ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা - গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা

মধু খাওয়ার উপকারিতাডাবের পানি আসলে আল্লাহ প্রদত্ত রং বিহীন একটি চমৎকার তরল পানীয়। যা আমাদেরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে এবং আমাদের শরীরে বেশ কিছু মিনারেলস দিয়ে থাকে। আজ আমরা জানব ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা - গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে।
ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা - গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা
ডাবে যে পরিমাণ পটাশিয়াম রয়েছে তা যে কোন পটাশিয়াম ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালেন্স রোগীদের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।

পোস্ট সূচিপত্রঃআজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবো। তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই।

ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা - ভূমিকা

ডাব আমাদের দেশের অতি পরিচিত একটি ফল। ডাব এ রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে সোডিয়াম ক্লোরাইড এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান। ডাবের উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম রয়েছে। এই উচ্চ মাত্রায় পটাশিয়াম থাকার কারণে বমি হলে আমাদের শরীর থেকে যে প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান টা বের হয়ে যায় ডাব তার ঘাটতি পূরণ করতে সহায়তা করে। 

এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে ডাব সম্পর্কে যে বিষয়গুলো জানতে পারবো তা হল-
ডাবের পানিতে কি থাকে,ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম,ডাবের পানি কখন খাওয়া ভালো,ডাবের পানি সংরক্ষণের উপায়,খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা,গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা,ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা,ডাবের পানির উপকারিতা,ডাবের পানির অপকারিতা সম্পর্কে। বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ডাবের পানিতে কি থাকে

ডাবের পানিতে কি কি থাকে অর্থাৎ কি কি পুষ্টি উপাদান থাকে সেই সম্পর্কে জানব আর্টিকেলের এই পর্বে। তাই আর দেরি না করে চলুন আমরা জেনে নেই ডাবের পানিতে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে সেই সম্পর্কে।
অতীব পুষ্টিগুণে ভরপুর ডাবের পানি যেমন তৃষ্ণা মেটাতে সাহায্য করে তেমনি রয়েছে এর পুষ্টিগুণ। বাংলাদেশে ডাবের পানি খুবই সহজলভ্য হলেও এর পুষ্টিগুণের কথা অনেকেই জানেন না। এখন আমরা জানবো ডাবের পানিতে কি কি পুষ্টি উপাদান থাকে সেই সম্পর্কে।
  • প্রতি ১০০ গ্রাম ডাবের পানিতে জলীয় অংশ ৯৫ গ্রাম
  • মোট খনিজ পদার্থ রয়েছে ০.৩ গ্রাম
  • শর্করা রয়েছে ২.৪ গ্রাম
  • আমিষ রয়েছে ২.৩ গ্রাম
  • চর্বি রয়েছে ০.১ গ্রাম
  • ক্যালসিয়াম রয়েছে ১৫ মিলিগ্রাম
  • আয়রন রয়েছে ০.১ মিলিগ্রাম
  • ফসফরাস রয়েছে ০.০১ মিলিগ্রাম
  • এছাড়াও ভিটামিন বি১ রয়েছে ০.১১ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন বি২ রয়েছে ০.০২ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন সি রয়েছে ৫ মিলিগ্রাম
  • এবং খাদ্য শক্তি রয়েছে ২৩ কিলো ক্যালোরি

ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম

অনেকেই ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান? কম বেশি আমরা ডাবের পানি সবাই খাই তবে খাওয়ার সঠিক নিয়মটা আমরা অনেকেই জানিনা। তাই আর্টিকেলের এই পর্বে ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আপনারা যদি ডাবের পানি খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানতে চান তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনাদের জন্য। 

তাই আর দেরি না করে চলুন আমরা জেনে নেই ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। প্রথমেই বলছি কচি ডাবের পানিতে রয়েছে সবচেয়ে বেশি নিউট্রেশিয়ান। সবুজ কচি ডাবের পানিতেই আসলে পটাশিয়ামের ঠাসা এবং তাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ মিনারেলস থাকে কিন্তু ক্যালরির পরিমাণ অনেক কম। বলা হয় এক গ্লাস কচি ডাবের পানি থেকে আপনি ৩০ কিলো ক্যালরি পাবেন। 

