিকের যন্ত্রণা থেকে পাকস্থলীকে রক্ষা করা যায়।
ইসবগুলের ভুষি হজম ঠিক রাখার জন্য পাকস্থলীর বিভিন্ন এসিড নিঃসরণে সাহায্য করে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য এক গ্লাস ঠান্ডা পানিতে এক থেকে দুই চা চামচ ইসবগুলের ভুষি মিশিয়ে খান। এভাবে যদি নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করেন তাহলে গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হবে।
ইসবগুলের ভুসি উপকারিতা ও অপকারিতা
ইসবগুলের ভুষি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। আপনি যদি এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারবেন। ইসবগুলের ভুষি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। বর্তমান সময়ে অধিকাংশ মানুষই পেটের নানা ধরনের সমস্যায় ভুগে থাকেন।
পেটের সমস্যা থেকে শুরু করে বেশ কিছু জটিল রোগের সমাধান হিসেবে কাজ করে এই ইসবগুলের ভুষি। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন করার ফলে এর কিছু অপকারিতা রয়েছে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে ইসুবগুলের ভুষির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।
ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা
উপরে উল্লেখিত একটি পর্বে ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তবে ইসবগুলের ভুষির অনেক উপকারিতা রয়েছে। চলুন তাহলে জেনে নেই ইসবগুলের ভুষির আরো কিছু উপকারিতা সম্পর্কে।
আইবিএস সমস্যা দূর করে
আপনারা হয়তো জানেন আইবিএস রোগীদের সাধারণত অল্টারড হয়। রেগুলার পায়খানা কখনো লুজমোশন বা পাতলা আবার কখনো কনস্টিপেশন বা কষা হয়ে থাকে। তাই আইবিএস রোগীদের ক্ষেত্রে ডাক্তাররা ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার পরামর্শ দেন। আপনি যদি আইবিএস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে নিয়মিত ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন।
বাতের ব্যথা দূর করতে
অনেকের ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধিজনিত বাতের ব্যথা রয়েছে। আপনার যদি এ ধরনের সমস্যা বা বাতের ব্যথা থেকে থাকে তাহলে নিশ্চিন্তে ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন। বেশ ভালো উপকার পাবেন। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েডের সমস্যা তে ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন।
এইসব সমস্যার জন্য যদি আপনি কোন ঔষধ সেবন করেন তাহলে ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার আগে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য ইসবগুলের ভুষি বেশ উপকারী। সুগার নিয়ন্ত্রণে ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিসের খাবারে ইসবগুল যোগ করলে খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কমিয়ে দেয়।
ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিসের খাবারগুলো অনেক আছে ডায়াবেটিস ফ্রেন্ডলি হয়ে যায়। আপনার ডক্টরের সাথে কথা বলে ইসবগুলের ভুষি খাওয়া শুরু করতে পারেন।
কোলেস্ট্ররেল নিয়ন্ত্রণ করে
কোলেস্টেরল বাড়লে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। কোলেস্টরেল যদি অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে যায় তাহলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মতো ভয়াবহ রোগ গুলো শরীরে বাসা বাঁধে। সমস্যা থেকে দূরে থাকতে হলে আপনি ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন।
ইসবগুলের ভুষিতে থাকা ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার খারাপ কোলেস্ট্রল এলডিএল কমাতে সাহায্য করবে এবং ভালো কোলেস্ট্রল এইচডি এল বাড়াতে সাহায্য করবে। ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রার সাম্য থাকবে।
পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা দূর
আপনার যদি পরিপাক তন্ত্রের সমস্যা থেকে থাকে। কোন কিছু হজম হতে দেরি হয় বা পরিপাকতন্ত্র ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। তাহলে দুই চা চামচ ইসবগুলের সাথে তিন চা চামচ দই মিশিয়ে দুই তিন ঘণ্টা পর পর আপনি নিয়মিত মিশ্রণটি খেতে পারেন।
এই পদ্ধতিতে আপনি ইসবগুলের ভুষির সাথে দই মিশিয়ে খান। তাহলে আপনার পরিপাকতন্ত্রের ফাইবার প্রোবায়োটিক বা আপনার পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ ও সক্রিয় রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।
ইসবগুলের ভুষির অপকারিতা
ইসবগুলের ভুষি যেমন আমাদের শরীরের জন্য উপকারী তেমনি ইসবগুলের ভুষির অপকারিতাও রয়েছে। আপনি যদি প্রথম পর্যায়ে ইসবগুলের ভুষি খাওয়া শুরু করেন তাহলে বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করা জরুরি।
প্রথম পর্যায়ে যদি কেউ ইসবগুলের ভুষি অতিরিক্ত পরিমাণে খেয়ে ফেলে তাহলে নিচে উল্লেখিত সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। তাই অবশ্যই ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা জানার পাশাপাশি অপকারিতা গুলোও জানা জরুরী।
- ক্র্যাম্প সৃষ্টি হওয়া
- বমি বমি ভাব হওয়া
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়
- ডায়রিয়ার ব্যাঘাত ঘটে
- কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়
- পেটে ব্যথা হওয়া
- হারাকনো ভাব সৃষ্টি হয়
এছাড়াও ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার পরে যদি এলার্জিজনিত সমস্যা দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়াও এসব গুলার ভুষির আরো কিছু বিরল ঝুঁকি রয়েছে তা হল-
- শ্বাসকার্যের সমস্যা সৃষ্টি হওয়া
- বিশেষ করে গলায় এবং মুখ ফুলে যেতে পারে
- চুলকানি হওয়া ও চামড়ার মধ্যে লাল লাল ফুসকুড়ি দেখা দেওয়া
- এছাড়াও বমি বমি ভাব।
রাতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা
রাতে ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার উপকারিতা অনেকেই জানতে চান। আজ এই পর্বটি তাদের জন্যই সাজানো। ইসবগুলের ভুষি মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এতক্ষণ হয়তো আপনি আর্টিকেলটি পড়ে জানতে পেরেছেন এর উপকারিতার কথা। তবে এখন আমি জানাবো রাতে ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
আপনি যদি অতিরিক্ত কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আপনি এক গ্লাস কুসুম গরম পানি অথবা কুসুম গরম দুধের সাথে এক থেকে দুই চা চামচ ইসবগুলের ভুষি ভালোভাবে মিশিয়ে খেয়ে নিন। তাহলে সকালে দেখতে পাবেন আপনার পেট ক্লিয়ার হয়ে গেছে।
কারণ পাকস্থলী পরিষ্কার রাখতে ইসবগুলের ভুষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পেটের যে কোন সমস্যায় ইসবগুলের ভুষি খাওয়া যেতে পারে। কারণ কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে শুরু করে ডায়রিয়া সব সমস্যায় ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা রয়েছে। তবে এগুলো খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে।
কোষ্ঠকাঠিন্যের ক্ষেত্রে এক ভাবে এবং ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে অন্যভাবে ইসবগুলের ভুষি খেতে হবে। আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য ইসবগুলের ভুষি খান তাহলে তা এক গ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।এ ছারাও আপনি যদি ডায়রিয়ার জন্য ইসবগুলের ভুসি খেতে চান তাহলে টক দই এর সাথে মিশিয়ে খেতে হব।তবে দুটি সমস্যার জন্যই ১-২ চামচের বেশি খাবেন না।
ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম
ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। এই দুইটি উপাদানই আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তবে এই দুইটি খাওয়ার মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। আমরা জানি ইসুবগুলের ভুষি সাধারণত আমরা পানির সাথে মিশিয়ে সাথে সাথে খেয়ে নেই।
তবে তোকমা দানা পানির সাথে মিশিয়ে সাথে সাথে খাওয়া যায় না। চলুন তাহলে জেনে নেই ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার নিয়ম
সাধারণত কম-বেশি সকলেই ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানে। তবুও যারা জানে না তাদের জন্য আমি এই নিয়মটি উল্লেখ করছি। সাধারণত সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি অথবা হালকা ঠান্ডা পানির সাথে এক থেকে দুই চা চামচ ইসবগুলের ভুষি মিশিয়ে সাথে সাথে খেয়ে নিতে হবে।
আপনি চাইলে সকালে এবং রাতে এভাবে খেতে পারে। তবে রাতে খাওয়ার ক্ষেত্রে খাবারের ৩০ মিনিট পর আপনি এই পানীয়টি খেতে পারেন। তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্যসহ বেশ কিছু সমস্যা থেকে খুব সহজেই মুক্ত থাকবেন।
তোকমা খাওয়ার নিয়ম
আপনারা অনেকেই আছেন যারা তোকমা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানেন। আবার অনেকেই আছেন যারা জানেন না। যারা জানেন না তাদের জন্য বলব তোকমা অনেক ভারী খাবার। তাই এগুলো ভরা পেটে খেলে পেট ভারী হতে পারে। সব সময় চেষ্টা করবেন পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ রেখে তোকমা খাওয়ার।তোকমা সাধারনত পেটকে ঠান্ডা রাখতে ও ক্ষুধা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
সকালে খাবার আগে অথবা দুপুরের আগে কোন এক সময় খেতে পারেন। তবে অবশ্যই তোকমা ভিজিয়ে রেখে ফুলে ওঠার পর খাবেন। আপনি চাইলে তোকমা দানা যেকোনো ডেজার্ট এর সাথেও খেতে পারেন।সাধারনত রোজাতে বিভিন্ন ডেজার্টে তোকমা ব্যাবহার করা হয়।
লেখকের মন্তব্য - ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা কোষ্ঠকাঠিন্য ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম,খালি পেটে ইসবগুলের ভুসি খেলে কি হয়,ওজন কমাতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম,ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা,
ইসবগুলের ভুসি উপকারিতা ও অপকারিতা,ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা,ইসবগুলের ভুষির অপকারিতা,রাতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন। চেষ্টা করব আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী আরো নতুন নতুন আর্টিকেল উপস্থাপন করার।
প্রতিদিন নিত্যনতুন ও তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখুন। আপনার কোন মতামত বা পরামর্শ থাকলে নিচে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url