টিয়া পাখির বৈশিষ্ট্য - টিয়া পাখির খাবার
ফাউমি মুরগি পালন পদ্ধতিপাখি লাভারদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল টিয়া পাখি। টিয়া পাখির সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে কথা বলার কারণে। আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানবো টিয়া পাখির বৈশিষ্ট্য - টিয়া পাখির খাবার সম্পর্কে।
টিয়া পাখি বন্ধুসুলভ আচরণ করার মাধ্যমে মানুষের মন জয় করে নেয়। যে কারণে অধিকাংশ মানুষই টিয়া পাখিকে খুব পছন্দ করে।
পোস্ট সূচিপত্রঃচলুন তাহলে আর দেরি না করে আমরা টিয়া পাখি সম্পর্কে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নেই।
টিয়া পাখির বৈশিষ্ট্য - ভূমিকা
অনেকেই আছেন যারা শখের বসে টিয়া পাখি পোষেন। কারণ টিয়া পাখি খুবই জনপ্রিয় এবং পোষ মানে খুব সহজে। যে কারণে টিয়া পাখির চাহিদা সকলের কাছেই বেশি। আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে টিয়া পাখি সম্পর্কে যে বিষয়গুলো জানব তা হল-
টিয়া পাখি পালন পদ্ধতি,সবুজ টিয়া পাখি কত বছর বাঁচে,টিয়া পাখির বাসস্থান - টিয়া পাখির বাসার ধরন,টিয়া পাখির শারীরিক গঠন,টিয়া পাখির খাবার,টিয়া পাখির উপকারিতা,টিয়া পাখির বৈশিষ্ট্য- সবুজ টিয়া পাখির বৈশিষ্ট্য,টিয়া পাখির প্রজনন কাল,টিয়া পাখির স্বভাব সম্পর্কে। বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
টিয়া পাখি পালন পদ্ধতি
আপনি কি টিয়া পাখি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে টিয়া পাখি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে। তাই আর দেরি না করে চলুন আমরা টিয়া পাখির পালন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা শখের বসে নানা ধরনের পাখি পোষেন।
সকল পাখির মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হলো টিয়া পাখি। টিয়া প্রজাতির পাখিরা খুবই পরিচিত এবং জনপ্রিয়। সবুজ টিয়া সাবলীলভাবে পোশা প্রাণী হিসেবে ধরা যায়। এই সবুজ টিয়া কথা শেখার পর মানুষের মতই কথা বলতে পারে। এরা সাধারণত বন জঙ্গল, জলাশয় অঞ্চল, বিস্তীর্ণ লোকাল, পাতা ঝরা বন, বৃক্ষবোহুল ইত্যাদি অঞ্চলে বসবাস করে।
আপনি যদি টিয়া পাখি খাচায় পুষতে চান সে ক্ষেত্রে টিয়া পাখির খাঁচার মাপ জানতে হবে। তবে বিভিন্ন ধরনের খাঁচার মাপ হয় টিয়া পাখি পোষার ক্ষেত্রে। বর্তমানে যে টিয়া পাখির খাঁচার মাপ দেব সেই খাঁচাতে এক জোড়া টিয়া পাখি অনায়াসে পালন করা যাবে। টিয়া পাখির খাঁচার মাপ হল ৪/৪/৪ ফিট। এর থেকেও যদি আপনি খাঁচার মাপ বড় করেন সেক্ষেত্রেও ভালো হবে তবে ছোট করা যাবে না।
এরপর টিয়া পাখির পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার নিশ্চিত করতে হবে। যেমন শস্যজাতীয় খাবার সিড মিক্স, ধান, সূর্যমুখীর বীজ, কুসুম বীজ, চিনা বা কাউন, কালোজিরা,ক্যানারি ইত্যাদি। শস্যজাতীয় খাবারের পাশাপাশি টিয়া পাখিকে নরম খাবারও দিতে হবে। নরম খাবারের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন শাক জাতীয় খাবার। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সবজি খাওয়ানো যেতে পারে।
