শীতের সকাল রচনা - একটি শীতের সকাল রচনা class 6
বাংলাদেশের ষড়ঋতু রচনাশীতের সকাল রচনা - একটি শীতের সকাল রচনা class 6 সম্পর্কে অনেক শিক্ষার্থী বন্ধুরা জানতে চাও। আজ তোমাদের সুবিধার্থে এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে শীতের সকাল রচনা সম্পর্কে বেশ কয়েকটি প্রয়োজনীয় পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
শীতের সকাল রচনাটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি রচনা। কারণ অতীতে বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষায় এই রচনাটি এসেছে। তোমরা চাইলে রচনাটি পড়ে ধারণা নিয়ে রাখতে পারো। পরবর্তীতে কোন পরীক্ষায় রচনাটি আসলে আশা করি খুব সুন্দর করে লিখতে পারবে।
পোস্ট সূচিপত্রঃচলো আর দেরি না করে রচনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেই।
শীতের সকাল রচনা - ভূমিকা
পৌষ ও মাঘ এই দুই মাস হলো শীতকাল। তবে এর আগে থেকেই উত্তরের হিমেল হাওয়া জানান দেয় শীত আসছে। বিশেষ করে গ্রামগঞ্জে শীতের আমেজ একটু বেশি। কারণ শহরের কর্মব্যস্ত মানুষের কাছে শীতের গুরুত্ব না থাকলেও গ্রামের কিছু কিছু অসহায় দারিদ্র মানুষের কাছে শীত খুবই দুর্বিষহের ব্যাপার। কারণ তাদের জীবনযাপন তখন খুবই কষ্টদায়ক হয়ে যায়।
আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে শীতের সকাল সম্পর্কে যে বিষয়গুলো জানতে পারবো তা হলো শীতের সকাল রচনা ৭ম শ্রেণী,শীতের সকাল রচনা ২য় শ্রেণী,একটি শীতের সকাল রচনা class 6,শীতের সকাল রচনা ছোট,শীতের সকাল রচনা hsc সম্পর্কে। বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
শীতের সকাল রচনা ৭ম শ্রেণী
এই পর্বে শীতের সকাল রচনা ৭ম শ্রেণীর সম্পর্কে আলোচনা করব। খুব সহজ ও সাবলীল ভাষায় রচনাটি উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি শিক্ষার্থী বন্ধুরা রচনাটি পড়লে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাবেন।
ভূমিকা
বাংলার ঋতু বৈচিত্র্যতার মধ্যে এক সময় মনে হরণকারী শীতের আগমন ঘটে। ঋতু পরিবর্তনের ফলে প্রকৃতিতে যেমন বৈচিত্র আসে তেমনি দিনের প্রত্যেকটা সময়ের একটা আলাদা বৈচিত্র্য আছে। প্রকৃতি দেবীর নিয়ম অনুসারে রাত্রির অলসতা ত্যাগ করে ঘন কুয়াশার চাদর ভেদ করে শীতের সকালের আবির্ভাব ঘটে।
পল্লীর শীতের সকাল
পল্লীগ্রামের মুক্ত অঙ্গনে শীতের সকাল খুবই আরাম প্রদো। কোথাও দৃষ্ট হয় খেজুর রস ফুটিয়ে গুড় তৈরির প্রস্তুতি। আবার কোথাও কিষানদের কাস্তেহাতে মাঠে যাবার পালা। শীতের সকাল যেমনি বেদনাদায়ক তেমনি আরামদায়ক। শীতে কালের সকালে লেপের উষ্ণতা খুবই আরামদায়ক। শীতের সকালে চারিদিক কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে।
ঝড়ে টাপুর টুপুর করে শিশিরের বিন্দু। একটু বেলা বাড়লে কুয়াশা কেটে গিয়ে ঝলমলে আলোয় চারিদিক উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। রোদের মিঠে উষ্ণতা সারা গায়ে মেখে ছোট ছেলেমেয়েরা জটলা করে কিংবা সুর করে পড়া মুখস্ত করে। মাঠে মাঠে দেখা যায় আকর্ষণীয় ফসলের দৃশ্য।
