সরিষার তেলের উপকারিতা অপকারিতা-রসুন ও সরিষার তেলের উপকারিতা
সোনা পাতা খাওয়ার উপকারিতাআপনি কি সরিষার তেলের উপকারিতা অপকারিতা-রসুন ও সরিষার তেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে সরিষার তেল সম্পর্কে বেশ কিছু ভুল ধারণা দূর করব। আশা করছি আপনারা উপকৃত হবেন।
বর্তমান সময়ে সরিষার তেল ব্যবহারের খুব একটা প্রচলন না থাকলেও, একসময় সরিষার তেলই ছিল সবার পছন্দের তালিকা। হাজার বছর আগে থেকে তেল হিসাবে সরিষার তেলই ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
পোস্ট সূচীপত্রঃআজ আমরা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে সরিষার তেল সম্পর্কে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারবো।
সরিষার তেলের উপকারিতা অপকারিতা-ভূমিকা
বর্তমান সময়ে সরিষার তেল ব্যবহার তেমন একটা না করলেও আমাদের বাড়ির মুরুব্বিরা বা মা খালারা এখনো সরিষার তেল ব্যবহারের পরামর্শ দেয়। সর্দি কাশি থেকে শুরু করে শরীর ব্যথাতে সরিষার তেল ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।
আজ আমরা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে সরিষার তেল সম্পর্কে যে বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারবো তা হলো-
রসুন ও সরিষার তেলের উপকারিতা,নাকে সরিষার তেলের উপকারিতা,মুখে সরিষার তেল মাখার উপকারিতা,পুরুষাঙ্গে সরিষার তেল ব্যবহারের নিয়ম,সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা,সরিষার তেলের ক্ষতিকর দিক,মুখে সরিষার তেল মাখলে কি হয় ও চুলের জন্য সরিষার তেলের উপকারিতা সম্পর্কে। বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
রসুন ও সরিষার তেলের উপকারিতা
রসুন ও সরিষার তেলের উপকারিতা সম্পর্কে কমবেশি সবারই জানা। এক সময় এই উপাদান দুইটির ব্যবহার খুবই জনপ্রিয় ছিল। গ্রাম অঞ্চলে দেখা যেত পড়ে গিয়ে কোথাও ব্যথা পেলে বা কোন কারণবশত জয়েন্টে ব্যথা অনুভব করলে একটি চামচে বা ঝিনুকে সরিষার তেলের সাথে দুই থেকে তিন কোয়া দেশি রসুন থেত করে।
তা মোমের আগুনে অথবা চুলার আগুনে কিছুক্ষণ জ্বালিয়ে নিয়ে যতক্ষণ না পর্যন্ত রসুন বাদামী রং ধারণ করে তারপর কুসুম গরম অবস্থায় সেই তেল যদি ব্যথার জায়গায় মালিশ করা যায় তাহলে অনেকটা আরাম পাওয়া যায়। এছাড়াও রসুন ও সরিষার তেল গরম করে মালিশ করলে ঠান্ডা বা সর্দি থেকে খুব সহজে রেহাই পাওয়া যায়।
বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াটি অনেক আগে থেকেই ব্যবহার করা হয়। বর্তমানেও মা খালারা এই পদ্ধতি অবলম্বন করার পরামর্শ দেন। বাচ্চার অতিরিক্ত সর্দি লাগলে যদি সরিষার তেল ও রসুন একসাথে গরম করে বুকে পিঠে মালিশ করা যায় তাহলে ঠান্ডা থেকে খুব সহজেই বাচ্চারা রেহাই পায়।
শরীরে স্পর্শকাতর জায়গা বাদ দিয়ে যে কোন জায়গায় আপনি এই তেল মালিশ করতে পারেন। এটি শুধু মাংসের উপরিভাগে কাজ করে। হার্ট বা কিডনি এরিয়াতে কোন প্রক্রিয়া করে না এবং নিরাপদ। চেষ্টা করে দেখতে পারেন আশা করছি উপকৃত হবেন।
নাকে সরিষার তেলের উপকারিতা
নাকে সরিষার তেলের উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। সরিষার তেল শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কারণ সরিষার তেলে রয়েছে গ্লুকোসাইনোলেট নামক এক ধরনের রাসায়নিক উপাদান। যা বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোব ও ব্যাকটেরিয়া নির্মূল করতে সহায়তা করে থাকে। যার কারণে সর্দি-কাশির মতো সমস্যা থেকে রেহাই দিতে সাহায্য করে সরিষার তেল।