এছাড়াও পাখির খাঁচাকে রোদ , বৃষ্টির পানি ও বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় থেকে দূরে রাখতে হবে। পাখির যত্ন নিশ্চিত করতে হবে। আপনি যদি টিয়ার বাচ্চা পালন করতে চান সেক্ষেত্রে বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হবে। কারণ এক থেকে দেড় মাসের বাচ্চাকে খাঁচাতে রাখা যাবে না। সে ক্ষেত্রে আপনাকে একটা কাগজের কার্টুনের মধ্যে কাঠের গুড়া দিয়ে সেখানে বাচ্চাকে রাখতে হবে।
এছাড়াও টিয়া পাখির বাচ্চার খাবার বাজারে কিনতে পাওয়া যায় সেই খাবারের সাথে পানি মিশিয়ে নরম করে বাচ্চাকে খাওয়াতে হবে। যখন বাচ্চার লোম গজিয়ে যাবে এরপর আপনি টিয়া পাখি বাচ্চাকে খাঁচায় দিতে পারেন। আশা করছি আপনি টিয়া পাখি পালনের পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
সবুজ টিয়া পাখি কত বছর বাঁচে
আপনি কি সবুজ টিয়া পাখি কত বছর বাঁচে সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে সবুজ টিয়া পাখি কত বছর বাঁচে সে সম্পর্কে। এই বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আর্টিকেলে এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
তাহলে আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই সবুজ টিয়া পাখি কত বছর বাঁচে সেই সম্পর্কে। সাধারণত অন্যান্য পাখি তুলনায় টিয়া পাখির গড় আয়ু অনেক বেশি। একটি সুস্থ সবল টিয়া পাখির গড় আয়ু সাধারণত ৯৫ বছর।
তাই আপনি যদি একটি টিয়া পাখিকে যত্ন সহকারে পালতে পারেন সে ক্ষেত্রে অনেক বছর পর্যন্ত সে টিয়া পাখি বেঁচে থাকবে। তবে আপনাকে ইনসিওর করতে হবে টিয়া পাখির যত্নে যেন কোন ত্রুটি না হয়। আশা করছি আপনি সবুজ টিয়া পাখির কত বছর বাঁচে সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
টিয়া পাখির বাসস্থান - টিয়া পাখির বাসার ধরন
আপনি কি টিয়া পাখির বাসস্থান সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে টিয়া পাখির বাসস্থান সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা টিয়া পাখির বাসস্থান সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন টিয়া পাখি বাসস্থান সম্পর্কে সঠিক তথ্য না জানার কারণে নর-মাদি জোড়া দেওয়ার সত্বেও ডিম বাচ্চা হয় না। তার প্রথম কারণ হচ্ছে টিয়া পাখি যে স্থানে রাখবেন সে স্থানের পরিবেশ সুন্দর ও নিরিবিলি হতে হবে। অনেকেই আবার ভাবতে পারেন সুন্দর পরিবেশ ও নিরিবিলি বলতে কেমন পরিবেশকে বুঝায়।
সেটা হচ্ছে আলো বাতাস যুক্ত, মানুষের চলাচল খুবই কম। সেই রকম স্থান নির্বাচন করতে হবে। তারপর খাঁচার সাইজ তুলনামূলক বড় হতে হবে অর্থাৎ টিয়া পাখির খাঁচার সাইজ ছোট হয়ে থাকলে যতই ভালোভাবে নর-মাদির জোড়া দিয়ে রাখেন না কেন ওরা কখনও ডিম বাচ্চা দিবে না।
তাই টিয়া পাখির জন্য খাচার আদর্শ সাইজ হল - ৩৬ ইঞ্চি/২৪ ইঞ্চি/২৪ ইঞ্চি এবং ব্রিডিং বক্স এর সাইজ - ১৮ ইঞ্চি/১৮ ইঞ্চি/২০ ইঞ্চি হতে হবে। একটা কথা মনে রাখবেন পাখিকে উড়ার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা দেয়ার চেষ্টা করবেন। এতে পাখির শারীরিক ব্যায়াম হবে এবং পাখির মেজাজ ভালো থাকবে। আশা করছি আপনি টিয়া পাখির বাসস্থান সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