কলাই, মুলা, বেগুন, পালং শাক ও কপি এছাড়াও আরো কত কি। সরষে ক্ষেতের হলুদ ফুল হাওয়ায় দোল এনে দিয়েছে নতুন প্রাণের আবেগ। শুধু সবজি নয় ফুলের বাগানে কিংবা গৃহস্তের আঙ্গিনায় ফুটে উঠেছে অতসী, ডালিয়া, গাধা প্রভৃতি ফুল।
শহরে শীতের সকাল
নগরবাসি শীতবস্ত্রের সম্ভারের শীতের সকাল সজ্জাতেই উদযাপন করছে। গ্রামের খেজুর রসের গন্ধের বদলে শহরবাসী উপভোগ করছে তেলেভাজা, কচুরি সহযোগে চা-কফি। তারপর সকালের অলস্য ছেড়ে সকলেই যে যার মত ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
উপসংহার
শীতের সকালের নিজস্ব রূপ যথার্থভাবে উপভোগ করতে হলে শহরের কোলাহল থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম্য প্রকৃতির অঙ্গনে ফিরে যেতে হবে। বাংলার আকর্ষণীয় এই ঋতুর উজ্জ্বল সকালটি আজও গ্রাম বাংলার বুকে তার অনবদ্য সৌন্দর্য ও মাধুর্যের পচা সাজিয়ে হাতছানি দিয়ে কাছে ডাকছে।
শীতের সকালের সৌন্দর্য শীতের কনকনে শীতলতার দুঃখ ভুলিয়ে দেয়, তাই শীতের সকাল আমাদের কাছে খুবই উপভোগ্য বিষয়।
শীতের সকাল রচনা ২য় শ্রেণী
এই পর্বে শীতের সকাল রচনা ২য় শ্রেণী সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। প্রিয় ছোট্ট বন্ধুদের জন্য আজকের এই পর্বটি সাজানো হয়েছে। খুবই সহজ এবং সাবলীল ভাষায় রচনাটি উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করছি রচনাটি পরলে তোমরা উপকৃত হবে।
ভূমিকা
বছরের প্রতিটি দিন সকাল আসলেও শীতের সকাল অন্যান্য সকালের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ শীতের সকালে কুয়াশা চাদরে মোরা থাকে চারদিক। প্রতিটি সকালে ঘাসের উপরে শিশির জমা দেখতে কতটা ভালো লাগে। এসবের সাথে শীতের সকালে পিঠে পুলিতো রয়েছে। এজন্যই শীতের সকালের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য অন্যান্য সকালে থেকে একটু আলাদা।
গ্রামে শীতের সকাল
খুব ভোরবেলায় চারিদিক কুয়াশা চাদরে ঢেকে যায়। গাছের পাতা থেকে টুপটাপ শব্দের শিশিরের ফোটা ঝরে পড়ে। তারই মধ্যে দু-এক জনকে দেখা যায় আগুন জেলে তাপ পোহাচ্ছে। কেউবা গরু ও লাঙ্গল নিয়ে চলেছে মাঠের দিকে,মুগ,মুসুর বোনার জন্য। আবার কেউ চলেছে খেজুরের রস নিয়ে।
এরপর দেখতে পাওয়া যায় খুব আকাশে থালার মত লাল সূর্য হাজির হয়েছে কুয়াশার চাদর ধীরে ধীরে হালকা হয়ে যায়। দুর্বা ঘাসের ডগায় শিশির বিন্দুতে সূর্যের আলো পড়ে চিকচিক করে ওঠে। দূরে নদীর বুকে পাল তোলা নৌকা ভেসে চলে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।
ধীরে ধীরে সূর্যের তাপ ক্রমশ বাড়তে থাকে এভাবে সূর্যও আকাশের উপরের দিকে উঠতে থাকে। বেলা বাড়তে শীতের প্রকোপ অনেকটা কমে আসে।
শহরে শীতের সকাল
