আমের উপকারিতা ও অপকারিতা - কাঁচা আমের উপকারিতা
সকালে বাদাম খাওয়ার উপকারিতাআমের অতুলনীয় স্বাদ এবং মন মাতানো গন্ধের সাথে অন্য কোন ফলের তুলনা হয় না। সেই সাথে আমি রয়েছে অসাধারণ সব পুষ্টি উপাদান। যে কারণে আমকে বলা হয় ফলের রাজা। আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানব আমের উপকারিতা ও অপকারিতা - কাঁচা আমের উপকারিতা সম্পর্কে।
ভারত, পাকিস্তান ফিলিপাইন এবং হাইতির জাতীয় ফল আম। আমরা অনেকেই এই সুস্বাদু ফলটির জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকি। আর আমের মৌসুমে আমরা সকলেই কমবেশি আম খেয়ে থাকি।
পোস্ট সূচিপত্রঃআজ আমরা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
আমের উপকারিতা ও অপকারিতা - ভূমিকা
আম অতি সুস্বাদু ফল হওয়ার কারণে মৌসুমে আমরা সকলেই কমবেশি আম খেয়ে থাকি। বিশ্বব্যাপী আম জনপ্রিয় হলেও এটি মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের ফল। যে কারণে আমের বৈজ্ঞানিক নামও ম্যাংগিফিরা ইন্ডিকা। সমগ্র পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ছয় কোটি টন আম উৎপাদিত হয়। এর প্রায় অর্ধেক আম হয় ভারতে। সারা পৃথিবীতে প্রায় ৩৫০ টির বেশি আমের প্রজাতি রয়েছে।
আম সম্পর্কে আর্টিকেলের মাধ্যমে যে বিষয়গুলো জানতে পারবো তা হলো-আমের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা,আম খাওয়ার নিয়ম,পাকা আমের উপকারিতা,পাকা আমের অপকারিতা,কাঁচা আমের উপকারিতা,আমের উপকারিতা ও অপকারিতা,আমের অপকারিতা সম্পর্কে। বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আমের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
আমের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। তাই আরটিকালের এই পর্বে আমের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি আপনারা যদি আর্টিকেলের এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আমের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই আর দেরি না করে চলুন আমরা জেনে নেই আমের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে।
পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল হল আম। আমের মন মাতানো গন্ধ এবং রসালো ভাবের জন্য ফলটি খুবই জনপ্রিয়। যে কারণে আমকে বলা হয় ফলের রাজা। ভারত, পাকিস্তান ফিলিপাইন এবং হাইতির জাতীয় ফল আম। আমরা অনেকেই এই সুস্বাদু ফলটির জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকি। আর আমের মৌসুমে আমরা সকলেই কমবেশি আম খেয়ে থাকি।
তবে আমের পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই খুব কম জানি। আমি এত পরিমাণ পুষ্টি উপাদান আছে যে একটি আম খেলেই সারাদিনের পুষ্টি চাহিদার একটি বড় অংশ মিটে যায়। বিশ্বব্যাপী আম জনপ্রিয় হলেও এটি মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের ফল। যে কারণে আমের বৈজ্ঞানিক নামও ম্যাংগিফিরা ইন্ডিকা।
সমগ্র পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ছয় কোটি টন আম উৎপাদিত হয়। এর প্রায় অর্ধেক আম হয় ভারতে। সারা পৃথিবীতে প্রায় ৩৫০ টির বেশি আমের প্রজাতি রয়েছে। ধরন অনুযায়ী আমের স্বাদ, রং ও গন্ধের ভিন্নতা রয়েছে। আমের পরিচিত জাত গুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো ল্যাংড়া, ফজলি, আম্রপালি, হিমসাগর, খিরসা পাতি, গোপাল ভোগ, মল্লিকা ইত্যাদি।
আম পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। আমি রয়েছে প্রচুর খনিজ লবণ এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। আমি রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি৬। এছাড়াও আরো রয়েছে অ্যামাইনো এসিড, পটাশিয়াম ও কপার। আমে থাকা আলফা ক্যারোটিন, বিটা ক্যারোটিন, লুসিয়েন জিলাইক এসিড এবং কফিড এসিডের মত উপাদান স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