টিয়া পাখির দাম
আপনি কি টিয়া পাখির দাম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে টিয়া পাখির দাম নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা টিয়া পাখির দাম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই। মানুষ শখের বসে পাখি পালন করে। সেই সকল পালিত পাখির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো টিয়া পাখি।
বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রজাতির টিয়া পাখি পাওয়া যায়। তবে কথা বলা টিয়া পাখির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তাই এই পাখির দাম অন্যান্য পাখির তুলনায় বেশি নিয়ে থাকে দোকানদাররা। বাংলাদেশের বাজারে ভালো মানের বাচ্চা টিয়া পাখির দাম নিয়ে থাকে ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
আপনি যদি এর থেকে একটু বড় টিয়া নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে ৬ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বাজেট রাখতে হবে এবং আপনি যদি কথা বলা টিয়া পাখি নিতে চান তাহলে আপনাকে ১৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বাজেট রাখতে হবে। আশা করছি আপনি টিয়া পাখির দাম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন
টিয়া পাখি কত প্রকার
টিয়া পাখি কত প্রকার আপনি কি সেই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আরটিকালের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে টিয়া পাখি কত প্রকার সেই সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা টিয়া পাখি কত প্রকাশের সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই। জনপ্রিয় পাখিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো টিয়া। বাংলাদেশে মোট ৬ প্রকার টিয়া পাখি পাওয়া যায় এগুলো হলো;
- বাসন্তী লটকন টিয়া
- মদনা টিয়া
- লালমাথা টিয়া
- চন্দনা টিয়া
- সবুজ টিয়া
- ফুলমাথা টিয়া
টিয়া পাখির শারীরিক গঠন
টিয়া পাখি শারীরিক গঠন সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে টিয়া পাখির শারীরিক গঠন সম্পর্কে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে আমরা টিয়া পাখি শারীরিক গঠন সম্পর্কে জেনে নেই।টিয়া পাখির দেহের গঠন ৪২-৪৫ সিন্টিমিটার হয়ে থাকে ও এদের ওজন ১৩০-১৫০ গ্রাম হয়।
এদের ঠোঁট লাল বর্ণের সামান্য পালক ব্যাতিতো পুরো পালক সবুজে আবৃত্ত থাকে। এদের ঠোঁট নিচের দিকে বড়শির মত বাঁকানো থাকে। নর ও মাদি টিয়ার গলার ভিন্ন রঙের দাগ থাকার কারণে কিছুটা চিন্তে পারা যায়। আশা করছি আপনি টিয়া পাখির শারীরিক গঠন সম্পর্কে জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন।
টিয়া পাখির খাবার
