আয়রন ট্যাবলেট এর নাম - আয়রনের অভাবে কি হয়

এন্টিবায়োটিক ঔষধ খাওয়ার নিয়মআমাদের শরীরে পর্যাপ্ত আয়রনের অভাব শরীরের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত করে। আয়রনের ঘাটতি থেকেও অ্যানিমিয়ার মত সমস্যা হতে পারে। আজ আমরা জানবো আয়রন ট্যাবলেট এর নাম - আয়রনের অভাবে কি হয় সেই সম্পর্কে।
আয়রন ট্যাবলেট এর নাম - আয়রনের অভাবে কি হয়
আমাদের শরীরে লোহিত রক্তকণিকা সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি ফুসফুস থেকে শরীরের অন্যান্য অংশে অক্সিজেন পৌঁছে দিতে সাহায্য করে।

পোস্ট সূচিপত্রঃতবে শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে লৌহিত রক্তকণিকা তৈরি হতে পারে না। রক্তশূন্যতার অন্যতম প্রধান কারণ হলো আয়রনের ঘাটতি।

আয়রন ট্যাবলেট এর নাম - ভূমিকা

শরীরে আয়রনের অভাব হলে রক্ত উৎপাদন কমে যায়। ইমিউনিটি সিস্টেম অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ক্ষতি হয়। এছাড়াও শরীরে এনার্জির অভাব হয়। আজ আমরা এই আর্টিকালের মাধ্যমে আয়রন সম্পর্কে যে বিষয়গুলো জানবো তা হল-

আয়রনের ঘাটতি পূরণের উপায়,আয়রনের অভাবে কোন রোগ হয়,শরীরে আয়রন বেশি হলে কি হয়,মাসিকের সময় আয়রন ট্যাবলেট,আয়রন ট্যাবলেট এর নাম,আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়,আয়রন ট্যাবলেট কোনটা ভালো,আয়রনের অভাবে কি হয়,আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি পায়খানা কালো হয় সেই সম্পর্কে। বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

আয়রনের ঘাটতি পূরণের উপায়

আপনি কি আয়রনের ঘাটতি পূরণের উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে আয়রনের ঘাটতি পূরণের উপায় সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই আয়রনের ঘাটতি পূরণের উপায় সম্পর্কে। আয়রনের ঘাটতি হলে শরীরে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। 
আর রক্তস্বল্পতা দেখা দেওয়ার কারণে শরীরের নানা ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়। যা থেকে ধীরে ধীরে আমাদের বিভিন্ন রোগের আক্রমণ বেড়ে যায়। যে কারণে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করা খুবই জরুরী। আপনার শরীরে যদি আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয় সেক্ষেত্রে আপনাকে বিভিন্ন আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। বিভিন্ন ধরনের খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রন পাওয়া যায়। 

তাই আপনি যদি লক্ষ্য করেন আপনার আয়রনের ঘাটতি রয়েছে সেক্ষেত্রে বিভিন্ন ফল মূল থেকে শুরু করে শাকসবজি এবং মাংস এবং কলিজাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রন পাওয়া যায় সেগুলো খাওয়া শুরু করবেন। 

এরপরও যদি আপনার আয়রনের ঘাটতি পূরণ না হয় সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রনের ট্যাবলেট সেবন করতে পারেন। আশা করছি আপনি আয়রনের ঘাটতি পূরণের উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

আয়রনের অভাবে কোন রোগ হয়

আপনি কি আয়রনের অভাবে কোন রোগ হয় সেই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে আয়রনের অভাবে কোন রোগ হয় সেই সম্পর্কে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই আইরনের অভাবে কোন রোগ হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত।শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে নানা জটিলতা দেখা দেয়। 

আয়রন দেহের শক্তি উৎপাদন থেকে শুরু করে মস্তিষ্কের স্নায়ু পক্ষের কার্যকারিতা বজায় রাখে। অধিকাংশ মানুষই আয়রনের ঘাটতি সম্পর্কে সচেতন নয়। আয়রনের ঘাটতি হলে অবশ্যই এর কারণসমূহ জানতে হবে। 

