মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান - মেট্রোরেল রচনা hsc ২০২৪

শেখ রাসেল রচনামেট্রোরেল রচনাটি বর্তমান সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার জন্য এই রচনাটি সম্পর্কে জানা থাকা জরুরি। আজ আমরা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে জানব মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান - মেট্রোরেল রচনা hsc ২০২৪।
মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান - মেট্রোরেল রচনা hsc ২০২৪
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে নির্মিত হচ্ছে স্বপ্নের মেট্রোরেল। মেট্রোরেল তৈরি করার উদ্দেশ্য হলো যানজট নিরসন। যেহেতু ঢাকায় অতিরিক্ত যানজট হয় সেক্ষেত্রে মেট্রোরেল চালু হলে এই যানজট অনেকাংশে কমিয়ে আনা যাবে।

পোস্ট সূচীপত্রঃচলুন তাহলে আর দেরি না করে মেট্রোরেল রচনা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান - ভূমিকা

বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে মেট্রোরেল অনেক আগে থেকেই আছে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। যার কারণে বাংলাদেশ সরকার যানজট কমিয়ে আনতে মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্যোগ নেন। এই মেট্রোরেল নির্মাণ করা বড় চ্যালেঞ্জ হলেও প্রকল্পটি শেষ করার জন্য সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল। 

আজ এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে মেট্রোরেল সম্পর্কে যে বিষয়গুলো জানতে পারবো তা হলো মেট্রোরেল রচনা hsc ২০২৪,মেট্রোরেল সম্পর্কে ১৫ টি বাক্য,মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান,মেট্রোরেল অনুচ্ছেদ ২০২৪ সম্পর্কে। বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

মেট্রোরেল রচনা hsc ২০২৪

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আজ এই পর্বে মেট্রোরেল রচনা hsc ২০২৪ সম্পর্কে আলোচনা করব। গুরুত্বপূর্ণ এই রচনাটিতে অযথা কোন পয়েন্ট বা লাইন যোগ করা হয়নি। যা পরীক্ষার সময় ভালো নাম্বার পেতে সাহায্য করবে।

ভূমিকা
বর্তমান সরকারের গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং মেগা প্রকল্প গুলোর মধ্যে ঢাকা মেট্রোরেল অন্যতম। সারা বিশ্বের জনবহুল মেগাসিটি গুলোর মধ্যে ঢাকা অত্যাধিক ঘনবসতিপূর্ণ শহর। বর্তমানে ঢাকা শহরে প্রায় দেড় কোটি লোক সংখ্যা বসবাস করে। অত্যাধিক লোক বসবাস করার কারণে প্রতিনিয়তই ঢাকায় ভয়াবহ যানজট দেখা দেয়। 
এই ভয়াবহ যানজট ও ট্রাফিক সমস্যা দূর করার জন্য এই মেট্রোরেল প্রকল্প একটি সময়োচিত ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকার বিপুল সংখ্যক যাত্রী ও যানবাহনের চাপ সামাল দিতে মেট্রোরেলের মতো গণপরিবহনই হতে পারে একটি কার্যকর বিকল্প ব্যবস্থা। যে কারণে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ও আধুনিকায়ন যানজট নিরসনে মেট্রোরেল ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

মেট্রোরেল কি
মেট্রোরেল হল মেট্রোপলিটন রেল-এর সংক্ষিপ্ত রূপ। মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো স্পর্শ করে গণপরিবহনের জন্য প্রতিষ্ঠিত রেল ব্যবস্থায় মেট্রোরেল। মেট্রোরেল হল বিদ্যুৎ চালিত পরিবহন।ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট হল ঢাকা মেট্রো রেল ব্যবস্থার প্রকল্পের নাম। মেট্রোরেল হল অতি দ্রুতগামী, সুবিধাজন, ক স্বাচ্ছন্দ্যময় ও নিরাপদ নগরকেন্দ্রিক রেল ব্যবস্থা।