শহরেও শিশির পরে তবে ঘাসের ডগায় নয় বা গাছের পাতায় নয়। শহরের শিশির দেখা যায় পিচ ঢালা রাস্তায়। কুয়াশায় চারিদিক অন্ধকার হয়ে থাকে। গাড়ি ঘোড়ার শব্দে, ট্রামের ঘন্টার শব্দে শহরবাসীর ঘুম ভাঙ্গে। খুব ভোরেই দেখা মেলে খবরের কাগজওয়ালার, দুধ ওয়ালার, এছাড়াও দুই চার জন প্রাত ভ্রমণকারীকে রাস্তায় দেখতে পাওয়া যায়।
এরপর দেখতে দেখতে সূর্য আত্মপ্রকাশ করে। কিন্তু শহরের রোড অলিতে গলিতে প্রবেশের সুযোগ পায় না। বাড়িগুলো বাধা হয়ে দাঁড়ায়, এছাড়াও শহরের কর্মব্যস্ত মানুষ শীতের সকালের রূপ উপভোগ করার সময় পায়না।
উপসংহার
একের পর এক ঋতুগুলো আসে আর যায়। বিভিন্ন ঋতুর সকাল তাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে হাজির হয়। ছয় ঋতুর সৌন্দর্য প্রত্যেক বাঙালি হৃদয়ে গেঁথে থাকে। তবে সবচেয়ে মজার বিষয় হল অন্যান্য সকালের থেকে শীতের সকাল মানুষ অনুভব করে একটু অন্যভাবে।
একটি শীতের সকাল রচনা class 6
এই পর্বে শীতের সকাল রচনা class 6 সম্পর্কে আলোচনা করব। খুব সহজ ও সাবলীল ভাষায় রচনাটি উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি শিক্ষার্থী বন্ধুরা রচনাটি পড়লে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাবেন।
ভূমিকা
ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ । ছয়টি ঋতুই তাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে আসে। তবে এই ছয়টি ঋতুর মধ্যে আমাদের সামনে শীতকাল হাজির হয় সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপে। শীতের সময় উত্তরের হিমেল হাওয়া ও কুয়াশার চাদরে মোড়ানো থাকে সারা দেশ। কিছু কিছু সময় এত কনকনে শীত পড়ে যে সূর্যের মুখ দেখা যায় না।
আরও পড়ুনঃ শেখ রাসেল সম্পর্কে প্রশ্ন-শেখ রাসেল রচনা
তবে শীতের সময় মানুষের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণের বিষয় হয়ে থাকে শীতের সকাল। শীতকালে প্রতিটি শীতের সকালে কুয়াশা চাদরে মোড়ানো থাকে। কুয়াশার ঘন সাদা পর্দা ভেদ করে নবীন সূর্যের আলো পৃথিবীতে উজ্জ্বল্য ছড়াতে পারে না। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় প্রকৃতি ও প্রাণী জগতে শুরু হয় কাপন।
শীতের সকালের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
পোষ ও মাঘ এই দুই মাস শীতকাল হলেও, শীত পড়া শুরু করে এর আগে থেকেই। শীতের সকালে প্রকৃতিকে দেখতে মনে হয় সাদা মেঘে ঢেকে ফেলেছে। কারণ ওই সময় বিশেষ করে সকালবেলায় কুয়াশার চাদরে মোরা থাকে পুরো প্রকৃতি। উত্তরের হিমেল হাওয়া শরীরে কাঁপন তুলে দেয়। হাওয়া এতোটাই ঠান্ডা থাকে যে গরম পোশাক ছাড়া থাকা অসম্ভব হয়ে যায়।
সকাল বেলায় যখন চারদিকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায় তখন শীতের সকাল দেখতে অপূর্ব সুন্দর লাগে। বিশেষ করে গ্রামে গেলে শীতের সকালে খেজুরের রস খাওয়ার মজাটাই অন্যরকম। গ্রাম অঞ্চলে সকালবেলায় খেজুর গাছে দেখা যায় হাড়ি বাঁধা। সারারাত জমে সেই হাড়িতে খেজুরের রস।