পরিপাকতন্ত্রের প্রদাহ জনিত রোগ যেমন সিলিয়া ডিজিজ, ইনফ্লামেটরি বায়োল ডিজিজ বা আইবিডি দীর্ঘদিন গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ নেওয়া পাকস্থলীর সার্জারির পর দীর্ঘদিন পরিপাক নালী থেকে রক্ত নির্গমন, কৃমির সংক্রমণ, দীর্ঘদিন ব্যথার ঔষধ সেবন এবং রক্ত পাতলা করন ঔষধ খেলেও হতে পারে আয়রনের ঘাটতি। 

এছাড়াও নখ দেখে বোঝা যায় শরীরে আয়রনের ঘাটতি আছে কিনা। নখ যদি নরম থাকে আর বারবার ভেঙে যায় তাহলে বুঝবেন শরীরে আয়রনের অভাব আছে। এছাড়াও হঠাৎ যদি জিভ ফুলে যায় তাহলে অবশ্যই আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খান। তার আগে অবশ্যই রক্ত পরীক্ষা করে দেখুন। অনেক সময় আয়রনের অভাব হলেও মাথা ধরার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

যেমন অল্প পরিশ্রম বা একটু হাঁটলেই নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসা আয়রনের অভাবে এই অসুবিধা দেখা দিতে পারে। এমনকি অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যা কে সাধারণভাবে নেওয়া উচিত নয়। হঠাৎ করে যদি অতিরিক্ত চুল পড়তে থাকে তা হতে পারে আয়রনের ঘাটতি।

শরীরে আয়রন বেশি হলে কি হয়

আপনি কি শরীরে আয়রন বেশি হলে কি হয় সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে শরীরে আয়রন বেশি হলে কি হয় সেই সম্পর্কে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই শরীরে আয়রন বেশি হলে কি হয় সেই সম্পর্কে। 

ভিটামিন, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন প্রভৃতি সমস্ত উপাদানেরই প্রয়োজন রয়েছে শরীরে। কিন্তু যখন এই সমস্ত উপাদান শরীরের প্রয়োজনে তুলনায় অতিরিক্ত হয়ে যায়, তখন বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। এটা কি জানেন শরীরে আইরনের পরিমাণ বেড়ে গেলে কি হয়? শরীরে আয়রনের পরিমাণ বেড়ে গেলে লিভার ড্যামেজ হতে পারে। 

তাদের মতে, মহিলাদের পিরিয়ডের মাধ্যমে শরীর থেকে আয়রন বেরিয়ে যায়। তাই তাদের শরীরে আয়রনের পরিমাণ খুব বেশি বাড়তে পারে না। কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে তা হয় না। বরং ক্রমশ আয়রনের পরিমাণ বাড়তে পারে। তাই লিভার ড্যামেজ এর হার মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। 

শরীরে আয়রনের পরিমাণ বেড়ে গেলে ধীরে ধীরে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং কোষ নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে থাকে। সঠিক সময় চিকিৎসা না করালে আয়রনের পরিমাণ ক্রমশ বাড়তে থাকে। এর ফলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। চিকিৎসকদের মতে, ৪০ বা তার বেশি বয়সে গিয়ে পুরুষের লিভারের সমস্যা চোখে পড়ে। 

এর আগে এই রোগের তেমন কোন লক্ষণ না থাকায় তা নজরে আসে না। শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে আয়রন হয়ে গেলে রোগীদের ডায়াবেটিক, যৌনতায় অনীহা, পুরুষত্বহীনতা, হার্ট ফেলিওর, লিভার ফেলিওর হতে পারে।

মাসিকের সময় আয়রন ট্যাবলেট

আপনি কি মাসিকের সময় আয়রন ট্যাবলেট সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে মাসিকের সময় আয়রন ট্যাবলেট সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই মাসিকের সময় আয়রন ট্যাবলেট সম্পর্কে বিস্তারিত। 