মেট্রোরেলের গুরুত্ব
অতিরিক্ত জনবহুল হওয়ায় যানজটের শহর নামে বিশেষ পরিচিত হলো ঢাকা। এই শহরটিতে প্রতিনিয়তই যানজট লেগে থাকে। রাজধানী ঢাকা শহরে প্রতিনিয়ত প্রায় কয়েক লাখ যানবাহন যেমন বাস, ট্রাক, অটোরিকশা, কার, বাইক ও রিক্সা ইত্যাদি যানবাহন প্রতিনিয়ত চলতে থাকে। যার ফলে প্রচুর পরিমাণে যানজট সৃষ্টি হয়। 

অনেক সময় তো দেখা যায় দুই থেকে তিন ঘন্টা আগে রওনা দিয়েও ৩০ মিনিটের রাস্তায় পৌঁছানো মুশকিল হয়ে যায়। সঠিক সময় সঠিক জায়গায় পৌঁছানো অনেক সময় কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। অতিরিক্ত যানজটের কারণে যাত্রীদের অনেক সময় নাকানি চুবানি খেতে হয়। 

এইসব কথা চিন্তা করে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ সরকার বেশ কয়েকটি উড়াল সেতু, আন্ডার পাস, ওভারব্রিজ, লিংক রোড ইত্যাদি নির্মাণ করেছে। তবুও যানজট খুব একটা নিরসন হয়নি। যার কারণে দেখা যায় অফিসগামী মানুষ এবং স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা বাসের জন্য লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় সিএনজি বা রিকশা চালকদের হাতেও জিম্মি হতে হয় । 

এছাড়াও যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন ঝড়-বৃষ্টি ও মানব সৃষ্ট হরতালের সময় মানুষের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। এমন অবস্থায় মেট্রোরেল চালু হওয়ার ফলে মানুষের সময়ের অপচয় কম হচ্ছে এবং নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো সহজ হয়ে যাচ্ছে।

মেট্রোরেলের সুযোগ সুবিধা
বাংলাদেশে যে সাধারণ ট্রেনগুলো রয়েছে সেই ট্রেনগুলোর থেকে অধিকতর আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে এই মেট্রোরেলে। চলুন তাহলে জেনে নেই মেট্রোরেলের সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে।

উড়াল সড়ক: মূল সড়কের মাছ বরাবর উড়াল সড়ক নির্মিত হবে। উড়াল সড়কের উপর স্থাপিত রেল লাইনের উপর দিয়ে চলবে ট্রেন। যানজট যাতে না হয় সেভাবেই উড়াল সড়ক তৈরীর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য: রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য হবে ২০.০১ কিলোমিটার। এই দীর্ঘ রূটে ১৭ টি স্টেশন আছে। এগুলোর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত আছে নয়টি স্টেশন। দ্বিতীয় পর্যায়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত থাকবে ৮টি স্টেশন।

বগি ও কামরা: প্রতিটি ট্রেনে রয়েছে ছয়টি করে বগি। প্রতিটি কামরায় সুপরিসর। সেখানে যাত্রীদের জন্য আছে আরামদায়ক আসন। এছাড়াও প্রতিটি কামরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।

ট্রেন সংখ্যা ও সময়: উত্তরা থেকে মতিঝিল রুটে চলাচল করে ১৪ টি ট্রেন। প্রতিটি ট্রেনে ৯৪২ জন যাত্রী বসে এবং ৭৫৪ জন যাত্রী দাঁড়িয়ে যাতায়াত করতে পারে। প্রতি চার মিনিট পরপর ট্রেন ছেড়ে যাবে। ট্রেনের গতি ঘন্টায় ৩২ কিলোমিটার। শেষ গন্তব্যে পৌঁছতে ট্রেনের সময় লাগে ৩৮ মিনিট। প্রতি স্টেশনে ট্রেন অবস্থান করবে ৪০ সেকেন্ড করে।

যাত্রী বহন ক্ষমতা ও ভাড়া আদায়: মেট্রোরেলে ২৪ টি ট্রেন প্রতি ঘন্টায় আপ ও ডাউন রুটে দুই প্রান্তের ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করতে সক্ষম । মেট্রোলের ভাড়া জনপ্রতিনি নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কিলোমিটার ৫ টাকা। সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। মেট্রোরেল ব্যবস্থায় যাত্রীদের সুবিধার্থে স্টেশনে প্রবেশের সময় মেশিনে ভাড়া গ্রহণ করা হয়। স্বয়ংক্রিয় কার্ডের মাধ্যমে ভাড়া পরিষদ করেন যাত্রীরা।