ডাবের পানি খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো সকালের দিকে অথবা ১১ টা থেকে ১২:০০ টার মধ্যে আপনি ডাবের পানি খেতে পারেন। যাদের ডাবের পানি খেলে গ্যাস হয় তারা কোন কিছু খাওয়ার আধা ঘন্টা পরে খেলে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। তারা খালি পেটে ডাবের পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এ

ছাড়াও সন্ধ্যার পরে ডাবের পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। যাদের ঠান্ডা জনিত সমস্যা রয়েছে তারা ডাবের পানিকে রুম টেম্পারেচারে এনে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ অনেক সময় খুব বেশি ডাব থেকে বের করে আনার পরে ঠান্ডা থাকলে সেটি খেলে অনেক সময় ঠান্ডা প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। 

কিন্তু ডাবের পানি আপনাকে ঠান্ডা লাগাবে এটা আসলে তা নয়। আসলে এর টেম্পারেচারের উপর ডিপেন্ড করবে আপনার ঠান্ডা লাগবে কিনা। আশা করছি আর্টিকেলের এই পর্বটি পড়ে আপনি ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

ডাবের পানি কখন খাওয়া ভালো

অনেকেই আছেন যারা জানতে চান ডাবের পানি কখন খাওয়া ভালো সেই সম্পর্কে। আপনাদের সুবিধার্থে আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে ডাবের পানি কখন খাওয়া ভালো সেই সম্পর্কে। আপনি যদি ডাবের পানি কখন খাওয়া ভালো সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

ডাবের পানির উপকারিতা পেতে হলে অবশ্যই কচি ডাবের পানি খেতে হবে। কারণ কচি ডাবের পানিতে রয়েছে সবচেয়ে বেশি পুষ্টিগুণ। কারণ সবুজ কচি ডাবের পানিতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাশিয়াম সহ সকল পুষ্টি উপাদান।তবে ডাবের পানি খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো সকালের দিকে অথবা ১১ টা থেকে ১২:০০ টার মধ্যে আপনি ডাবের পানি খেতে পারেন। 

এছাড়াও আপনি চাইলে যে কোন সময় ডাবের পানি খেতে পারেন। তবে ডাবের পানি থেকে সবচেয়ে বেশি উপকারিতা পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই সকালের দিকে ডাবের পানি গ্রহণ করতে হবে। আশা করছি আপনি ডাবের পানি কখন খাওয়া ভালো সেই সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

ডাবের পানি সংরক্ষণের উপায়

অনেকেই ডাবের পানি সংরক্ষণের উপায় সম্পর্কে জানতে চাই। তাই তাদের সুবিধার্থে আর্টিকেলের এই পর্বে ডাবের পানি সংরক্ষণের উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি আপনারা যদি আর্টিকেলের এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে ডাবের পানি সংরক্ষণের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। 

তাই আর দেরি না করে চলুন আমরা জেনে নেই ডাবের পানি সংরক্ষণের উপায় সম্পর্কে। একটি ডাব কাটার পরে ডাবের পানি বাইরে দুই থেকে তিন ঘন্টার বেশি না রাখাই ভালো। কারণ বাইরে থাকলে ডাবের পানি নষ্ট হতে শুরু করে এবং এর নিউট্রিশন ভ্যালু নষ্ট হতে শুরু করে। 

তাই যদি আপনি ডাব কাটার পর দুই ঘণ্টার মধ্যে না খাওয়া হয় তবে সেই ডাবের পানি আপনি অবশ্যই রেফ্রিজারেটরে রাখবেন। অবশ্যই ঢেকে রাখতে হবে কোন এয়ার টাইট কন্টেইনারে অথবা পটে। কিন্তু অবশ্যই মনে রাখবেন এক থেকে দুই দিনের বেশি সেটি রাখা যাবে না। 