সাধারণত শরীরে অতিরিক্ত আয়রনের পরিমাণ বেড়ে গেলে মহিলাদের মাসিকের মাধ্যমে তার শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। যে কারণে অতিরিক্ত আয়রনের কারণে যে শরীরের জটিলতা গুলো দেখা দেয় তা মহিলাদের ক্ষেত্রে খুব কম দেখা যায়। তবে মাসিকের সময় শরীর থেকে আয়রন বেরিয়ে যাওয়ার কারণে মহিলাদের আয়রন ট্যাবলেট খেয়ে আয়রনের চাহিদা পূরণ করতে হয়। 

এই সময় আয়রন ট্যাবলেট এর পরিবর্তে বিভিন্ন আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খেয়েও আয়রনের চাহিদা পূরণ করা যায়। তবে বিবাহিত নারীদের ক্ষেত্রে যারা পিল খেয়ে অভ্যস্ত তাদের মাসিকের সময় একপাতা পিলের লাল বড়ি গুলা অর্থাৎ আয়রন বড়ি খেতে হয়। 

কারণ নিয়ম অনুযায়ী একপাতা ঔষধের মধ্যে মাসিকের সময় আয়রন ট্যাবলেট খেতে হয়। আশা করছি আপনি মাসিকের সময় আয়রন ট্যাবলেট সম্পর্কে জানতে পেরেছেন

আয়রন ট্যাবলেট এর নাম

আপনি কি আয়রন ট্যাবলেটের নাম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আরটিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে আয়রন ট্যাবলেটের নাম সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই আইরন ট্যাবলেটের নাম সম্পর্কে বিস্তারিত। 

শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিলে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় অর্থাৎ রক্ত উৎপাদন কমে যায়। এছাড়াও রক্তস্বল্পতা দেখা দেওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার খাওয়ার পরেও যদি শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয় সেক্ষেত্রে আইরন ট্যাবলেট খেতে হয়। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আয়রন ট্যাবলেট পাওয়া যায়। 
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু আয়রন ট্যাবলেট এর নাম নিচে উল্লেখ করা হলো। আশা করছি ট্যাবলেট গুলোর নাম জানলে আপনারা উপকৃত হবেন। তবে কখনই কোন ট্যাবলেট ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়। তাই আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার পূর্বেও আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। তাহলে চলুন এখন জেনে নেই বাজারে উল্লেখিত কয়েকটি আইরন ট্যাবলেট এর নাম:
  • ফলভিট (Folvit)
  • জিফলেট (Zifolet)
  • জিফ ফোর্ট (Zif Forte)
  • ইপেক প্লাস (Ipec Plus)
  • এক্সবিট ক্যাপসুল (Xvit Capsule)
  • জিফল এম (Zeefol M)
  • জিলভিট ক্যাপসুল (Zilvite Capsule)
  • ফলনিড (Folneed)

আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়

আপনি কি আইরন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আরটিকালের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় সেই সম্পর্কে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই আইরন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত। 

অনেকেরই ধারণা আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে মোটা হয়ে যায়। কিন্তু এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। শুধুমাত্র আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে শরীর মোটা হয় না। শরীর মোটা হওয়ার পেছনে রয়েছে আরো অনেক কারণ। শরীর মোটা হতে যে সকল উপাদান কার্যকরী ভূমিকা পালন করে সেগুলোর মধ্যে আয়রন অন্যতম। 

শরীর মোটা হওয়ার অন্যতম কারণ হলো পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম এবং তিন বেলা পেট ভরে ভাত খাওয়া। এছাড়াও বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেল জাতীয় খাবার খাওয়া যা শরীরকে মোটা হওয়ার পাশাপাশি সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। তাই আপনি যদি মোটা হতে চান সেক্ষেত্রে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি।

আয়রন ট্যাবলেট কোনটা ভালো

আপনি কি আইরন ট্যাবলেট কোনটা ভালো সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে আয়রন ট্যাবলেট কোনটা ভালো সেই সম্পর্কে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই আইরন ট্যাবলেট কোনটা ভালো সেই সম্পর্কে বিস্তারিত। 