প্রকল্প ব্যয় ও অর্থায়ন
পুরো ২০.০১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মেট্রোরেল বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে জাইকা প্রকল্পের ৮৫ শতাংশের প্রায় বাবদ ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা দেবে কয়েক ধাপে। 

বাকি পাঁচ হাজার চার কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ১.১৬ কিলোমিটার বাড়ানোর কারণে প্রকল্প ১১ হাজার ৪৮৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।

নির্মাণ কাজের অগ্রগতি
২০২৪ সালের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের পর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত যাত্রী চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ২০২৩ সালের মধ্যে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এবং ২০২৪ সালের মধ্যে কমলাপুর পর্যন্ত শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে দ্রুত কাজ এগিয়ে চলছে।

গতিশীল অর্থনীতি ও সহজ যাতায়াত
বর্তমানের মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে ডিটিসিএ এর তত্ত্বাবধানে এবং অধ্যায়ন করছে বাংলাদেশ সরকার ও জাইকা। যথাসময়ে প্রকল্পের সমাপ্তিতে যাত্রী পরিবহন শুরু হলে মেট্রোরেল অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে গতিশীল করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। সরকার এই প্রকল্প থেকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবে এবং জিডিপি বৃদ্ধি পাবে। 

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ অভিমত বাস্তবসম্মত ও তাৎপর্যপূর্ণ। এছাড়া মেট্রোরেলের স্বস্তিদায়ক সেবার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ স্বাচ্ছন্দে ও নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে। বিশেষ করে বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী, নারী ও শিশুরা দুর্বিসহ কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে।

উপসংহার
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হবে। মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো একধাপ এগিয়ে গেল। ২০২৪ সালের মধ্যে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এটি হবে একটি মাইলফলক। 

এর মধ্যে দিয়ে দেশের মানুষের অর্থ আর সময়ের অপচয় বন্ধ হবে। মানুষ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে খুব সহজে।

মেট্রোরেল সম্পর্কে ১৫ টি বাক্য

এই পর্বে মেট্রোরেল সম্পর্কে ১৫ টি বাক্য উপস্থাপন করা হবে। অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে যারা মেট্রোরেল সম্পর্কে বাক্য রচনা করতে চায়। তাদের জন্য এই পর্বটি সাজানো। আশা করছি বাক্য রচনা গুলো পড়লে আপনারা উপকৃত হবেন।

১. মেট্রোরেলের নির্মিত রুট হল উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত।
২. মেট্রোরেল নির্মাণের অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ সরকার ও জাইকা (জাপান)।
৩. মেট্রো রেলের দৈর্ঘ্য ২০.১০ কিলোমিটার।
৪. মেট্রোরেল নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল ২০১৩ সালে।
৫. মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয় ২৬ জুন ২০১৬ সালে।
৬. মেট্রোরেল পরীক্ষামুলক ভাবে প্রথম চালানো হয় ১১ মে ২০২১ সালে।
৭. মেট্রোরেল চালানোর জন্য ঘন্টায় ১৩.৪৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লাগবে।
৮. ঢাকা মেট্রোরেলের ব্যবস্থাকে বলা হয় ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট।
৯. মেট্রোরেলের পরিচালনা ব্যবস্থার নাম কমিউনিকেশন বেজড ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম।
১০. ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্পের বর্তমান দৈর্ঘ্য হলো ২১.২৬ কিলোমিটার।
১১. ঢাকা মেট্রো রেল প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের নাম হলো ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড।
১২. ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্পের পরামর্শ প্রতিষ্ঠানের নাম হলো দিল্লি মেট্রোরেল কর্পোরেশন।
১৩. সংশোধিত প্রকল্পে বর্তমান মেট্রোরেল হবে উত্তরা থেকে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত।
১৪. মেট্রোরেল প্রকল্প প্রথমে ছিল উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত।
১৫. প্রথম ধাপে মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১.৭৩ কিলোমিটার এলাকা চালু হবে।