বর্তমান সময়ে হৃদরোগ অন্যতম ভয়ের এক কারণ। আমি প্রচুর বিটা ক্যারোটিন থাকায় তা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। রসালো আমি উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন সি, ফাইবার ও প্যাকটিন থাকে। যা রক্তের উচ্চ তাপমাত্রা ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। আম খেলে শরীরের খনিজ উপাদানের ঘাটতি অনেকটাই পূরণ হয়।
কারণ আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। যেকোনো পরিশ্রমের পর আম খেলে দ্রুত শক্তি ফিরে পাওয়া যায়। এছাড়াও শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়া লবণের ঘাটতিও পূরণ করে আম। শিশুদের স্মৃতিশক্তি বর্ধক হিসেবে আম খেতে দেওয়া যেতে পারে। কারণ আমের গ্লুটামিক এসিড মস্তিষ্কের কোষ উজ্জীবিত করে।
ফলে শিশুদের স্মৃতিশক্তির পাশাপাশি মনোযোগ ও বাড়ে। সেই সাথে মস্তিষ্কের বাড়তি চাপ কমাতেও আম সাহায্য করে। আমে রয়েছে টারটারিক অ্যাসিড, ম্যালিক এসিড ও সাইট্রিক এসিড এসব উপাদান শরীরের অ্যালকালি নামক রাসায়নিকের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে। আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও ভিটামিন ডি।
এই দুই ভিটামিন ঠান্ডা জনিত সমস্যা দ্রুত উপশম করে। তাই ঠান্ডা জনিত কোন সমস্যা বা ফ্লু দেখা দিলে আম খাওয়া যেতে পারে। দ্রুত সুস্থতার ক্ষেত্রেও সাহায্য করে। হজম জনিত নানা ধরনের সমস্যা থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করে আম। আমি প্রচুর পরিমাণে আশ থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা থেকেও খুব সহজে মুক্ত রাখতে পারে আম।
ত্বকের যত্নেও আম খুব কার্যকর। কারণ আম ত্বককে ভিতর থেকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে এটি ত্বকের ফুসকুনি দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এছাড়াও আম শরীরের ওজন না বাড়িয়ে প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেয়। আমি বেশ কয়েক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।
যা বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। আশা করছি আপনারা আমের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
আম খাওয়ার নিয়ম
অনেকেই আছেন যারা আম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান। আর্টিকেলের এই পর্বে আম খাওয়ার সঠিক নিয়ম আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি আপনারা আর্টিকেলের এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আম খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই আর দেরি না করে চলুন আমরা আম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই। প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরপুর আম।
সুস্বাদু এবং রসালো হওয়ায় এর চাহিদাও অনেক বেশি। তবে সাধারণত আমাদের যখন ইচ্ছা আমরা তখনই আম খাই। তবে আম খাওয়ারও যে একটা সঠিক নিয়ম রয়েছে সেটা অনেকেই জানিনা। চলুন তাহলে আর দেরি না করে আমরা আম খাওয়ার নিয়ম জেনে নেই। সকালে উঠে খালি পেটে আম খাওয়া উচিত নয়।
আম খাওয়ার সব থেকে সঠিক সময় হচ্ছে বিকেল চারটা থেকে পাঁচটার মধ্যে। এই সময় যদি আপনারা আম সেবন করেন তাহলে এর পুষ্টিগুণ আপনাদের শরীরে বেশি মাত্রায় কার্যকরী হবে। এছাড়াও আপনি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার দুই ঘন্টা আগেও আম সেবন করতে পারেন। এই নিয়মে আম খেলে আমের পুষ্টিগুণ আপনার শরীরে বেশি উপকার করে থাকে।