আপনার যদি আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা থেকে থাকে তাহলে বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আয়রনের ট্যাবলেট পাওয়া যায় সেগুলোর মধ্যে থেকে আপনি যে কোন একটি আয়রনের ট্যাবলেট সেবন করতে পারেন। তবে যেকোনো আয়রনের ট্যাবলেট সেবন করার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা উচিত। 

আজ আমি আর্টিকালের এই পর্বে বেশ কিছু জনপ্রিয় আয়রন ট্যাবলেট এর নাম উল্লেখ করব। তবে উল্লেখিত ট্যাবলেট গুলো সেবন করার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মেনে সেবন করবেন। চলুন তাহলে ট্যাবলেট গুলোর নাম জেনে নেই:
  • ফলভিট (Folvit)
  • জিফলেট (Zifolet)
  • জিফ ফোর্ট (Zif Forte)
  • ইপেক প্লাস (Ipec Plus)
  • এক্সবিট ক্যাপসুল (Xvit Capsule)
  • জিফল এম (Zeefol M)
  • জিলভিট ক্যাপসুল (Zilvite Capsule)
  • ফলনিড (Folneed)

আয়রনের অভাবে কি হয়

আপনি কি আয়রনের অভাবে কি হয় সেই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে আয়রনের অভাবে কি হয় সেই সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই আয়রনের অভাবে কি হয় সেই সম্পর্কে। 

শরীরে আয়রনের মাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষায় কম থাকলে, শরীরে আয়রনের অভাব হচ্ছে বলে মনে করা হয়। আমাদের দেহে হিমোগ্লোবিনের উৎপাদনের জন্য আয়রন অবশ্যই প্রয়োজন। আয়রনের অভাবে হিমোগ্লোবিন কম উৎপাদিত হলে শরীরে লৌহিত রক্তকণিকার উৎপাদন বাধা পায়। 

রোগ জীবাণুর হাত থেকে আমাদের শরীরকে রক্ষা করে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা। আয়রনের অভাবজনিত কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ক্ষতি হয়। এছাড়াও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে আয়রন। আয়রনের অভাবজনিত লক্ষণগুলো হলো:

অস্বাভাবিক ক্লান্তি: কোন বিশেষ কারণ ছাড়া বা কোন বিশেষ পরিশ্রম ছাড়াই অস্বাভাবিক ক্লান্ত হয়ে পড়া আয়রনের অভাবের কারণে হতে পারে। আয়রনের অভাবে এটি খুবই সাধারণ একটি লক্ষণ। এই ক্লান্তির প্রধান কারণ হিমোগ্লোবিনের অভাব। হিমোগ্লোবিন রক্তের মধ্য দিয়ে অক্সিজেন পরিবহন করে এবং আমাদের সুস্থ রাখে। 
অক্সিজেনের অভাব হলে আমাদের মাসল ঠিকমত কাজ করতে পারে না। এছাড়াও আমাদের হার্টের উপর ও চাপ পড়ে। আমাদের ব্যস্ত জীবনযাত্রার কারণে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারি তবে ক্লান্তির সাথে দুর্বলতা, অস্থিরতা ও মনোযোগের অভাব হলে অবশ্যই সেটা আয়রনের অভাবজনিত লক্ষণ। শরীরের সকল স্থানে ঠিকমতো অক্সিজেন না পৌঁছানোর কারণে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি।

শ্বাসকষ্ট: রক্তের মধ্যে থাকা হিমোগ্লোবিন অক্সিজেন পরিবহন করে। আয়রনের অভাব হলে হিমোগ্লোবিন কম উৎপন্ন হয়। ফলে রক্ত কম পরিমাণে অক্সিজেন পরিবহন করতে পারে। আবার অক্সিজেন না পেলে আমাদের পেশীতে শক্তির অভাব হয় এবং সাধারণ কাজ করতে গিয়ে আমরা হাপিয়ে উঠি। 