আপনার যদি নিয়মিত সর্দি-কাশি লেগেই থাকে তাহলে নিয়ম করে নাকে এক ফোঁটা সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন যা আপনার শ্বাসনালী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করবে। যার ফলে আপনি আরামে শ্বাস নিতে পারবেন। অনেক সময় দেখা যায় অতিরিক্ত পরিমাণে সর্দি লাগার জন্য নাক বন্ধ হয়ে যায়। তখন যদি আপনি নাকে এক ফোটা সরিষার তেল ব্যবহার করেন তাহলে উপকার পাবেন।
তবে অবশ্যই আপনার তেলটি হতে হবে খাঁটি। শুধুমাত্র খাঁটি সরিষার তেলেই এই উপাদানটি পাওয়া যায়। তাই আপনি যদি নাকে সরিষার তেল ব্যবহার করতে চান তাহলে অবশ্যই সেটা খাঁটি হতে হবে। আপনি যদি খাঁটি সরিষার তেলের পরিবর্তে ভেজাল তেল ব্যবহার করেন তাহলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই অবশ্যই নাকে ব্যবহারের ক্ষেত্রে খাঁটি সরিষার তেল বেছে নিবেন।
মুখে সরিষার তেল মাখার উপকারিতা
আপনি কি মুখে সরিষার তেল মাখার উপকারিতা সম্পর্কে জানেন? আপনি যদি না জেনে থাকেন তাহলে জানলে অবাক হবেন। অনেকেই আছেন যারা সরিষার তেল শরীরে মাখেন। বিশেষ করে শীতের সময় বেশি গায়ে মাখা হয়। তবে এমনও কেউ কেউ আছেন যারা গরমেও সরিষার তেল মাখতে পছন্দ করেন। তবে আপনি জানেন কি সরিষার তেল আপনার শরীরের জন্য উপকারী কিনা।
আজ আমি আপনাদের জানাবো সরিষার তেল মুখে মাখার জন্য কতটা উপকারী। ত্বকের জন্য সরিষার তেল খুবই উপকারী তবে তা হতে হবে সম্পূর্ণ খাঁটি তেল। ঘানিতে ভাঙ্গানো তেল সবচেয়ে বেশি খাঁটি। চলুন তাহলে এবার জেনে নেই মুখে সরিষার তেল মাখার উপকারিতা সম্পর্কে-
ত্বকের চুলকানি দূর করে
অতিরিক্ত গরমের ফলে অনেকের শরীরেই চুলকানি, ঘামাচি বা ঘা দেখা দেয়। যার ফলে শরীর অতিরিক্ত পরিমাণে চুলকায়। আপনি যদি সরিষার তেল নিয়মিত মাখেন তাহলে ত্বকের এসব সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারবেন। কারণ সরিষার তেলে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান। যা এই ধরনের সমস্যা থেকে খুব সহজেই মুক্ত রাখতে পারে।
রোদে পোড়া ত্বকের কালো দাগ দূর করে
আপনার ত্বকে যদি রোদে পোড়া কালো দাগ থেকে থাকে তাহলে টক দই, লেবুর রস, বেসন একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে তাতে পরিমাণ মতো সরিষার তেল মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে নিন। এই প্যাকটি মুখে মেখে দশ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করলে আপনার ত্বক থেকে রোদে পরা কালো দাগ দূর হয়ে যাবে।
বলিরেখা কমায়
সরিষার তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই,এ, বি কমপ্লেক্স। এই উপাদানগুলো ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। তাই ত্বকের বলিরেখা দূর করতে দারুণভাবে কাজ করে সরিষার তেল।
ঠোঁট ফাটা কমায়
অনেকেই আছেন যাদের ঠোঁট ফাটার সমস্যা সারা বছরই লেগে থাকে। তারা চাইলে রাতে সামান্য পরিমাণ সরিষার তেল ঠোঁটে লাগিয়ে ঘুমান। দেখবেন কিছুদিনের মধ্যে ঠোঁট ফাটা সমস্যা অনেকটা কমে যাবে।
ত্বকের জেল্লা বাড়ায়
ত্বকের জেল্লা বৃদ্ধি করতে সরিষার তেলের সাথে নারিকেল তেল মিশিয়ে ভালোভাবে মালিশ করুন। এরপর একটি ভাল মানের ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। দেখবেন আপনার ত্বকে জেল্লা ফিরবে।
পুরুষাঙ্গে সরিষার তেল ব্যবহারের নিয়ম
আপনি কি পুরুষাঙ্গে সরিষার তেল ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে চলুন আজ আমরা প্রসঙ্গে সরিষার তেল কিভাবে ব্যবহার করতে হয় সেই নিয়ম জানবো। প্রাকৃতিক ঔষধ হিসেবে সরিষার তেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে পুরুষাঙ্গের স্বাস্থ্যের জন্য।