এছাড়াও ডাবের পানি ঠান্ডা অবস্থায় খেলে ঠান্ডা কাশি সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই চেষ্টা করবেন ফ্রেশ ফ্রেশ ডাবের পানি যদি কখনো পান সেটি সাথে সাথে খেয়ে নিতে। আশা করছি আপনারা ডাবের পানি সংরক্ষণের উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা

অনেকেই আছেন যারা খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান। তাই তাদের সুবিধার্থে আর্টিকেলের এই পর্বে খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি আপনারা যদি খালি পেটে ডাবের পানি পান করার উপকারিতা জানেন তাহলে আপনারাও খালি পেটে ডাবের পানি পান করবেন। 

তাই আর দেরি না করে চলুন আমরা খালি পেটে ডাবের পানি পানের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই। খালি পেটে ডাবের পানি খেয়েই দেখুন, মিলবে দারুন উপকার। সারা বছর ধরে যদি নিয়ম করে ডাবের পানি খাওয়া যায় তাহলে একাধিক রোগ শরীরের ধারের কাছেও আসতে পারে না। 

শুধু তাই নয় ডাবের পানিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যামাইনো এসিড, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং জিংক নানাভাবে শরীর গঠনে ভূমিকা পালন করে থাকে। যেমন ধরুন হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।ডাবের পানিতে থাকা ক্যালসিয়াম হাড়কের শক্ত পোক্ত করে তোলার পাশাপাশি হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
দেহের প্রতিটি কোনায় উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান কে বের করে দিতে এই প্রাকৃতিক উপাদানটির কোন বিকল্প হয় না বললেই চলে। ডাবের পানিতে থাকা অ্যামাইনো এসিড এবং ডায়েটারি ফাইবার ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

প্রচুর মাত্রায় পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকার কারণে ডাবের পানি কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে।ডাবের পানি শরীরে প্রবেশ করা মাত্রই পানির ঘাটতি মিটতে থাকে।ডাবের পানিতে রয়েছে সাইটোকিনেস নামের একটি অ্যান্টি এজিং উপাদান যা শরীরের ওপর বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।

ডাবের পানিতে বেশ কিছু উপকারী এনজাইম হজম ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মেটাবলিজম এর উন্নতিতেও সহায়তা করে থাকে।রাইবোফ্লোবিন, নিয়াসিন, থিয়ামিনের মত উপকারী উপাদানে ভরপুর ডাবের পানি প্রতিদিন পান করলে শরীরের শক্তি এতটা বৃদ্ধি পায় যে জীবাণুরা কোন ভাবে ক্ষতি করার সুযোগ পায় না।

শরীরের বাজে কোলেস্টেরল এলডিএল এর পরিমাণ কমিয়ে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে ডাবের পানির কোন বিকল্প নেই।ডিহাইড্রেশন এর কারণে মাথা যন্ত্রণা বা মাইগ্রেনের অ্যাটাক হওয়ার মতো ঘটনা ঘটলে শীঘ্রই এক গ্লাস ডাবের পানি পান করবেন। আশা করছি আপনারা খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে অনেক গর্ববতী মায়েরাই জানতে চান। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আর্টিকেলের এই পর্বে গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি আপনারা যদি আর্টিকেলের এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে গর্ব অবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। 

চলুন তাহলে আর দেরি না করে আমরা গর্ব অবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই। গর্ভাবস্থায় ডাব একটি অপরিহার্য পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার। গর্ভবতী মা এবং বাচ্চার সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য একে সুপার ফুডও বলা হয়। ডাবের লিউরিক এসিড হবু মায়ের বুকের দুধের সঞ্চালন বাড়ায়। এছাড়াও গর্ভকালীন মায়ের জয়েন্টের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। 