সকালবেলা সেই খেজুরের রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করা হয়। শীতের সময় খেজুরের গুড় দিয়ে নানা ধরনের পিঠাপুলি তৈরি করা হয়। শীতের সকালের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল বাড়ির আঙিনায় বসে পিঠা খাওয়া।
শহরে শীতের সকাল
শহরের শীতের সকাল গ্রামের তুলনায় অনেকটা ভিন্ন অঙ্গিকেই কাটে। শীতের সকালটা শহর বাসি তেমন একটা উপভোগ করতে পারে না। কারণ তাদের ঘুম ভাঙ্গে অনেক দেরি করে। এছাড়াও যারা সকাল-সকাল ঘুম থেকে ওঠে তারা শুধুমাত্র জীবিকার তাগিদে তাদের কাজকর্মে চলে যায়।
শীতের সকালে শহরবাসীর ঘুম বিভিন্ন পাখির কলরবে না ভাঙলেও, ভাঙে কাকের ডাকে। অধিকাংশ মানুষ দেখা যায় ঘুমের মধ্যে অনেকটা সকাল কাটিয়ে দেয়। এছাড়াও যারা কর্মমুখী মানুষ রয়েছে তারা ছুটির দিনে অনেক বেলা অব্দি ঘুমায়। যে কারণে শহরের লোকেরা গ্রামের মানুষের মত শীতের সকাল উপভোগ করতে পারে না।
এছাড়াও গ্রামে যেমন শিশির ভেজা ঘাসের ছোঁয়ায় পথিকের মন আন্দোলিত হয় । যা শহরের মানুষের উপভোগ করা প্রায় অসম্ভব। শীতের সকালে উঠে কনকনে ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুতে ইচ্ছে করে না বড়দেরও।
ছোটরা তো ঠান্ডা পানিতে ভয় পালায় পালায় করে। শহরের মানুষদের সূর্যোদয় দেখা, সূর্যাস্ত দেখা, শীতের সকালের কুয়াশা দেখার মন মানসিকতা একেবারেই নেই। যান্ত্রিক জীবনে যারা অভ্যাস তো তাদের কাছে ওসব হল আবেগের ব্যাপার।
গ্রামের শীতের সকাল
তে সকাল উপভোগ করতে হলে অবশ্যই গ্রামে যেতে হবে। কারণ গ্রামগঞ্জে শীতের সকালের সৃষ্টি হয় অদ্ভুত পূর্ব দৃশ্য। এই দৃশ্য না দেখলে কেউ বুঝতে পারবে না শীতের সকাল এতটা মধুর হয়। গ্রামগঞ্জে দেখা যায় শীতের সময় প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি চাষ হয়। যা অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। শীতের সকালে পাওয়া যায় টাটকা খেজুরের রস।
প্রায় সকল গৃহস্থ বাড়িতেই সকালবেলায় ভাপা পিঠা থেকে শুরু করে নানা ধরনের পিঠাপুলি তৈরি করা হয়। এছাড়াও সকালে ঘুম থেকে উঠে চারিদিকের কুয়াশা মোরা দৃশ্য দেখতে খুবই মনোরম লাগে। এই দৃশ্য এতটাই সুন্দর হয় যে গ্রামের প্রকৃতি যেন কুয়াশা চাদরে ঢেকে যায়।
শীতের সকালে এতটা কুয়াশার মধ্যেও কৃষকেরা কাস্তে হাতে জমিতে যায়। জেলেরা মাছ ধরার জন্য নদীতে যায়। এছাড়া অন্যান্য কর্মজীবীরা তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য তাদের নিজ নিজ কাজে যায়।
শীতের সকালের প্রধান আকর্ষণ
শিত আসলেই সবার মনে একটাই কথা থাকে সেটা হল পিঠে পুলির উৎসব। কারণ শীত শুরু হতে না হতেই বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায় পিঠে পুলির উৎসব শুরু হয়ে যায়। গ্রাম গঞ্জ থেকে শুরু করে শহর প্রায় সব জায়গাতেই এই উৎসব আনন্দের সাথে পালন করা হয়। গ্রামে তো প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই শীতের প্রায় প্রতিটি দিনই পিঠে তৈরি করা হয়।