কারণ সরিষার তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টিব্যাকটেরিয়াল, এন্টি ইনফ্লামেটরি , এন্টিফাঙ্গাল ও এন্টিভাইরাস উপাদান। যা পুরুষাঙ্গের বিভিন্ন সমস্যার চিকিৎসায় সাহায্য করতে পারে। চলো তাহলে আমরা এবার জেনে নেই পুরুষাঙ্গে সরিষার তেল ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে-
- প্রথমে পুরুষাঙ্গ ভালোভাবে ধুয়ে অথবা পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে পুরুষাঙ্গ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন।
- এরপর একটি তুলো অথবা প্যাডের সাহায্যে সরিষার তেল পুরুষাঙ্গে লাগিয়ে নিন।
- তেল লাগানো হয়ে গেলে পুরুষাঙ্গ কিছুক্ষণ হাতের সাহায্যে ম্যাসাজ করুন।
- মেসেজ করা শেষ হয়ে গেলে যখন তেল শুকিয়ে যাবে তখন পুরুষাঙ্গ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন।
কবে পুরুষাঙ্গের তেল লাগানোর ক্ষেত্রে বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ অনেকেই এই তেল লাগানোর ফলে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। চলুন তাহলে জেনে নেই কি কি সতর্কতা অবলম্বন করবেন-
- সরিষার তেল খুবই ঝাঁজালো, তাই আপনি যদি প্রথমবার এটি ব্যবহার করে থাকেন তাহলে অবশ্যই সামান্য একটু জায়গায় পরীক্ষা করে দেখুন।
- আপনার ত্বকে যদি কোন প্রকার এলার্জি দেখা দেয় তাহলে এটি ব্যবহার করবেন না।
- চোখ মুখে যেন সরিষার তেল না যায় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
এখন চলুন জেনে নেই সরিষার তেল পুরুষাঙ্গে লাগানোর ফলে কি কি উপকারিতা মিলবে-
- পুরুষাঙ্গের সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করবে।
- পুরুষাঙ্গের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে।
- পুরুষাঙ্গের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
- পুরুষাঙ্গের শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
- পুরুষাঙ্গের ত্বক কে নরম ও কোমল করে তুলবে।
সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা
আজ আমরা কথা বলব সরিষার তেল বা মাস্টার্ড টয়লেট উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। সরিষার তেল খাওয়া নিয়ে তর্ক বিতর্কের শেষ নেই। তবুও আমরা বাঙালিরা এই তেল ছাড়তে পারবো না। বর্তমান সময়ে মানুষ খাদ্য নিয়ে বেশ সচেতন। আর এই সচেতনতার অংশ হিসেবে নিষিদ্ধ বা নিরুউৎসাহিত এমন খাবার গুলোর তালিকা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
সরিষার তেল এই তালিকায় যুক্ত হওয়া নতুন একটি নাম। বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে এটির বিষয়ে সচেতনতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাংলাদেশের সরিষার তেল এখনো বেশ জনপ্রিয়। এই তেল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা বাঙ্গালীদের কাছেও একইভাবে সমাদৃত। যদিও কিছু দেশে সরিষার তেল বাহিরে ব্যবহার্য হিসেবে আমদানি করা হয়ে থাকে।
সরিষার তেলের উপাদান হিসেবে রয়েছে ৬০% মনোআনস্যাচুরেটেড চর্বি অসম্পৃক্ত চর্বি যার ভেতরে রয়েছে ৪২% এ্যারোসিক এসিড ,১২% অলিক এসিড, ২১% পলিআনস্যাচুরেটেড চর্বি এবং ৬% ওমেগা থ্রি। এছাড়াও সরিষার তেলে রয়েছে কিছু বিষাক্ত পদার্থ। কালো সরিষার মধ্যে রয়েছে এলিল আইসো থাইওসায়ানেট হিসেবে ।
আর সাদা সরিষা ত রয়েছে আইসো থাইওসায়ানেট হিসেবে। মুখে খাওয়া বা তকে লাগানো যেভাবেই এটি ব্যবহার হোক না কেন এটি বিষাক্তই। বিষাক্ত পদার্থ হলেও সরিষার তেলে সুক্ষ সুক্ষ কিছু উপকারিতা রয়েছে সেগুলো আজ আমরা জানব।
সরিষার তেলের উপকারিতা
হাজার বছর ধরে সরিষার তেল ব্যবহৃত হচ্ছে। সরিষার তেল খাওয়া যেমন উপকারী তেমনি গায়ে মাখলে বিভিন্ন সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায়। আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানব সরিষার তেলের উপকারিতা সম্পর্কে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেই সরিষার তেলের উপকারিতা সমূহ কি কি-