ঠিক যেমন তেল ছাড়া মেশিন চলেনা তেমনি অক্সিজেন ছাড়া আমাদের শরীর কাজ করতে পারে না। অক্সিজেনের অভাব মেটাতে বারে বারে শ্বাস নিতে হয়। শ্বাস নিতে কষ্ট হলে দেহে আয়রনের অভাব হচ্ছে কিনা দেখা প্রয়োজন।

মাথাব্যথা: বিভিন্ন কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হলো আয়রনের অভাব। আমরা আগেই জেনেছি যে হিমোগ্লোবিন অক্সিজেন পরিবহন করে এবং আয়রন হিমোগ্লোবিন উৎপাদনের সাহায্য করে। 

আয়রনের অভাব হলে হিমোগ্লোবিনের অভাব হয় এবং হিমোগ্লোবিনের অভাব হলে মাথার মধ্যে অক্সিজেন কম পৌঁছায়। অক্সিজেনের অভাবে মাথাব্যথা শুরু হয়। মাঝেমধ্যেই মাথা ব্যথা হলে অবশ্যই সচেতন হতে হবে।

ফ্যাকাশে ত্বক: শরিলে আয়রনের অভাবের অন্যতম একটি লক্ষণ হল ত্বকের রং ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া। বিশেষ করে নিচের চোখের পাতার ভেতরের দিকে লালচে ভাব কম থাকলে নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে আয়রনের অভাব হচ্ছে এবং শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম আছে। রক্তে হিমোগ্লোবিন থাকার কারণে রক্তের রং লাল হয়। 

আয়রনের অভাব হলে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায় এবং ত্বকের রং ফ্যাকাসে হয়ে যায়। মুখমণ্ডল, দাঁতের মাড়ি, ঠোঁটের ভেতরের দিক, নখ ইত্যাদির রং ফ্যাকাশে হয়ে গেলে অবশ্যই দেহে আয়রনের অভাব দেখা দিয়েছে।

বুক ধরফর: শরীরে অক্সিজেনের অভাব হলে বুক ধরফর করে। আয়রনের অভাবে এটা হতে পারে। আয়রনের অভাব হলে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় ফলে অক্সিজেন সাপ্লাই স্বাভাবিক রাখতে হৃদপিণ্ডকে বেশি কাজ করতে হয় এর ফলে হৃদপিন্ডের ধরফরানি বেড়ে যায়। 

এমনকি হৃদপিন্ডের স্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যেতে পারে। আয়রনের অভাবে হার্টের ওপর চাপ বেড়ে যায় এবং হার্টের রোগের সূচনা হতে পারে।

জিহ্বা ফুলে যাওয়া: শরীরে আয়রনের অভাব হলে আমাদের জিহ্বা ফুলে যেতে পারে। তবে তার মানে এটা নয় যে আপনি আপনার মুখ বন্ধ করতে পারবেন না। তবে আপনি একটা পার্থক্য অবশ্যই অনুভব করতে পারবেন। আয়রনের অভাব হলে জিহ্বার রং ফ্যাকাশে হয়ে যায় এবং জিহ্বা মসৃণ দেখায় । 

মুখের ভেতরটা শুকিয়ে যেতে পারে, মুখের ভেতর জ্বালা হতে পারে এবং মুখের ভেতরে আলসার হতে পারে আয়রনের অভাবে।

শুষ্ক ও ক্ষতিগ্রস্ত চুল এবং ত্বক: আয়রনের অভাব হলে রক্তে অক্সিজেন পরিবহনকারী হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায়। ফলে চুলের বৃদ্ধি ঘটায় এমন কোষগুলিতে অক্সিজেনের অভাব হয়। অক্সিজেনের অভাবের কারণে চুল শুষ্ক ও দুর্বল হয়ে পড়ে। 

আয়রনের অভাব চুল পড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। ত্বকের কোষগুলি ও আয়রনের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যায় এবং ত্বক শুষ্ক ও খসখসে হয়ে যায়।

ভঙ্গুর নখ: আমাদের নখগুলি সহজেই ভেঙে গেলে বা ফাটতে শুরু করলে শরীরে আয়রনের অভাব হচ্ছে কিনা দেখা প্রয়োজন। এটি আয়রনের অভাবের লক্ষণ। তবে এই উপসর্গটি সাধারণত কম দেখা যায়।