বিশেষ করে সকালবেলায় ভাপা পিঠার মম গন্ধ যেন সবাইকে মুগ্ধ করে দেয়। শীতের সময় গ্রামে প্রচুর পরিমাণে খেজুরের রস পাওয়া যায়। অনেক শহুরেরা রয়েছে খুব সকালে গ্রামে খেজুরের রস খাওয়ার জন্য যায়। খুব সকালে খেজুর গাছ থেকে হারি নামানো হয়।
সকাল হতে না হতেই গ্রামগঞ্জে সর্বত্র খেজুরের রসের পায়েস খাওয়ার ধুম পড়ে। তবে শীতের সকালের প্রধান আকর্ষণ হল দুধ চিতই পিঠা ও ভাপা পিঠা।
শীতের সকালের সুখ দুঃখ
শীতের সকালে লেপ-কম্বল মুড়ি দিয়ে আরাম করে শুয়ে থাকার মত সুখ আর দ্বিতীয় টা নেই। এছাড়াও শীতের সকালে বিভিন্ন ধরনের পিঠেপুলি দিয়ে নাস্তা শুরু করা যেন একটি আনন্দের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। অপরদিকে যারা দুঃখী, যাদের কোন শীতের বস্ত্র নেই বা শীত নিবারণের জন্য কোন লেপ কম্বল নেই তাদের জন্য এই সময়টা খুবই দুঃখের।
অনেকে রাস্তার পাশে শীতের হিম শীতল বাতাসে শুয়ে থাকে। এ ধরনের মানুষের জন্য শীতের সকাল অনেকটা কষ্টের।
যানবাহন চলাচলে অসুবিধা
শীতের সময় প্রকৃতি কুয়াশায় এতটাই আচ্ছন্ন থাকে যে যানবাহন চলাচলে খুবই অসুবিধা হয়ে যায়। অনেক সময় তো দেখা যায় দূরপাল্লার যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে ভয়াবহ এক্সিডেন্ট হয়ে থাকে। যার কারণে কুয়াশাচ্ছন্ন সময়ে যানবাহন চলা থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।
এছাড়াও নদী পথে বিভিন্ন নৌকার লঞ্চ ও ফেরি চলাচল করে। কিন্তু অতিরিক্ত কুয়াশা থাকার কারণে তখন এসব যান চলাচল বন্ধ করা হয়। যার কারণে যাত্রীদের দুর্ভোগের সীমা থাকে না।
উপসংহার
কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে আসে শীতের সকাল। তবে ধীরে ধীরে বেলা বাড়ার সাথে সাথে এই কুয়াশা যখন কমে সূর্যের দেখা মেলে তখন মানুষের আনন্দের সীমা থাকে না। তবে শীতের সকাল যেমন আনন্দদায়ক তেমনি কষ্টের বিষয়।
যাই হোক দুইয়ে মিলেমিশে কিন্তু বেশ আনন্দের সময় কাটে শীতের সকালটা। কবির ভাষায় বলা যায়-একটি ধানের শীষের উপরে একটি শিশির বিন্দু, শীতের সকালের সৌন্দর্যকে দ্যুতিময় করে তোলে।
শীতের সকাল রচনা ছোট
অনেক শিক্ষার্থী বন্ধুরা রয়েছে যারা শীতে সকাল রচনা ছোট সম্পর্কে জানতে চায়। আর তাদের জন্য এই রচনাটি উপস্থাপন করা। আশা করছি এই সহজ ও সরল ভাষায় রচনাটি পড়ে শিক্ষার্থী বন্ধুরা উপকৃত হবে।
ভূমিকা
ছয় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। এই ছয় ঋতুর মধ্যে শীতকাল অন্যতম। নবান্নের উৎসব শেষ হতে না হতেই উত্তরের হাওয়ায় ভর করে শীত নামে বাংলার প্রকৃতিতে। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় হাড়ে কাপড় লাগিয়ে শীত আসে তার নিজস্ব রূপ নিয়ে। প্রকৃতি তখন তার সমস্ত আবরণ খুলে দীনহীন বেশ ধারণ করে।