আপনি কি টিয়া পাখির খাবার সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে টিয়া পাখির খাবার সম্পর্কে। টিয়া পাখির খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আর্টিকেলের এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই টিয়া পাখির খাবার সম্পর্কে।টিয়া পাখিকে আমার দুই রকম খাবার দিয়ে থাকি। সিড মিক্সড ও নরম খাবার প্রথমেই আমরা সিড মিক্সড তৈরি নিয়মটা ভালোভাবে জেনে নেই। কারণ বাজারে খোলা সিড মিক্সডে প্রচুর ধূলাবালি থাকে।
যা আমার সখের টিয়া পাখির শরীর খারাপ করে দিতে পারে। তাই আমরা জেনে নেই কিভাবে ঘরে বসেই খুব সহজেই সিড মিক্সড তৈরি করবো। ১ (এক) কেজি সিড মিক্সড তৈরি করতে আমাদের প্রয়োজন হবে-
- ধান- ৩০০ গ্রাম
- সূর্য মুখীর বীজ- ২৫০ গ্রাম
- চিনা- ৫০ গ্রাম
- কুসুম বীজ- ১০০ গ্রাম
- ক্যানারী- ১০০ গ্রাম
- মিলেট- ১০০ গ্রাম
- কালো জিরা- ২৫ গ্রাম
আলাদা আলাদা ভাবে কিনে এনে ধূলাবালি ভালো ভাবে ঝেড়ে নিয়ে রৌদে শুকিয়ে সবগুলো একসাথে মিশিয়ে শুকনো কোন পাত্রে রেখে টিয়া পাখির খাবারের পাত্রে প্রতিদিন কিছু কিছু করে দিতে পারি।
আরও পড়ুনঃ সোনালি মুরগি পালনের সঠিক পদ্ধতি
- এখন আমরা জানবো টিয়া পাখির নরম খাবার তৈরি ও পরিবেশনের নিয়ম- গম ,ছোলা,সবুজ মুগ ডাল,এক রাত ভিজিয়ে নরম হলে সপ্তাহে দুইদিন করে খাওয়াবো।
- বিভিন্ন রকমের সবজি যেমন গাজর, মিষ্টি কুমড়া, পেঁপে শসা, কপি, কাঁচা মরিচ একসাথে সিদ্ধ করে সপ্তাহে একদিন খাওয়াবো।
- ফলের মধ্যে পেয়ারা, তরমুজ, ডালিম, কলা, আমড়া ইত্যাদি মাসে তিন দিন খাওয়াতে পারি।
- অতিরিক্ত গরমের সময় ডাবের পানি, লেবু পানি অথবা ইলেক্ট্রস্যালাইন খাওয়াতে পারি।
- একটা কথা মনে রাখতে হবে টিয়া পাখিকে কখনো আলু, কচু শাক, কচু, পিঁয়াজ, চকলেট, দুধ, চিপস, ভাত ইত্যাদি খাবার হিসেবে খেতে দেওয়া যাবে না।
- কারণ এতে পাখির শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। টিয়া পাখির বাচ্চা ফুটলে তখন থেকে নরম খাবার যেমন- ছোলা, ডাল সিদ্ধ, বুটের ডাল সিদ্ধ, অঙ্কুরিত বীজ, ভুট্টা সিদ্ধ ইত্যাদি দেয়া উচিৎ।
- খাচার টিয়া পাখির সঠিক যত্ন নিলে আর সুষম খাবার নিয়মিত খাওয়ালে এরা বছরে ২ বার প্রজনন করে থাকে।
- বাচ্চা দেওয়ার মৌসুমে নারী পাখির অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও অতি প্রয়োজনীয় মিনারেল এর পূরণ করতে হবে।
টিয়া পাখির উপকারিতা
আপনি কি টিয়া পাখির উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে টিয়া পাখির উপকারিতা সম্পর্কে। টিয়া পাখির উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হলে আর্টিকেলের এই পর্বটি অবশ্যই মনোযোগ সহকারে পড়ুন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে আমরা টিয়া পাখির উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।
কিছু কিছু ধর্মের মানুষ বিশ্বাস করে যে টিয়া পাখি ঘরে পুষলে অশুভ শক্তির হাত থেকে রক্ষা করে। তারা এটাও বিশ্বাস করে যে টিয়া পাখি ঘরে পুষলে মানুরের মধ্যে হতাশা অনেকাংশে কমে যায়। কারণ টিয়া পুষলে ডাক ফুটলে তখন হাজার হতাশার মাঝেও কিছুটা সস্তি লাভ করা যায়। টিয়া পাখি বাণিজ্যিক ভাবে পালন করলে অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া যায়।