হৃদযন্ত্র ভালো রাখে
সরিষার তেলে রয়েছে মনোআনস্যাচুরেটেড চর্বি রয়েছে এদের দুটো কাজ হল হৃতন্ত্রের খারাপ চর্বি LDL কে কমাতে এবং ভালো চর্বি HDL কে বাড়াতে সাহায্য করে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরিষার তেল হৃদ যন্ত্র কে ভালো রাখে।
জীবাণু ও ছত্রাক প্রতিরোধক
সরিষার তেলে রয়েছে জীবাণু ও ছত্রাক প্রতিরোধক কার্যকলাপ। সরিষার তেল মুখে খান অথবা ত্বকে লাগান যেভাবেই হোক না কেন এটি ছত্রাক প্রতিরোধ হিসেবে কাজ করে। আবার অনেক সময় দেখা যায় মধু ও সরিষার তেলে এক এক শতাংশ মিলিয়ে সেটি দিয়ে যদি দৈনন্দিন কুলি করা হয় তাহলে এটি মুখের ব্যাকটেরিয়াকে কমাতে সাহায্য করে।
ত্বকের সুস্বাস্থ্যর জন্য ব্যবহার
সরিষার তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই। যা ত্বকের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। আবার উল্টা ভায়োলেট রের মাধ্যমে ত্বকের যে ক্ষতি হয়, যার কারণে রিংকেল হয় বা ত্বকে ভাজ পরে। সরিষার তেল সেগুলো প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। এবং ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে।
চুলের স্বাস্থ্য কে ভালো করে
সরিষার তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি। যা চুলকে ঘন ও লম্বা করতে সাহায্য করে। বা সরিষার তেল দিয়ে অয়েল মাসাজ করলে মাথার তালুতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং এই উপাদানটি মাথার তালুর জন্য বেশ উপকারী।
দাঁতের মাড়ির স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে
ভারতে এক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সরিষার তেল ও একটু লবণ মিশিয়ে যদি মাড়িতে হালকা ম্যাসাজ করা যায় তবে মাড়ি আরও ও স্বাস্থ্যবান হয়।
প্রদাহ জনিত ব্যথা কমায়
সরিষার তেল দিয়ে যদি হাড়ের জয়েন্ট এর ওপর হালকা মাসাজ করা হয় তাহলে দেখতে পাবেন ব্যথাগুলো অনেকাংশেই কমে যায়। সরিষার তেলে সেলেনিয়াম নামক এক ধরনের পদার্থ রয়েছে যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
সরিষার তেল পরিবেশ বান্ধব
সরিষার তেল পরিবেশ উপযোগী ও পরিবেশ বান্ধব কারণ এটি ভেজিটেবল সোর্স থেকে উৎপন্ন হয়েছে।
সরিষার তেল শরীরকে রিলাক্স করে ।সরিষার তেল শরীরকে রিলাক্স করে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। সর্দি কমাতে এবং শরীরের ব্যথা কমাতেও সরিষার তেল বেশ উপকারী।
উপরে উল্লেখিত আলোচনা গুলো সরিষার তেলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপকারী দিক।
সরিষার তেলের অপকারিতা
সরিষার তেলের সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম উপকারী দিক থাকলেও এর কিছু অপকারিতা দিক রয়েছে। এখন আমরা জানবো সরিষার তেলের অপকারিতার দিক সম্পর্কে।
ছোট বাচ্চা বা শিশুদের জন্য এই সরিষার তেল কোনভাবেই ব্যবহার করা উচিত নয়। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রুট এন্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ১৯৯০ সাল থেকে বলে আসছে যে সরিষার তেলে মারাত্মক এরোসিক এসিড রয়েছে যা ২০ থেকে ৪০% ভলিউম হিসাবে রয়েছে। আর এই তেল ল্যাবরেটরীতে ইঁদুরের হৃদযন্ত্রের ওপর খারাপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।
তাই যুক্তরাষ্ট্রের সরিষার তেল খাওয়া সম্পূর্ণভাবে নিষেধ। শুধুমাত্র বাইরের ত্বকে ব্যবহার যোগ্য। তবে সরিষার তেল খাওয়ার বিষয়ে বিধি নিষেধ রয়েছে।
সরিষার তেলের ক্ষতিকর দিক