তবুও বাংলার বুকে শীতের রয়েছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। তখন প্রকৃতি জগতের সৃষ্টি হয় এক ভিন্ন সৌন্দর্য। এর সৌন্দর্য দেখা যায় বিশেষ করে সকালে।
শীতের সকালের আগমন
শীতের রাতে মানুষ লেপকাথা মুড়ি দিয়ে নিশ্চুপ শুয়ে থাকে। তারপর এক সময় পাখি ডাকে। কুয়াশার বুক ভেদ করে ফুটে ওঠে আলোর রেখা। প্রভাত হয়, ভেসে আসে মুয়াজ্জিনের আজানের ধনী। তীব্র শীতের কাপড় উপেক্ষা করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ ছুটে চলেন মসজিদে।
গৃহত্যাগী গবাদি পশুর ডাক আর রাখালের পরোচারণা শুরু হয়। লাঙ্গল ও গরু নিয়ে কৃষকরা মাঠে যায়। গায়ে তাদের সামান্য শীত বস্ত্র। অনেকের হয়তো তাও নেই। কাঁদতে কাঁদতে চলে মাঠে।
গ্রামে শীতের সকাল
গ্রাম গঞ্জের শীতের সকালের তুলনা অন্য কিছুর সাথে করা যায় না। কারণ গ্রামে শীতের সকাল মানে টাটকা শাকসবজি সাথে টাটকা খেজুরের রস। টাটকা খেজুরের রসের পায়েস সাথে ভাপা পিঠার মৌ মৌ গন্ধ সবাইকে পাগল করে দেয়। তবে দুখী দারিদ্র্য গ্রামবাসীর ক্ষেত্রে অনেক সময় শীতের পোশাক থাকে না। রাতে তারা ঠান্ডায় কাঁপতে থাকে।
আর সূর্যের দেখা মেলার অপেক্ষায় বসে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় খালি পেটে পান্তা ভাত খেয়ে কৃষক কুয়াশাচ্ছন্ন ভোর বেলায় মাঠের কাজে যায়। হাটে বাজারে যায় কেনাকাটার জন্য। শীত একটু বেশী লাগলে সকালবেলায় নাড়ার আগুনে ছেলের দল মটরশুটি পুড়িয়ে খায়। বড়রাও থাকে রোদের অপেক্ষায়।
শীতের সকালে নদ-নদী
আমাদের দেশের শীতকালে নদনদী গুলোতে তেমন পানি থাকে না। যার কারণে তখন নদী থেকে প্রচুর মাছ ধরা যায়। যার কারণে শীতের খুব সকালে জেলেরা জাল হাতে মাছ ধরতে নদীতে চলে যায়। জেলে নৌকাগুলো অল্প দূরে হলেও কুয়াশার জন্য তেমন ভালো দেখা যায় না। তখন নদীর উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঠান্ডা বাতাসে হার কাপানোর শীতের হাওয়া।
উপসংহার
শীতের সকাল তেমন দীর্ঘস্থায়ী হয় না। কিছুক্ষণ পর সূর্য ওঠে রোদের কিরম ছড়ায় এবং উত্তাপ বাড়ায়। শীতের প্রভাব কাটিয়ে শুরু হয় কর্মমুখর জীবনের ব্যস্ততা।
শীতের সকাল রচনা hsc
এই পড়বে শিক্ষার্থী বন্ধুদের জন্য শীতের সকাল রচনা hsc সম্পর্কে আলোচনা করব। আশা করছি রচনাটি মনোযোগ সহকারে পড়লে উপকৃত হবে।
ভূমিকা
বসন্ত ঋতুর পূর্বে শীতের আগমন ঘটে। কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে শীত আসে। আর শীতের সকাল মানব মনে এক বিচিত্র অনুভূতির সঞ্চার করে। সেই পাতা ঝরা কুয়াশা মোরা সকালের দিকে তাকিয়ে মন কেমন বিষন্ন হয়ে ওঠে। তখন শীতকে মনে হয় উদাসী এক বাউল।
আরও পড়ুনঃ মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনার ৩০ টি পয়েন্ট
তার হাতে একতারা, সেখানে বৈরাগ্যের সুর। কিন্তু এটাই তার একমাত্র পরিচয় নয়। শীত এসে মানুষকে আরও প্রাণ চঞ্চল ও আনন্দমুখর করে তোলে। মানুষের মনে তখন খুশির ছোঁয়া। শীতের সকালের কাছে এ আমাদের বড় পাওয়া।