এছাড়াও ডাবে থাকা ভিটামিন ই গর্ভবতী মায়েদের জন্য অবশ্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। সুস্থ সবল বাচ্চা জন্মদান এবং গর্ভধারণকালীন অসুস্থতা দূরে রাখতেও ডাবের গুরুত্ব অপরিসীম। ডাবের পানি শরীরে প্রস্রাবের পরিমাণ এবং বেগ বাড়িয়ে দেয় ফলে যেসব ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রস্রাবের সংক্রমণ ঘটায় তারাও প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। 

গর্ভবতী নারীর প্রচুর পরিমাণে ইলেকট্রোলাইটের প্রয়োজন পড়ে। ডাবের পানির সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়াম শরীরের প্রয়োজনীয় চার্জ দিয়ে থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্য গর্ব অবস্থায় একটি প্রচলিত সমস্যা। এসময় আঁশ সমৃদ্ধ ডাবের পানি কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে সাহায্য করে। অনেক গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভকালীন সময়ে হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। 

ডাবের পানি উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে দিয়ে হাইপারটেনশন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও ডাবের পানি সঠিক ওজন ধরে রাখতে সাহায্য করে। ডাবের পানিতে জিরো ফ্যাট ও কোলেস্টরেল আছে। তাই ডাবের পানি পান করলে ওজন বৃদ্ধি হবার কোন ভয় নেই। তাই নির্ভয়ে প্রতিদিন এটি পান করতে পারেন। তবে ডাবের পানি পান করার সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন তা হল। 

খুব বেশি ডাবের পানি পান করবেন না, দিনে দুই গ্লাস পান করাই যথেষ্ট। গর্ভাবস্থায় বিশুদ্ধ পানি প্রধান পানিয় হতে হবে। ডাবের পানি এর বিকল্প হওয়া উচিত নয়। গর্ভকালীন সময়ে নিয়মিত ডাবের পানি পান করুন তবে চেষ্টা করবেন টাটকা ডাবের পানি পান করতে। বাসি বা ফ্রিজে রাখা ডাবের পানি পান করা থেকে বিরত থাকবেন। 

কচি এবং সবুজ ডাব বাছাই করুন, ডাব কাটার কিছুক্ষণের মধ্যে পান করুন। আপনার ট্রিন্যাট এলার্জি থাকলেও ডাবের পানি পান করার ক্ষেত্রে এলার্জি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে এড়িয়ে যাওয়াটাই ভালো হবে। আপনার গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিকস থাকলে কিংবা আগে থেকেই ডাইবেটিস হলে ডাবের পানি কম পান করুন। আশা করছি আপনারা গর্ব অবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা

ডাব আমাদের দেশের অতি পরিচিত একটি ফল। ডাব এ রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে সোডিয়াম ক্লোরাইড এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান। ডাবের উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম রয়েছে। এই উচ্চ মাত্রায় পটাশিয়াম থাকার কারণে বমি হলে আমাদের শরীর থেকে যে প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান টা বের হয়ে যায় ডাব তার ঘাটতি পূরণ করতে সহায়তা করে। 

এ কারণেই বমিটিং, ডায়রিয়া ও তীব্র গরমে ডাব উল্লেখযোগ্য পানীয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ডাবে যে পরিমাণ পটাশিয়াম রয়েছে তা যে কোন পটাশিয়াম ইলেকট্রোলাইট ইম ব্যালেন্স রোগীদের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। ডাবের মধ্যে পর্যাপ্ত খনিজ লবণ থাকার কারণে যেকোনো বয়সের মানুষ বিশেষ করে শিশু থেকে বয় বৃদ্ধ পর্যন্ত সকলেই তা গ্রহণ করতে পারে। 

ডাবের পটাশিয়াম থাকার কারণে তা আমাদের ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ডাব আমাদের দেহকোষ গুলোকে সতেজ ও সজীব রাখতে সাহায্য করে। রক্ত চলাচল কে বাড়িয়ে দেয় এবং বিশুদ্ধ অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায়। যার কারনে ত্বকের প্রতিটি কোষ হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। অনেকের ধারণা ডাব ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারবে না। 