যে সকল পরিবারের অসচ্ছলতা রয়েছে সে সকল পরিবারের যদি টিয়া পাখি পোষে এবং সেই টিয়াপাখি পরবর্তীতে বাচ্চা দেয় সে ক্ষেত্রে সেই বাচ্চা ভালো দামে বিক্রি করে পরিবারের সচ্ছলতা ফেরানো সম্ভব। আশা করছি আপনি টিয়া পাখির উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
টিয়া পাখির বৈশিষ্ট্য- সবুজ টিয়া পাখির বৈশিষ্ট্য
আপনি কি টিয়া পাখির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে টিয়া পাখির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে। টিয়া পাখির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে হলে আর্টিকেলের এই পর্বটি অবশ্যই মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে আর দেরি না করে চলুন আমরা জেনে নিই টিয়া পাখির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে।
টিয়া আমাদের পরিচিত ও সুন্দর পাখি। টিয়া পাখির বৈজ্ঞানিক নাম: Psittacula Kramen. সবুজ টিয়া সবুজ রঙ্গের হয়ে থাকে। সবুজ টিয়া পাখি সহজেই মানুষের পোষ মানে এবং মানুষের মত কিছুটা কথা বলার জন্য চেষ্টা করে থাকে। এদের শরীরের দৈর্ঘ্য ৪২-৪৫ সেন্টিমিটার ও ওজন প্রায় ১৩০-১৪০ গ্রাম হয়ে থাকে।
এরা সাধারণত বৃক্ষবহুল এলাকাতে, পাহাড়ি বন, চা-বাগান, পুরাতন বাড়িতে এরা বিচরণ করে থাকে। টিয়া পাখি প্রকারভেদ অনুযায়ী এদের সামান্য পালক ব্যাতীত সমস্ত দেহ সবুজ পালকে ঢাকা। এদের ঠোঁট বড়শির মত বাঁকানো লাল ঠোঁট। সাধারণত টিয়া পাখি ছোট দলে থাকতে পছন্দ করে।
সচারচর এরা জোড়া মিলিয়ে একসাথে থাকতে পছন্দ করে। বাংলাদেশে সাধারণত ৬ টি জাতের টিয়া দেখতে পাওয়া যায়। যেমন- মদনা টিয়া, চন্দনা টিয়া, সবুজ টিয়া, বাসন্তী লটকন টিয়া, লালমাথা টিয়া, ফুলমাথা টিয়া ইত্যাদি।
মদনা টিয়া- মদনা টিয়া বৈজ্ঞানিক নাম: Psittacula Kramen. টিয়াদের মধ্যে এই টিয়াকে অত্যন্ত সুন্দর টিয়া বলে জানে। এদের ঠোঁট লাল, পিঠ সবুজ, বুক লাল ও মাথা বাদামী। গলায় সুন্দর একটি মালা আছে। মেয়ে টিয়া পাখির ঠোঁট কিছুটা কালো এবং এদের লেজ সবুজ ও লম্বা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে অনেক জায়গাতেই এই টিয়া পাখি দেখতে পাওয়া যায়। বিশেষ করে চা-বাগান, মধুপুর ও ভাওয়াল বন অঞ্চলে বেশী পাওয়া য়ায়।
চন্দনা টিয়া- বৈজ্ঞানিক নাম: Psittacula Eupatria. এই সারা বিশ্বে এর জনপ্রিয়তা রয়েছে। এদের ঠোঁট টকটকে লাল। মাথার পিছন দিকে ঘাড়ে ও দু পাখার লাল দাগ দেখতে পাওয়া যায়। সারা বিশ্বে চন্দনা টিয়া পাঁচটি উপপ্রজাতির রয়েছে। বাংলাদেশে চন্দনার একটি উপপ্রজাতি দেখতে পাওয়া যায়।
সবুজ টিয়া- বৈজ্ঞানিক নাম: Psittacula Krameri. সবুজ টিয়া সবুজ রঙের হয়ে থাকে। এরা খুব সহজেই সবুজ পাতার রঙের সাথে মিশে যেতে পারে। এদের লেজ কিছুটা সরু ও লম্বা হয়ে থাকে। এই টিয়া পাখি চার প্রকার উপপ্রজাতির দেখতে পাওয়া যায়। আমাদের দেশে এক উপপ্রজাতির পাওয়া যায়।
বাসন্তী লটকন টিয়া- বৈজ্ঞানিক নাম: Psittacula Vernalis. এদের দেহ সুন্দর সবুজ গোলগাল লাল ঠোঁট। এদের লেজ অন্যান্য টিয়াদের মত লম্বা নয়। এরা ঝাঁক বেঁধে ঘোরাফিরা করতে পছন্দ করে। এরা ডুমুর ফল, বট ফল, বিভিন্ন শষ্য বীজ ও মিষ্টি ফুলের রস খেতে পছন্দ করে।