শীতের সকাল
লেপের নিচ থেকে উঠতে ইচ্ছা করে না এ সময়। চোখে থাকে ঘুমের আবেশ। কত বেলা হয়েছে বোঝা যায় না। শীতের সকালের প্রাকৃতিক পরিবেশ সুন্দর। পূর্ব আকাশে ধীরে ধীরে আলো ঝলমল করে ওঠে। উত্তর দিক থেকে হিম শীতল বাতাস এবং দীর্ঘশ্বাসের মতো হঠাৎ শির শির করে বনের গাছগুলো পাতার ফাক দিয়ে বয়ে যায়। পাতাগুলো কেঁপে ওঠে।
টুপ টুপ করে শিশির ঝরে পড়ে। বোনের মেঠো পথ শিশিরে সিক্ত হয়ে ওঠে। শীতের সকালে চাষিরা মাঠে যায় কাস্তা হাতে। হলুদ শস্যের ফুল বা নুয়ে পড়া মটরশুঁটি জড়িয়ে ধরে পা। শিশিরে সকালে রৌদ্র পড়লে মুক্তার মত উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। সূর্য একেবারে দক্ষিণ দিকে হেলে পড়ে এগোতে থাকে। অনেক সময় ঘন কুয়াশায় দূরের সবকিছু ঢেকে যায়, কিছুই দেখা যায় না।
পাখিরাও সবশেষে কোলাহলে ব্যস্ততা দেখায় না। কিন্তু হলুদ সরষে খেতে যখন ফুল ফোটে তখন অলির গুঞ্জন এ মুখরিত হয়ে ওঠে। খেজুর গাছে ঝুলতে থাকে রসের হাড়ি। বাতাসে তার লোভনীয় মিষ্টি গন্ধ ভেসে আসে। গাছের পাতারা বিবর্ণ হয়ে ওঠে এবং বুড়িয়ে যায়।
তারপর ঝরতে থাকে। গ্রামের রাস্তায় কৃষানেরা সকাল না হতেই দুই পায়ে কুয়াশা মাড়িয়ে বলদ নিয়ে মাঠের দিকে ছুটে যায়। সকালে মাঠের দিকে তাকালে সবুজের সমারহে মনটা উদ্বেলিত হয়ে ওঠে।
শহুরে শীতের সকাল
শহরের শীতের সকাল গুলোর রূপ ভিন্ন রকমের। এখানে শীতের প্রকোপ একটু কম। শহরের ইটের পরে ইট প্রকৃতিকে উপভোগ করতে দেয় না। শহরের শীতের সকাল কেবল কাকে ডাক, কলের শব্দ, ডিজেল পেট্রোলের গন্ধ এবং বাস ট্রাকের শব্দে মিশে যায় শত কোলাহলে। সকালে অফিসমুখী মানুষের ছোটাছুটি। যান্ত্রিক সভ্যতায় শহর বাসিরা অভ্যস্ত।
প্রকৃতির রূপ আর সুষমা ইটের কাঠিন্যের মধ্যে বসে উপভোগ করার সময় কোথাও নেই। তবে এর ভিন্ন রূপও আছে। শহরে শীত আসে খুশির মেজাজ নিয়ে। আসে শহরকে নানা সাজে, নানা রঙে সাজাতে। শীতের মৌসুমে শহরে খেলাধুলার আসর বসে। শীত মানুষকে ঘরের বাইরে টেনে নিয়ে যায়।
বনভোজনের হাতছানিতে ছুটে সবাই চলে এ শহর থেকে অন্য শহরে। ছুটির দিনে চিড়িয়াখানা সহ অন্যান্য জায়গায় চলে ঘোরাঘুরি। ফলে নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে শহর।
গ্রামে শীতের সকাল
সত্যিকার অর্থে শীতের সকালের তাৎপর্য গ্রামেই। গ্রামীণ প্রকৃতিতেই শীতের সকাল একটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। চোখের সামনে ভেসে ওঠে শীতের গ্রামগুলো। মাঠে মাঠে ধান কাটা হয়ে গেছে। কৃষাণ চলেছে মাঠের পথে। গায়ের বধু চলেছে ঘাটের পথে। ছোট্ট ছেলে মেয়েদের রৌদ্রের পরশে হাত-পা গুটিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার মধ্যেই বাংলার শীতের সকালের রূপ বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে।