চলুন এবার জানি আমকে কিভাবে খেতে হবে। আম আপনি যে কোন ভাবে খেতে পারেন। তবে আম কাটা সাথে সাথেই আপনাকে খেতে হবে। আম কেটে অনেকক্ষণ রেখে সেই আম খাবেন না। আপনি যদি আমের বেশি উপকারিতা পেতে চান তাহলে আম দিয়ে মিল্কশেক তৈরি করে খেতে পারেন। অথবা আম খেয়ে এর সাথে দুধ সেবন করতে পারেন।
সাধারণত একজন সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে একদিনে এক থেকে দুইটা আমের বেশি খাওয়া উচিত নয়। যদি আপনি নিয়মিত আম সেবন করেন তাহলে আপনি এক থেকে দুইটা আমের বেশি সেবন করবেন না। আর যদি অনিয়মিতভাবে খেয়ে থাকেন তাহলে একদিনে ৫-৬ টার বেশি আম খাবেন না।
বেশি আম খেলে আপনার পেটের নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। আশা করছি আপনারা আম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
পাকা আমের উপকারিতা
পাকা আমের উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। আর্টিকেলের এই পর্বে পাকা আমের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি আপনারা যদি আর্টিকেলের এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে পাকা আমের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে দেরি না করে চলুন আমরা জেনে নেই পাকা আমের উপকারিতা সম্পর্কে।
- আপনি যদি নিয়মিত সঠিক মাত্রায় পাকা আম খান তাহলে যে সকল উপকারিতা হবে তা হল। আপনার শরীরের ব্লাড প্রেসার আম খেয়েই ঠিক করতে পারবেন। আমি প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম রয়েছে। যা কিনা শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে। যার ফলে আমরা হাই ব্লাড প্রেসার এর হাত থেকে বেঁচে থাকতে পারি।
- এছাড়াও আপনার শরীরে যদি ওজন কম থাকে আপনি যদি ওজন বৃদ্ধি করতে চান সে ক্ষেত্রে আম খেতে পারেন। কারণ আমের মধ্যে প্রোটিন ও ক্যালরি ভালো মাত্রায় রয়েছে। তাই আপনি যদি নিয়মিত আম সেবন করেন তাহলে আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধির হতে শুরু হবে।
- আম হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। আপনার পেটে যদি কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস, এসিডিটি ও হজমের সমস্যা থাকে তাহলে আপনি নিয়মিত আম খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস, এসিডিটি ও হজমের সমস্যা অনায়াসে দূর হয়ে যাবে। কিন্তু আম অবশ্যই পরিমাণ মতো সেবন করতে হবে। যদি অতিরিক্ত পরিমাণে আম সেবন করেন তাহলে এটি আপনার হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যে কারণে নিয়মিত আম খেলে এক থেকে দুইটা আমের বেশি খাবেন না।
- এছাড়াও অ্যানিমিয়ার মত রোগ থেকে বেঁচে থাকতে আম অনেক বেশি সাহায্য করে। আমি খুব ভালো মাত্রায় আয়রন রয়েছে। যা কিনা আমাদের শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করে আমাদেরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে।
- এছাড়াও আম আমাদের স্মৃতিশক্তি মজবুত করতে সাহায্য করে থাকে। আমে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড রয়েছে যা কিনা আমাদের মেমোরি কে শার্প বানাতে সাহায্য করে।
- যারা ডায়াবেটিসের রোগী রয়েছেন তারা সীমিত আকারে আম সেবন করতে পারেন। যদিও এটা ডায়াবেটিসের রোগীদের কোন ক্ষতি করে না। ডায়াবেটিসে রোগীদের জন্য আমের পাতাও খুবই ভালো। ডায়াবেটিসের রোগীরা যদি নিয়মিত একটা করে আমের পাতা সেবন করেন তাহলে ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
- এছাড়াও আপনার যদি চোখের সমস্যা থেকে থাকে যেমন চোখে দেখেন না বা চোখে চশমা পরা লাগে অথবা ড্রাই আইসের সমস্যা থাকে তাহলে আপনি আমের জুস বানিয়ে সেবন করতে পারেন। আমি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ যেটা কিনা আমাদের চোখ সম্পর্কিত সমসাকে দূরে রাখে।