মেট্রোরেল অনুচ্ছেদ ২০২৪

এই পর্বে আমরা মেট্রোরেল অনুচ্ছেদ ২০২৪ নিয়ে আলোচনা করব। আপনারা অনেকেই আছেন যারা মেট্রোরেল অনুচ্ছেদ সম্পর্কে জানতে চান। অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা বই খুলে অনুচ্ছেদ খোঁজাখুঁজি করা ঝামেলায় যেতে চান না। 

কিন্তু ইন্টারনেটের মাধ্যমে খুব সহজেই সার্চ করে মেট্রোরেল অনুচ্ছেদ পড়েতে চান। তাদের জন্যই এই অনুচ্ছেদটি। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেই মেট্রোরেল অনুচ্ছেদ ২০২৪ সম্পর্কে।

মেট্রোরেল প্রকল্প

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ভয়াবহ যানজট ও ট্রাফিক সমস্যা দূর করার জন্য মেট্রোরেল প্রকল্প একটি সময়োচিত ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ। প্রায় দেড় কোটি জনসংখ্যা অধ্যুসিত ঢাকার বিপুল সংখ্যক যাত্রী ও যানবাহনের চাপ সামাল দিতে মেট্রোরেলের মতো গণপরিবহনী হতে পারে একটি কার্যকর বিকল্প ব্যবস্থা। মেট্রোপলিটন রেলের এর সংক্ষিপ্ত রূপ হল মেট্রোরেল। 

এটি একটি বিদ্যুৎ চালিত পরিবহন।উড়াল সড়কের ওপর স্থাপিত রেল লাইনের উপর দিয়ে চলবে অধিকতর আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ট্রেন। রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য হবে ২০.০১ কিলোমিটার। এই দীর্ঘ রুটে ১৭ টি স্টেশন থাকবে। এগুলোর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত থাকবে নয়টি স্টেশন। 

প্রতিটি ট্রেনে ছয়টি করে বগী থাকবে। প্রতিটি কামরা হবে সুপরিসর ও সীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। যেখানে যাত্রীদের জন্য থাকবে আরামদায়ক আসন। উত্তরা মতিঝিল রুটে চলাচল করবে ১৪ টি ট্রেন। প্রতিটি ট্রেনে ৯৪২ জন যাত্রী বসে এবং ৫৭৪ জন যাত্রী দাঁড়িয়ে যাতায়াত করতে পারবে। ঘন্টায় ৩২ কিলোমিটার গতিতে শেষ গন্তব্যে পৌঁছাতে ট্রেনের সময় লাগবে ৩৮ মিনিট। 

স্বয়ংপ্রিয় কার্ডের মাধ্যমে যাত্রীরা ভাড়া পরিশোধ করবে। ২০২৪ সালের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত কাজ শেষ করার নতুন লক্ষ্যমাত্র নির্ধারিত হয়েছে। মেট্রোরেলের তিনটি পর্যায় চালু হলে রাজধানীর মানুষের সময়, অর্থ ও কাজের অপচয় বন্ধ হবে।

মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান

অনেকেই মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান মূলক প্রশ্ন জানতে চাই। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি চাকরি পরীক্ষায় মেট্রোরেল সম্পর্কে বিভিন্ন সাধারণ জ্ঞানমূলক প্রশ্ন এসে থাকে। তাই আপনাদের সুবিধার জন্য এই আর্টিকেলের মাধ্যমে বেশ কিছু মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞানমূলক প্রশ্ন তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। 

আশা করছি আপনারা যদি মনোযোগ সহকারে প্রশ্নগুলোর উত্তর জেনে রাখেন তাহলে পরবর্তীতে আপনাদের কাজে আসবে। তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক মেট্রো রেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান।

বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের উদ্বোধন করা হয় কবে?
উত্তর: 28 ডিসেম্বর ২০২২ সালে।

ঢাকা মেট্রো রেলের ব্যবস্থাকে কি বলা হয়?
উত্তর: ম্যাস রেপিড ট্রানজিট।

মেট্রো রেলের পরিচালনা ব্যবস্থার নাম কি?
উত্তর: কমিউনিকেশন বেজড ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম।
মেট্রোরেলের অর্থায়ন করেছে কোন বিদেশি সংস্থা?
উত্তর: জাইকা (জাপান)।