শীতের সকালে খাবারদাবার, শীতের সকালে রকমারি খাবার তৈরি হয়। গায়ের প্রতিটি ঘরে ঘরে লেগে যায় পিঠা তৈরির ধুম। গায়ের মেয়েরা নিজেদের কুফলতার পরিচয় দেয় পিঠা তৈরীর মাধ্যমে। শীতের সকালের নরম রোদে বসে ভাপা পিঠা খাওয়ার আনন্দ বোধ হয় সবারই জানা। শুধু গ্রামেই নয় শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে ভাপা পিঠা বানিয়ে বিক্রি করে।
শীতে টাটকা শাকসবজি চাষ হয়। চাষ হয় নানান জাতের কপি, টমেটো, গাজর, বরবটি, পালং শাক, মূলা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন এ সবই শীতের ফসল। বোরোই, কমলা লেবু এ ঋতুরই ফল ।কৈ, মাগুর, সিংসহ অন্যান্য মাছ এর সময়ে প্রচুর পাওয়া যায়।
শীতের সকালে নদ নদী
শীতের সময় নদ-নদী গুলোর পানি অনেকটা শুকিয়ে যায়। এই সময় নদীতে প্রচুর মাছ ধরা পড়ে। যার কারণে গ্রাম অঞ্চলে গেলে দেখা যায় শীতের সময় খুব সকালে জেলেরা মাছ ধরতে নদীর দিকে চলে। অনেক সময় কুয়াশার কারণে জেলেদের নৌকাগুলো অল্প দূরে হলেও কুয়াশার ধূম্রজালে দেখা যায় না।
অনেক সময় অতিরিক্ত কুয়াশার কারণে ধূম্রজাল ভেদ করে দূরযাত্রার নৌকা, ফেরি ও লঞ্চ ভালো মত চলাচল করতে পারে না। এই সময় নদীর উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঠান্ডা হাওয়ায় হাড় কাপানো শীত লাগে।
শীতের সকালের অসুবিধা
শীতের সকাল যেমন অনেক মানুষের কাছে আনন্দদায়ক তেমনি গরিব ও দুস্থদের জন্য ভীষণ অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ এ সময় লেপ কম্বলের মধ্যে থেকে কারো বেরোতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু খেটে খাওয়া দিনমজুরদের জন্য এটা হয়ে যায় সবচেয়ে বড় সুবিধার কারণ।
তারা চাইলেও লেপ কম্বলের মধ্যে শুয়ে থাকতে পারে না। জীবিকার তাগিদে তাদের বেরোতে হয়। এছাড়াও কিছু দুষ্ট মানুষ রয়েছে যারা গরম কাপড়ের অভাবে কষ্ট করে। এ ধরনের মানুষের জন্য শীত এক ধরনের যন্ত্রণা বা অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
উপসংহার
শহরের কৃত্তিমতার নিদারুণ চাপে শীতের সকাল তার নিজস্ব রূপে প্রকাশিত হতে পারে না। কারণ এখানে গ্রামের মতো কুয়াশা জৌলুশ নেই। তবু কুয়াশার বুক চিরে যখন ভোরের ঘাসটি দুলতে দুলতে ভেসে আসে তখন সত্যি অপূর্ব লাগে ।
লেখকের মন্তব্য - শীতের সকাল রচনা
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা শীতের সকাল রচনা ৭ম শ্রেণী,শীতের সকাল রচনা ২য় শ্রেণী,একটি শীতের সকাল রচনা class 6,শীতের সকাল রচনা ছোট,শীতের সকাল রচনা hsc সম্পর্কে জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন।
চেষ্টা করব আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী আরো নতুন নতুন আর্টিকেল আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার। প্রতিদিন নিত্যনতুন ও তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখুন। আপনার কোন মতামত বা পরামর্শ থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url