- এছাড়াও আপনি যদি গরমের সময় আম সেবন করেন তাহলে এটা আপনাকে গরম থেকে মুক্তি দিবে। আপনার পেট সব সময় ঠান্ডা রাখবে। এছাড়াও শরীরের পানির ঘাটতিও দূর হয়ে যাবে।
পাকা আমের অপকারিতা
পাকা আমের অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। আর্টিকেলের এই পর্বে পাকা আমের অপকারিতা সম্পর্কে জানানো হয়েছে। আশা করছি আপনারা আর্টিকেলের এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়লে পাকা আমের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। আমের অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে সেটা আমরা সকলেই জানি।
তবে পুষ্টিগুণের পাশাপাশি আমের কিছু অপকারিতা রয়েছে যা হয়তো আমরা সকলেই জানিনা। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই পাকা আমের অপকারিতা সম্পর্কে। আমের নানা ধরনের উপকারিতা থাকলেও আম খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন একসাথে খুব বেশি আম খাওয়া ঠিক নয়।
কারণ পাকা আমে চিনির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তাই পাকা আম খাওয়ার ফলে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। যে কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে বেশি আম খাওয়া ক্ষতিকর। যাদের ডায়াবেটিকস রয়েছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রোগের মাত্রা বুঝে আম খাবেন।
একটি মাঝারি সাইজের আমি প্রায় তিন গ্রাম ফাইবার থাকে। তাই একসাথে বেশি আম খেলে বদহজম বা ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যে কারণে কিছুটা বিরতি নিয়ে আম খাওয়া উচিত। আশা করছি আপনারা পাকা আম খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
কাঁচা আমের উপকারিতা
অনেকেই কাঁচা আমের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান। আর্টিকেলের এই পর্বে কাঁচা আমের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি আপনারা যদি আর্টিকেলের এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে কাঁচা আমের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই আর দেরি না করে চলুন আমরা কাঁচা আমের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।
গ্রীষ্মকালে বাহিরে তীব্র রোদের তাপ থাকে। এর সঙ্গে গা পোড়ানো গরম। এই সময় কাঁচা আমের এক গ্লাস শরবত সারা শরীরে এনে দিতে পারে প্রশান্তি। গ্রীষ্মকালে বাজারে প্রচুর পরিমাণে কাঁচা আম পাওয়া যায় তখন দাম ও হাতের নাগালে থাকে। যে কারণে কাঁচা আমের শরবতে প্রাণটাকে শীতল আর শরীরটাকে চাঙ্গা করার সুযোগ রয়েছে।
পুষ্টিবিদরা বলেন কাঁচা বা পাকা দুই ধরনের আমই শরীরের জন্য ভালো। আম কাঁচা পাকা যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন এর কোন নেতিবাচক দিক নেই বললেই চলে। কাঁচা আম বা আমের রসে পটাশিয়াম থাকায় প্রচন্ড গরমে তার শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। কাঁচা আমের গুণ প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদরা বলেন ১০০ গ্রাম কাঁচা আমের পটাশিয়াম থাকে ৪৪ ক্যালোরি। এছাড়াও ৫৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
ওজন কমায় কাঁচা আম: যারা ওজন কমাতে বা শরীরের বাড়তি ক্যালোরি খরচ করতে চান তাদের জন্য এখন আদর্শ ফল কাঁচা আম। পাকা মিষ্টি আমের চেয়ে কাঁচা আমের চিনি কম থাকে বলে এটি ক্যালোরি খরচের সহায়তা করে।
যকৃতের সমস্যা দূর করে: যকৃতের রোগ নিরাময়ে প্রাকৃতিক বন্ধু হতে পারে কাঁচা আম। কয়েক টুকরা কাঁচা আম চিবানো হলে পিত্ত রস বৃদ্ধি পায় এতে যকৃতের স্বাস্থ্য ভালো হয় এবং অন্ত্রের জীবাণু সংক্রমণ দূর হয়।
রক্তের সমস্যা দূর করে: কাঁচা আমের আয়রন বা লৌহ থাকায় রক্তস্বল্পতা সমাধানে বেশ উপকারী।