লাল মাথা টিয়া- বৈজ্ঞানিক নাম: Psittacula Cyanocephala. লাল মাথা টিয়ার শরীরের কিছু অংশ ছাড়া সমস্থ শরীর সবুজ বর্ণের। এদের ঠোঁট বড়শির মতো বাঁকানো কিছুটা হলদেটে রঙের হয়ে থাকে। আকাশে উড়ার সময় তীক্ষস্বরে ডাকতে থাকে। জঙ্গলের গাছের ডালে দলবেঁধে রাত্রি যাপন করে।
ফুলমাথা টিয়া- বৈজ্ঞানিক নাম: Psittacula Roseata. গোলাপী মাথা ও সবুজ বর্ণের কারণে। এদের ঠোঁট হলদেটে ও গলায় কালো গোল রেখা দেখতে পাওয়া যায়। বুকের পালক হালকা সবুজ ও পিঠের উপরে গাঢ সবুজ হয়ে থাকে। এদের লেজ অনেক লম্বা ও সরু হয়ে থাকে। পাহাড়ী অঞ্চল ও চা-বাগানে এদের বেশি দেখতে পাওয়া যায়। পৃথিবীতে এদের দুইটি উপ-প্রজাতির মধ্যে বাংলাদেশেই দুইটি উপ-প্রজাতির দেখতে পাওয়া যায়।
টিয়া পাখির প্রজনন কাল
আপনি কি টিয়া পাখির প্রজননকাল সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আরটিকালের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে টিয়া পাখির প্রজনন কাল সম্পর্কে। বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আর্টিকেলের এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা টিয়া পাখির প্রজননকাল সম্পর্কে জেনে নেই।
জানুয়ারি থেকে জুলাই এদের প্রজনন সময়। টিয়া পাখির ডিম দেওয়ার সময় হলে এরা গাছের কোটরে অথবা কাঠঠোকরা পুরনো বাসায় ডিম দিয়ে থাকে। নর টিয়া পাখি মাদি টিয়া পাখির তুলনায় প্রজনন ক্ষমতা অর্জন করতে একটু বেশি সময় নেয়।
মাদি টিয়া পাখি ১.৫-২ বছরের মধ্যে প্রজনন ক্ষমতা অর্জন করে থাকে তবে তারা সচারচর ২.৫-৩ বছরের আগে প্রজনন করানো ঠিক না। কারণ এই অল্প সময়ের মধ্যে টিয়া পাখিকে প্রজনন করালে পাখির ডিম আটকে যাওয়া বা এগবাইন্ডিং সহ অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর ফলে মাদি টিয়া পাখি মারাও যেতে পারে।
নর টিয়া পাখির পরিপূর্ণ পজনন ক্ষমতা অর্জন করতে ২.৫-৩ বছর সময় লাগে। আমাদের দেশে টিয়া পাখি সাধারণত সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর এর মধ্যে বাসা তৈরি কাজ শুরু করে দেয়। এরা গভীর গর্ত যুুক্ত বাসার তৈরি করতে পছন্দ করে।
তাই তাদের প্রবেশ পথ থেকে বক্সের নিচ পর্যন্ত জিআই তারের তৈরি মই সদৃশ মই বক্সের গায়ে লাগিয়ে দিতে হবে, যেন পাখি ঐ মই বেয়ে উঠা নামা করতে পারে। এসময় বক্সের ভিতরে কাঠের গুড়া, নিমপাতা বক্সের ভিতরে দিয়ে রাখা ভালো। প্রজনন মৌসুমে মাদি টিয়া পাখির অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও অতি প্রয়োজনীয় মিনারেল নিশ্চিত করতে হবে।
মাদি টিয়া পাখি ১ দিন পরপর একটি করে ডিম দেয়। টিয়া পাখি মোট ৩-৬ টি ডিম দিয়ে থাকে। গড়ে ২৩ দিনের মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটতে শুরু করে। আশা করছি আপনি টিয়া পাখির প্রজনন কাল সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
টিয়া পাখির স্বভাব