মেট্রোরেল প্রকল্পের মোট ব্যয় কত?
উত্তর: ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।

ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করা হয় কবে?
উত্তর: ২৬ জুন ২০১৬ সালে।

প্রথম দফায় ঢাকা মেট্রো রেল বা এমআরপি-৬ লাইনের দৈর্ঘ্য কত ছিল?
উত্তর: ২০.১০ কিলোমিটার।

ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন কারী প্রতিষ্ঠানের নাম কি?
উত্তর: ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড।

ঢাকা মেট্রো রেল প্রকল্পের পরামর্শ প্রতিষ্ঠানের নাম কি?
উত্তর: দিল্লি মেট্রো রেল কর্পোরেশন।

ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্পের বর্তমান দৈর্ঘ্য কত?
উত্তর: ২১.২৬ কিলোমিটার।

মেট্রোরেলের রেলস্টেশন সংখ্যা প্রথমে কত ছিল?
উত্তর: ১৬টি

সংশোধিত প্রকল্পে বর্তমানে স্টেশনের সংখ্যা কত?
উত্তর: ১৭ টি।

মেট্রো রেল প্রকল্পের সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদিত হয় কবে?
উত্তর: ১৯ জুলাই ২০২২ সাল।

মেট্রোরেল সর্বোচ্চ পরিকল্পিত গতি কত?
উত্তর: ১০০ কিলোমিটার/ঘন্টা

মেট্রোরেল প্রকল্প প্রথমে কোথায় ছিল?
উত্তর: উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত।

মেট্রো রেল প্রকল্পের নতুন করে দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেয়েছে কত কিলোমিটার?
উত্তর: ১. ১৬ কিলোমিটার।

মেট্রোরেল প্রকল্পে অর্থায়ন করছে কোন প্রতিষ্ঠান?
উত্তর: জিইকা (৭৫%) ও বাংলাদেশ সরকার।

মেট্রোরেল প্রকল্পের প্রথম ব্যয় ধরা হয়েছিল কত টাকা?
উত্তর: ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা।

সংশোধনের পর মেট্রোরেল প্রকল্পের নতুন ব্যয় কত টাকা?
উত্তর: ৩৩ হাজার ৪৭১.৯৯ কোটি টাকা।

মেট্রোরেল প্রকল্পে জাইকা কত টাকা দেয়?
উত্তর: ১৯ হাজার ৭১৮. ৪৭ কোটি টাকা।

এমআরটি লাইন-৬ মেট্রোরেল প্রকল্প একনেক অনুমোদিত হয় কবে?
উত্তর: ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ সাল।

প্রথম ধাপে মেট্রোরেলের কত কিলোমিটার ও কোন এলাকা চালু হয়?
উত্তর: উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১.৭৩ কিলোমিটার।

মিরপুর ১০ স্টেশন পর্যন্ত মেট্রো রেলের প্রথম পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হয় কবে?
উত্তর ২৯ নভেম্বর ২০২১ সাল।

মেট্রোরেলের প্রথম নারী চালকের নাম কি?
উত্তর: মরিয়ম আফিজা।

মেট্রোলের প্রথম যাত্রী কে?
উত্তর: শেখ হাসিনা।

মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন সর্বোচ্চ ভাড়া কত?
উত্তর: সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা ও সর্বোচ্চ ভাড়া ১০০ টাকা।

পৃথিবীর প্রথম মেট্রোরেল চালু হয় কোন শহরে?
উত্তর: লন্ডন ১৮৬৩ সাল।

মেট্রোরেল উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক কত টাকা স্মারক নোট মুদ্রণ করেছে?
উত্তর: ৫০ টাকা।

লেখকের মন্তব্য - মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান

প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা মেট্রোরেল রচনা hsc ২০২৪,মেট্রোরেল সম্পর্কে ১৫ টি বাক্য,মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান,মেট্রোরেল অনুচ্ছেদ ২০২৪ সম্পর্কে জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন। 

চেষ্টা করব আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী আরো নতুন নতুন আর্টিকেল আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার। প্রতিদিন নিত্যনতুন ও তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখুন। আপনার কোন মতামত বা পরামর্শ থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url