অস্থির পা: অস্থির পা আয়রনের অভাবজনিত কারণে সঙ্গে যুক্ত। অস্থির পা হল এমন একটি রোগ যা বিশ্রামরত অবস্থায় পা নড়াচাড়া করে। মায়ের মধ্যে অপ্রীতিকর অনুভূতি ও হতে পারে। বিশেষ করে রাতে এটি বেশি হয়। ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। আয়রনের অভাবে এই রোগের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়।

অদ্ভুত আকাঙ্ক্ষা: আমাদের মনে বিভিন্ন ধরনের আকাঙ্ক্ষা থাকে। কখনো একটু মিষ্টি খেতে ইচ্ছা করে কখনো বা অন্য কিছু। শরীরে আয়রনের অভাব হলে অদ্ভুত ধরনের কিছু খাওয়ার ইচ্ছা হতে পারে। যেমন কাগজ, চক বা মাটি খেতে ইচ্ছে হতে পারে। গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রেও এ ধরনের অদ্ভুত ইচ্ছে দেখা যেতে পারে।

হতাশার অনুভূতি: মানসিক চাপ ও হতাশার অনুভুতি হতে পারে শরীরে আয়রনের অভাব হলে। আয়রনের অভাব দূর হলে মানসিক চাপ কমে।

ঠান্ডা হাত ও পা: যেকোনো ঋতুতে সবসময় হাত ও পা ঠান্ডা হয়ে থাকা আয়রনের অভাবের লক্ষণ। হাত ও পায়ে কম অক্সিজেন পৌঁছানোর কারণে এটা হয়। অবশ্যই ঠান্ডা হাত-পা মানেই এটা আয়রনের অভাব তা নিশ্চিত এভাবে বলা যায় না।

ঘনঘন জীবাণুর সংক্রমণ: রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভালো রাখতে আয়রন অবশ্যই প্রয়োজন। বারে বারে রোগের কবলে পড়লে আয়রনের অভাব আছে কিনা দেখা প্রয়োজন।

আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি পায়খানা কালো হয়

আপনি কি আইরন ট্যাবলেট খেলে কি পায়খানা কালো হয় সেই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি পায়খানা কালো হয় নাকি সেই সম্পর্কে। 

তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই আইরন ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে কি পায়খানা কালো হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত। পায়খানা কালো হওয়ার একটি বিশেষ কারণ হলো আয়রন সাপ্লিমেন্ট সেবন অর্থাৎ আয়রন ট্যাবলেট খাওয়া।মিনেসোটার ফ্যামিলি প্র্যাকটিশনার ক্রিস্টিন টেক্সণার বলেন, আয়রন খাওয়ার ফলে মলের রং কালো হয়। কারণ সব আয়রন শরীরের শোষণ হয় না। 

যেসব আয়রন শোষিত হয় না তা অন্তরে রাসায়নিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। যা মলকে কালো করে দেয়। আইরন সাপ্লিমেন্ট সে বনে মল কালো হলেও তা আলকাতরার মত কালো হয় না। আশা করছি আপনি আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি পায়খানা কালো হয় সেই সম্পর্কে জানতে পেরেছেন

লেখকের মন্তব্য - আয়রন ট্যাবলেট এর নাম

প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনি হয়তো আয়রনের ঘাটতি পূরণের উপায়,আয়রনের অভাবে কোন রোগ হয়,শরীরে আয়রন বেশি হলে কি হয়,মাসিকের সময় আয়রন ট্যাবলেট,আয়রন ট্যাবলেট এর নাম,আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়,আয়রন ট্যাবলেট কোনটা ভালো,আয়রনের অভাবে কি হয়,আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি পায়খানা কালো হয় সেই সম্পর্কে জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন।

চেষ্টা করব আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী আরো নতুন নতুন আর্টিকেল আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার। প্রতিদিন নিত্যনতুন ও তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখুন। আপনার কোন পরামর্শ বা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url