আপনি কি টিয়া পাখির স্বভাব সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলে এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে টিয়া পাখির স্বভাব সম্পর্কে। তাহলে আর দেরি না করে চলুন আমরা জেনে নেই টিয়া পাখির স্বভাব সম্পর্কে। সাধারণত টিয়া একটি পাখি। তবে টিয়া পাখির স্বভাব অনেকটাই মানুষের মতো।
কারণ টিয়া পাখি মানুষ যে ধরনের খাবার খেতে পছন্দ করে টিয়া পাখি একই ধরনের খাবার খেতে পছন্দ করে। পাশাপাশি টিয়া পাখি মানুষের মত সুন্দর করে কথা বলতে পারে। মানুষের কথা উত্তর দিতে পারে। আপনি যদি একটি টিয়া পাখিকে পোষ মানাতে পারেন তাহলে সেই টিয়া পাখি আপনার বন্ধুতে পরিণত হবে।
আপনার বিপদে আপদে আপনার পাশে থাকবে। তাই বলা যেতে পারে টিয়া পাখির স্বভাব অনেকটা মানুষের মত। আশা করছি আপনি টিয়া পাখির স্বভাব সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
টিয়া পাখি কত বছর বয়সে ডিম দেয়
আপনি কি টিয়া পাখি কত বছর বয়সে ডিম দেয় সেই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে টিয়া পাখি কত বছর বয়সে ডিম দেয় সেই সম্পর্কে। বিস্তারিত জানতে হলে আর্টিকেলের এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
তাহলে আর দেরি না করে চলুন আমরা জেনে নেই টিয়া পাখি কত বছর বয়সে ডিম দেয় সেই সম্পর্কেমাদি টিয়া পাখি ১.৫-২ বছরের মধ্যে প্রজনন ক্ষমতা অর্জন করে থাকে তবে তারা সচারচর ২.৫-৩ বছরের আগে প্রজনন করানো ঠিক না। কারণ এই অল্প সময়ের মধ্যে টিয়া পাখিকে প্রজনন করালে পাখির ডিম আটকে যাওয়া বা এগবাইন্ডিং সহ অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এর ফলে মাদি টিয়া পাখি মারাও যেতে পারে। নর টিয়া পাখির পরিপূর্ণ পজনন ক্ষমতা অর্জন করতে ২.৫-৩ বছর সময় লাগে।প্রজনন মৌসুমে মাদি টিয়া পাখির অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও অতি প্রয়োজনীয় মিনারেল নিশ্চিত করতে হবে।
মাদি টিয়া পাখি ১ দিন পরপর একটি করে ডিম দেয়। টিয়া পাখি মোট ৩-৬ টি ডিম দিয়ে থাকে। গড়ে ২৩ দিনের মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটতে শুরু করে। আশা করছি আপনি টিয়া পাখি কত বছর বয়সে ডিম দেয় সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
লেখকের মন্তব্য - টিয়া পাখির বৈশিষ্ট্য
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনি হয়তো টিয়া পাখি পালন পদ্ধতি,সবুজ টিয়া পাখি কত বছর বাঁচে,টিয়া পাখির বাসস্থান - টিয়া পাখির বাসার ধরন,টিয়া পাখির শারীরিক গঠন,টিয়া পাখির খাবার,টিয়া পাখির উপকারিতা,টিয়া পাখির বৈশিষ্ট্য- সবুজ টিয়া পাখির বৈশিষ্ট্য,টিয়া পাখির প্রজনন কাল,টিয়া পাখির স্বভাব সম্পর্কে জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন।
চেষ্টা করব আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী আরো নতুন নতুন আর্টিকেল আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার। প্রতিদিন নিত্যনতুন ও তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখুন। আপনার কোন পরামর্শ বা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url