এবার আমরা জানবো সরিষার তেলের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে। সরিষার তেল খাওয়ার যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। উন্নত বিশ্বে খাঁটি সরিষার তেল খাবার হিসেবে বিক্রি করা নিষিদ্ধ। তবে বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। এর কারণ হলো সরিষার তেলে রয়েছে অ্যারোসিস এসিড নামক যৌগ।
যা এক ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড যা হৃদপিন্ডের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। সরিষার তেল স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। কারণ সরিষার তেলে রয়েছে উচ্চমাত্রার অ্যারোসিস অ্যাসিড। এই ম্যানোসেচুরেটেড এসিড বেশ কয়েকটি তেলে উপস্থিত রয়েছে। অল্প মাত্রায় ইউরেকিক এসিড নিরাপদ তবে উচ্চমাত্রায় এই এসিড স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ।
প্রাণীদের উপরে করা গবেষণায় জানা যায়, দীর্ঘকাল ধরে ইউরিকক অ্যাসিড গ্রহণের ফলে তা হৃদযন্ত্রের এক ধরনের রোগ তৈরি করতে পারে। যাকে বলা হয় মায়োকার্ডিয়াল লিপিডোসিস। মানুষ একই মাত্রার প্রভাব অনুভব করে কিনা তা স্পষ্ট। উচ্চমাত্রায় ইউরিকক এসিড শিশুদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
ইস্টিম ডিস্টরেরেশন প্রসেসে প্রস্তুত করা সরিষার তেল এফটিএ এই খাবার জন্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে বাংলাদেশে কোন মিলেই এই প্রসেসে সরিষার তেল তৈরি করা হয় না। বেশিরভাগ মানুষ জানেই না যে উন্নত বিশ্বে খাঁটি সরিষার তেল নিষিদ্ধ বা কেন নিষিদ্ধ সেই সম্পর্কে।
সরিষার তেল নিয়মিত খাওয়ার ফলে হৃৎপিণ্ডের রোগ হতে পারে। স্টকের ঝুঁকি অত্যন্ত বেড়ে যায়। সরিষার তেলের অনেক উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও খাবার হিসেবে সরিষার তেল ব্যবহার না করাই ভালো।
মুখে সরিষার তেল মাখলে কি হয়
ত্বকের সরিষার তেল মাখলে কি হয় সেই সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। আমাদের ত্বকের জন্য সরিষার তেল খুবই উপকারী। রূপচর্চার ক্ষেত্রে সরিষার তেলের কার্যকারিতা অনেক। ত্বক ও চুলের যত্নে সরিষার তেল প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। চলুন তাহলে জেনে নেই মুখে সরিষার তেল মাখলে কি হয় সেই সম্পর্কে-
- আপনার ত্বকের যদি উজ্জ্বলতা কমে যায় তাহলে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে প্রতিদিন রাতে সরিষার তেল ও নারকেল তেল মিশিয়ে 10 মিনিট আপনার ত্বকে মেসেজ করুন। ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিন দেখবেন আপনার ত্বক নরম ও উজ্জ্বল দেখাবে।
- সরিষার তেলে রয়েছে ভিটামিন এ, ই এবং বি কমপ্লেক্স। আপনার ত্বকে যদি বার্ধক্যের ছাপ পড়ে থাকে। তাহলে আপনি সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন।
- আপনি যদি সানস্ক্রিন ব্যবহার না করেন তাহলে এর পরিবর্তে সামান্য পরিমাণে সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন। কারণ সূর্যের ক্ষতিকারক আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি থেকে ত্বককে বাঁচাতে এটি সাহায্য করবে।
- আপনার ত্বকে যদি রোদে পোড়া দাগ থেকে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য আপনাকে একটা প্যাক তৈরি করে নিতে হবে। এক চা চামচ টক দই, হাফ চা চামচ লেবুর রস, এক চা চামচ বেসন ও সামান্য পরিমাণে সরিষার তেল দিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে নিয়ে তা আপনার মুখে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখতে হবে। এরপর পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