ধারণাটি মোটেও সত্যি নয়। ভাবে কোন চর্বি বা কোলেস্টরেল না থাকার কারণে ডায়াবেটিক রোগীরা অতি সহজেই ডাব গ্রহণ করতে পারবে। কিন্তু উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম থাকার কারণে অনেক কিডনি রোগী বা দীর্ঘদিন ধরে যারা কিডনি রোগে আক্রান্ত, ডায়ালাইসিস চলছে এ ধরনের রোগীরা ডাবের পানি গ্রহণ করতে পারবেন না। 

কারণ পটাশিয়াম থাকার কারণে কিডনি নেফ্রাইটিস এর উপরে এই পটাশিয়াম জমা হয়ে চাপ বাড়াবে। ফলে শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ গুলো নিষ্কাশনে বাধা পাবে। ডাবের পানিতে অন্যান্য খনিজ উপাদানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আরেকটি উপাদান হচ্ছে ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম আমাদের হাড়ের গঠনকে মজবুত করে রাখতে সহায়তা করে। যা আমাদের ত্বক, চুল ও নখের সৌন্দর্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

ডাবের পানির এত গুনাগুন অনেকেই জানেন না। কোন কারণ ছাড়াই যদি কেউ ডাবের পানি নিজের অজান্তেই এক গ্লাস গ্রহণ করেন তাও তিনি পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম এর ভারসাম্য রক্ষা করে শরীরে একটি ইলেকট্রনিক সমতা আনতে পারেন। যার ফলে বিভিন্ন অঙ্গ গুলোকে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা করে সুস্থ সবল ও স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করতে পারে।

ডাবের পানির উপকারিতা

অনেকেই আছেন ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান। তাদের সুবিধার্থে আর্টিকেলের এই পর্বে ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে বিশেষভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি আপনারা যদি আর্টিকেলের এই পর্বটি পড়েন তাহলে ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে।
হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: ডাবের পানিতে থাকা ক্যালসিয়াম হাড়কের শক্ত পোক্ত করে তোলার পাশাপাশি হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ডাবে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম ও এক্ষেত্রে নানা ভাবে সাহায্য করে থাকে।

শরীরকে বিষমুক্ত করে: দেহের প্রতিটি কোনায় উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান কে বের করে দিতে এই প্রাকৃতিক উপাদানটির কোন বিকল্প হয় না বললেই চলে। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস ডাবের পানি পান করলে নানা ধরনের রোগ যেমন শরীরের ধারের কাছেও ঘেষতে পারে না তেমনি সার্বিকভাবেও শারীরিক ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে: ডাবের পানিতে থাকা অ্যামাইনো এসিড এবং ডায়েটারি ফাইবার ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এ কারণেই রোজ ডায়েটে ডাবকে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

কিডনির ক্ষমতা বাড়ে: প্রচুর মাত্রায় পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকার কারণে ডাবের পানি কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে। সেইসঙ্গে শরীরে উপস্থিত টক্সিক উপাদানদের ইউরিন এর সঙ্গে বের করে দিয়ে নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমায়।

পানির ঘাটতি মেটে: ডাবের পানি শরীরে প্রবেশ করা মাত্রই পানির ঘাটতি মিটতে থাকে। সেই সঙ্গে এতে থাকা ইলেকট্রোলাইট কম্পোজিশন, ডায়রিয়া, বমি এবং অতিরিক্ত ঘামের পর শরীরের ভিতরে খনিজের ঘাটতি মেটাতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে।

শরীর এবং ত্বকের বয়স কমে: ডাবের পানিতে রয়েছে সাইটোকিনেস নামের একটি অ্যান্টি এজিং উপাদান যা শরীরের ওপর বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। সেই সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে।