ঘামাচি প্রতিরোধ করে: গরমের সময় ঘামাচি একটি অস্বস্তিকর ব্যাপার। ঘামাচির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সবচেয়ে ভালো উপায় হল কাঁচা আম খাওয়া। কাঁচা আমের এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা সান স্ট্রোক হতে বাধা দেয়।
শরীরে লবণের ঘাটতি দূর করে: গরমে অতিরিক্ত ঘামে শরীর থেকে সোডিয়াম ক্লোরাইড ও লৌহ বের হয়ে যায়। কাঁচা আমের জুস শরীরের এই ঘাটতি দূর করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: খাদ্য হজমে সাহায্য করে কাঁচা আম। অন্ত্রকে পরিষ্কার করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয় কাঁচা আম। টুকরা করে আম কেটে লবণ মাখিয়ে তা মধু সহযোগে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: কাঁচা আম খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যে কারণে সিজনে প্রতিদিন কাঁচা আম খেতে পারেন।
শরীর ঠান্ডা থাকে: কাঁচা আমের পটাশিয়াম থাকার কারণে তার শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। এ কারণে গরম কালে শরীরে ঘাম কম হয়। এছাড়াও গরমে ক্লান্তি ও দূর হয়।
চুল ও ত্বক উজ্জ্বল করে: প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে তা চুল ও ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।
হজম ভালো হয়: গ্যালিক এসিড থাকার কারণে তা হজম প্রক্রিয়াকে গতিশীল করে।
সতর্কতা:
কথায় আছে অতিরিক্ত কোন কিছু খাওয়াই ভালো নয়। কাঁচা আম খাওয়ার ক্ষেত্রেও বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচা আম খেলে ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কাঁচা আমের কস মুখে লাগলে মুখ, গলা ও পেটে সংক্রমণ হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে অবশ্যই সাবধান থাকবেন।
আমের উপকারিতা ও অপকারিতা
আমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। আর্টিকেলের এই পর্বে আমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি আপনারা যদি আর্টিকেলের এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
তাই আর দেরি না করে চলুন আমরা আমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই। আমকে ফলের রাজা বলা হয়ে থাকে। আম খেতে খুব সুস্বাদু হয় তার সাথে সাথে আমি প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।আম খেলে শরীরের খনিজ উপাদানের ঘাটতি অনেকটাই পূরণ হয়। কারণ আমি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম।
যেকোনো পরিশ্রমের পর আম খেলে দ্রুত শক্তি ফিরে পাওয়া যায়। এছাড়াও শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়া লবণের ঘাটতিও পূরণ করে আম। শিশুদের স্মৃতিশক্তি বর্ধক হিসেবে আম খেতে দেওয়া যেতে পারে। কারণ আমের গ্লুটামিক এসিড মস্তিষ্কের কোষ উজ্জীবিত করে। ফলে শিশুদের স্মৃতিশক্তির পাশাপাশি মনোযোগ ও বাড়ে। সেই সাথে মস্তিষ্কের বাড়তি চাপ কমাতেও আম সাহায্য করে।
আমের উপকারিতা
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: আমের ভিটামিন সি, এর এবং অন্যান্য এসেন্সিয়াল নিউট্রেইন্টস থাকে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে: ডায়াবেটিস হলে পাঁচ থেকে ছয়টা আম পাতা পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে ওই পাতাযুক্ত পানি সারারাত রেখে পরের দিন সকালে ছেকে নিয়ে পান করুন।
ঘুমের সমস্যায়: রাতে ভালো ঘুম না হলে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধের সঙ্গে একটা পাকা আম খান উপকার পাবেন।
ওজন বৃদ্ধি করতে: রোগা পাতলা মানুষ যদি ওজন বৃদ্ধি করতে চান তাহলে প্রতিদিন দুই থেকে তিনটে পাকা আম খান তারপরে এক গ্লাস দুধ খেয়ে নিন।
ওজন কমাতে: প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার আছে যা মেটাবলিজম বাড়িয়ে হজম ক্ষমতা বাড়ায়। কাঁচা আমের চীনের পরিমাণ কম থাকে তাই এটি শরীরে মেদ বৃদ্ধি করেনা ফলে ওজন কমে।