- এছাড়া আপনার যদি চুলকানি জনিত সমস্যা থেকে থাকে তাহলে সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন। কারণ সরিষার তেলে রয়েছে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অন্টিফাঙ্গাল উপাদান। যা আপনাকে চুলকানি সমস্যা থেকে মুক্ত রাখবে।
চুলের জন্য সরিষার তেলের উপকারিতা
আপনি কি চুলের জন্য সরিষার তেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? আমরা অনেকেই জানিনা চুলের জন্য সরিষার তেল কতটা উপকারী। আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে সে সম্পর্কে আলোচনা করব। চুলের জন্য সরিষার তেল কতটা উপকারী এটা না জানার কারণে আমরা প্রতিনিয়তই আমাদের চুলে নারিকেল তেল ব্যবহার করে থাকি।
তবে নারিকেল তেল ব্যবহার করার পাশাপাশি যদি আমরা সপ্তাহে একদিন করে সরিষার তেল মাথার তালুতে ম্যাসাজ করি তাহলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে। তবে সরিষার তেল মাথায় ব্যবহার করার পর একটি ভালো শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
কারণ সরিষার তেল অতিরিক্ত গন্ধ ও ঝাঁঝালো। গন্ধ ও ঝাজ দূর করার জন্য ভালোভাবে শ্যাম্পু করে নিতে হবে। চলুন তাহলে জেনে নেই চুলের জন্য সরিষার তেলের উপকারিতা সম্পর্কে-
চুল পড়া বন্ধ করে
চুল পড়ার একটি মূল কারণ হলো চুলের ফলিকল দুর্বল হয়ে যাওয়া। চুল পড়ার এই সমস্যায় আজকাল অনেকেই ভুগছেন। তাই এই চুল পড়ার সমস্যা থেকে যদি পেতে চান তাহলে নিয়মিত চুলে সরিষার তেল মালিশ করতে পারেন যা আপনার চুলের ফলিকল মজবুত করতে সহায়তা করবে।
প্রাকৃতিক কন্ডিশনার
সরিষার তেলে রয়েছে আলফা ফ্যাটি এসিড যা চুলের সৌন্দর্য রক্ষার্থে এবং স্বাস্থ্যজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এই উপাদান চুলের জন্য ভালো কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। যার কারণে চুল পড়া বন্ধ হয় এবং চুল দ্রুত বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
চুল লম্বা করতে সাহায্য করে
সরিষার তেলে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এই উপাদান চুলের বৃদ্ধি তে সাহায্য করে থাকে।
চুল বৃদ্ধি
চুলের পোস্টটি বৃদ্ধি
সরিষার তেলে রয়েছে উচ্চমাত্রার বিটা ক্যারোটিন এছাড়াও এই তেল ভিটামিন ও খনিজে পরিপূর্ণ। সরিষার তেল মাথায় দেওয়ার ফলে এই বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন এতে রূপান্তরিত হয়ে চুল বাড়তে সাহায্য করে। চুলের পুষ্টি বৃদ্ধির পাশাপাশি অকালে চুলে পাক ধরা থেকেও রক্ষা করে। এছাড়াও প্রতি রাতে যদি চুলে সরিষার তেল ব্যবহার করেন এতে চুল কালো করতেও সাহায্য করে।
রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে
আপনার চুল যদি নিষ্প্রাণ অর্থাৎ রুক্ষ শুষ্ক ও নির্জীব হয়ে যায় তবে মাথার তালুতে নিয়মিত সরিষার তেল মালিশ করতে পারেন। সরিষার তেল মাথায় মালিশ করার ফলে রক্ত সঞ্চালন সঠিকভাবে হবে এবং চুলের গোড়া মজবুত হয়ে চুল পড়া বন্ধ করবে।
লেখকের মন্তব্য-সরিষার তেলের উপকারিতা অপকারিতা
প্রিয় পাঠক আশা করছি রসুন ও সরিষার তেলের উপকারিতা,নাকে সরিষার তেলের উপকারিতা,মুখে সরিষার তেল মাখার উপকারিতা,পুরুষাঙ্গে সরিষার তেল ব্যবহারের নিয়ম,সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা,সরিষার তেলের ক্ষতিকর দিক,মুখে সরিষার তেল মাখলে কি হয় ও চুলের জন্য সরিষার তেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন।
চেষ্টা করব আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী আরও নতুন নতুন আর্টিকেল আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা। প্রতিদিন নিত্যনতুন ও তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখুন। আপনার কোন মতামত বা পরামর্শ থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url