ওজন কম করে: ডাবের পানিতে বেশ কিছু উপকারী এনজাইম হজম ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মেটাবলিজম এর উন্নতিতেও সহায়তা করে থাকে। ফলে খাবার খাওয়া মাত্র তা এত ভালোভাবে হজম হয়ে যায় যে শরীরে হজম না হওয়া খাবার মেদ হিসেবে জমার সুযোগ পায় না ফলে ওজন কমতে শুরু করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: রাইবোফ্লোবিন, নিয়াসিন, থিয়ামিনের মত উপকারী উপাদানে ভরপুর ডাবের পানি প্রতিদিন পান করলে শরীরের শক্তি এতটা বৃদ্ধি পায় যে জীবাণুরা কোন ভাবে ক্ষতি করার সুযোগ পায় না। সেই সঙ্গে ডাবের পানিতে এন্টিভাইরাল, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল নানাবিধ সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে ও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: শরীরের বাজে কোলেস্টেরল এলডিএল এর পরিমাণ কমিয়ে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে ডাবের পানির কোন বিকল্প নেই। দেহে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমাতেও ডাবের পানি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

মাথা যন্ত্রণার প্রকোপ কমে: ডিহাইড্রেশন এর কারণে মাথা যন্ত্রণা বা মাইগ্রেনের অ্যাটাক হওয়ার মতো ঘটনা ঘটলে শীঘ্রই এক গ্লাস ডাবের পানি পান করবেন। এমনটা করলে দেখবেন নিমিষেই কষ্ট কমে যাবে। প্রাকৃতিক উপাদানটিতে ম্যাগনেসিয়াম এই ধরনের শারীরিক সমস্যার চিকিৎসায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

ডাবের পানির অপকারিতা

এবার আমরা জানবো ডাবের পানির অপকারিতা সম্পর্কে। কারণ ডাবের পানির উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা রয়েছে। যারা ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাদের ডাবের পানির অপকারিতা সম্পর্কেও জানা উচিত। তাই আর দেরি না করে চলুন আমরা জেনে নেই ডাবের পানির অপকারিতা সম্পর্কে।
  • ডাবের পানি ক্যালরি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। যারা শরীরের ওজন কমাতে চান তাদের ক্ষেত্রে ডাবের পানি না খাওয়াই ভালো। কারণ ডাবের পানি শরীরের ক্যালরির মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।পানীয় বা ফলের রসের তুলনায় ডাবের পানিতে চিনির পরিমাণ অনেকটাই কম থাকে। তবুও নিমিষেই বেড়ে যেতে পারে ক্যালরি।
  • ডাবের পানি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ডাবের পানিতে চিনির পরিমাণ কম থাকলেও কার্বোহাইড্রেট ও ক্যালরির পরিমাণ অধিক মাত্রায় থাকে। যার ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
  • ডাবের পানি প্রতিদিন খাওয়া উচিত নয়। ডায়াবেটিসের রোগীরা নিয়মিত ডাবের পানি খেলে ডায়াবেটিসের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তাই ডায়াবেটিকস রোগীদের ক্ষেত্রে ডাবের পানি এড়িয়ে চলাই ভালো।
  • ডাবের পানি নিয়মিত খেলে কিডনি রোগ হয় না। আবার যাদের কিডনি রোগ রয়েছে তাদের ডাবের পানি খাওয়া যাবে না। কারণ কিডনি অকার্যকর হলে শরীরের অতিরিক্ত পটাশিয়াম শরীর থেকে বের হয় না। ফলে ডাবের পটাশিয়াম ও দেহের পটাশিয়াম এক হয়ে কিডনি ও হৃদপিণ্ড দুটোই অকার্যকর করে দেয়।

লেখকের মন্তব্য - ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনি হয়তো ডাবের পানিতে কি থাকে,ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম,ডাবের পানি কখন খাওয়া ভালো,ডাবের পানি সংরক্ষণের উপায়,খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা,গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা,ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা,ডাবের পানির উপকারিতা,ডাবের পানির অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন।

চেষ্টা করব আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী আরো নতুন নতুন আর্টিকেল আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার। প্রতিদিন নিত্য নতুন ও তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো দিয়ে রাখুনা। আপনার কোন পরামর্শ বা মতামত থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url