হার্ট ভালো রাখতে: আমে ফাইবার, ভিটামিন সি, প্যাকটিন, সিরাম আছে যেগুলো কোলেস্টরেল কম করতে সাহায্য করে। বিশেষভাবে এলডিএল (ক্ষতিকর) কোলেস্টরেল কমায় এইচডিএল (ভালো) কোলেস্টরেল বাড়ায় যা সুস্থ হার্টের জন্য প্রয়োজন।
হজমে সাহায্য করে: আমি ফাইবার থাকার জন্য আম খেলে হজম ভালো হয় এবং স্টমাক জনিত রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
দৃষ্টি শক্তি বাড়ায়: আমি অধিক মাত্রায় ভিটামিন এ থাকার জন্য এটা চোখের ড্রইনেস কম করে দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধে: আমি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, astragalin,gallic acid,isoqueretrin,methyl gllato প্রোপার্টি থাকার জন্য আম খেলে ব্রেস্ট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার এবং প্রটেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়।
কিডনিতে পাথর: আমে ভিটামিন বি৬ এবং পটাশিয়াম থাকে, তাই আম কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
রক্তস্বল্পতা দূর করতে: প্রতিদিন এক গ্লাস আমের জুস খেলে রক্তস্বল্পতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
অ্যাজমা প্রতিরোধে: আমি থাকা বিটা ক্যারোটিন অ্যাজমা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও গ্রীষ্মকালের এই ফল আমাদের স্ট্রোক থেকে বাঁচতে সাহায্য করে থাকে।
ত্বকের উপকারিতায়: আম বডি স্ক্রাব করার জন্য ব্যবহার করা হয়। ত্বককে মসৃণ, কোমল ও উজ্জ্বল করতে আমের পেস্ট তৈরি করে তার সঙ্গে অল্প মধু আর দুধ মিশিয়ে মাসাজ করুন, ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে ভালো করে ধুয়ে নিন।
মহিলাদের জন্য: আমি প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ক্যালসিয়াম অধিক মাত্রায় থাকে তাই মহিলাদের আম অবশ্যই খাওয়া উচিত।
আমের অপকারিতা
আমের উপকারিতা তো আমরা অনেক জানলাম। এবার আমরা জানবো আমের অপকারিতা সম্পর্কে। চলুন তাহলে আমরা জেনে নেই আমের কি কি অপকারিতা রয়েছে। সবার প্রথমে যারা ডায়াবেটিসের রোগী রয়েছে তাদের জন্য বেশি মাত্রায় আম সেবন করা কোনভাবেই উচিত নয়। কারণ আমি সুগার রয়েছে, যা কিনা ডায়াবেটিসের রোগীদের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
এছাড়াও যাদের হজমশক্তি জনিত সমস্যা রয়েছে ও আমাশার সমস্যা রয়েছে তারা বেশি মাত্রায় আম সেবন করবেন না। খুব সীমিত মাত্রায় আম সেবন করবেন। সেই সাথে যাদের অ্যালার্জি সমস্যা রয়েছে আম খেলে এলার্জি বাড়ে তারা আগে আম খেয়ে দেখবেন, যদি এলার্জি বাড়ে তাহলে আম খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
সবকিছুর মূলে রয়েছে হচ্ছে আপনি সীমিত আকারে আম সেবন করবেন। যদি বেশি মাত্রায় আম সেবন করেন তাহলে এটি আপনার শরীরের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। আশা করছি আপনারা আমের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
লেখকের মন্তব্য - আমের উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনি আমের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা,আম খাওয়ার নিয়ম,পাকা আমের উপকারিতা,পাকা আমের অপকারিতা,কাঁচা আমের উপকারিতা,আমের উপকারিতা ও অপকারিতা,আমের অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন।
চেষ্টা করব আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী আরো নতুন নতুন আর্টিকেল আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার। প্রতিদিন নিত্য নতুন ও তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো দিয়ে রাখুনা। আপনার কোন পরামর্শ বা মতামত থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url