তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি - তায়াম্মুমের নিয়ম
ফরজ গোসলের নিয়ম ও দোয়াইবাদাতের জন্য ইসলামে পবিত্রতার তাগিদ রয়েছে। আর পবিত্র হতে যদি কোথাও পানি না পাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে তায়াম্মুম করা যেতে পারে। পবিত্র কুরআন মাজীদে মহান আল্লাহ তায়ালা তায়াম্মুমের বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানব তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি - তায়াম্মুমের নিয়ম সম্পর্কে।
কোথাও পানি পাওয়া না গেলে বা পানি শরীরের জন্য ক্ষতিকর হলে সেক্ষেত্রে তায়াম্মুম করা যাবে। তবে পবিত্র স্থানে তায়াম্মুম করতে হবে।
পোস্ট সূচিপত্রঃচলুন তাহলে আর দেরি না করে আমরা তায়াম্মুমের বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেই।
তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি - ভূমিকা
কোন স্থানে যদি পানির কোন ব্যবস্থা না থাকে সেক্ষেত্রে তায়াম্মুম করা যাবে। আজকের আর্টিকেলে তায়াম্মুম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি আপনি যদি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েন সে ক্ষেত্রে তায়ামুন সম্পর্কে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারবেন। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে তায়াম্মুম সম্পর্কে যে বিষয়গুলো জানবেন তা হল-
তায়াম্মুম অর্থ কি,তায়াম্মুমের সুন্নত কয়টি,তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি,তায়াম্মুমের নিয়ত,তায়াম্মুমের নিয়ম,তায়াম্মুমের ৩ ফরজ,গাড়িতে তায়াম্মুমের নিয়ম সম্পর্কে। বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
তায়াম্মুম অর্থ কি
আপনি কি তায়াম্মুম অর্থ কি সেই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে তায়াম্মুম অর্থ কি সেই সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই তায়াম্মুম অর্থ কি সেই সম্পর্কে। তায়াম্মুম আরবি শব্দ।তায়াম্মুম শব্দের অর্থ হলো সংকল্প বা উদ্দেশ্য।
সাধারণত ইসলামের বিধান অনুযায়ী তায়াম্মুম হল ওজু বা গোসলের বিকল্প রূপ। যা বালি, মাটি বা যে কোন পবিত্র জায়গায় পবিত্রতা অর্জনের একটি পন্থা। ইসলাম ধর্মে অজু ও গোসলের মাধ্যমে পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করতে হয়। কিন্তু কেউ যদি পবিত্রতা অর্জনের জন্য পানি না পান কিংবা পানি ব্যবহারের অপারগ হন তখন করণীয় কি?
কোরআন মাজীদে আল্লাহ তায়ালা এর সুস্পষ্ট সমাধান দিয়ে বলেছেন, শারীরিক পবিত্রতায় ওযু গোসলের বিকল্প মাধ্যম হচ্ছে তায়াম্মুম।
আর তোমরা যদি অসুস্থ হও কিংবা সফরে থাকো অথবা যদি তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে আসে অথবা তোমরা যদি স্ত্রী সহবাস করো এরপর পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম কর। সুতরাং তোমাদের মুখ ও হাত তা দ্বারা মাসেহ করো। ( সূরা মায়েদা:আয়াত ৬)
তায়াম্মুমের সুন্নত কয়টি
আপনি কি তায়াম্মুমের সুন্নত কয়টি সেই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে তায়াম্মুমের সুন্নত কয়টি সেই সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা তায়াম্মুমের সুন্নত কয়টি সেই সম্পর্কে জেনে নেই। তাইয়াম্মুমের যেমন ফরজ রয়েছে ঠিক তেমনি সুন্নত রয়েছে। আর তায়াম্মুমের সুন্নত হচ্ছে সাতটি।
- ১. তায়াম্মুম করার জন্য প্রথমে বিসমিল্লাহ বলা।
- ২. দুই হাত অর্থাৎ উভয় হাত পবিত্র মাটিতে মেরে সামনের দিকে নিতে হবে।
- ৩. সেই দুই হাত আবার পেছন দিকে নিতে হবে।
- ৪. দুই হাতে মেরে অর্থাৎ উভয় হাত মাটিতে মারার পর মাটি জেনে নিতে হবে।
- ৫. যখন মাটিতে হাত মারবে তখন অবশ্যই আঙুলগুলো ফাঁকা করে রাখতে হবে।
- ৬. মাসেহের সময় তারতিব ঠিক রাখতে হবে।
- ৭. বিরতিহীন ভাবে তায়াম্মুম সম্পূর্ণ করতে হবে।
তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি
আপনি কি তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি সেই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আরটিকালের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি সেই সম্পর্কে। এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আর্টিকেলের এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
সাধারণত যে স্থানে কোন অবস্থাতেই পানি পাওয়া যায় না বা যাচ্ছেনা সেখানে তায়াম্মুম করা যাবে। তাই আপনি যদি কখনো এমন পরিস্থিতিতে করেন সেক্ষেত্রে তায়াম্মুম করে ফরজ সালাত আদায় করতে পারবেন। সাধারণত তায়াম্মুমের ফরজ তিনটি।
আরও পড়ুনঃ নবীর রওজা শরীফ জিয়ারতের নিয়ম জানুন
- ১. নিয়ত করা
- ২. সমস্ত মুখ মাসেহ করা
- ৩. দুই হাতের কনুই পর্যন্ত মাসেহ করা
সর্বপ্রথম তায়ামের নিয়ত করবেন অন্তরে। অর্থাৎ মুখে প্রকাশ করা যাবে না। অতঃপর বিসমিল্লাহ বলবেন। এরপর দুই হাত একসাথে জমিনে মারবেন। তারপর দুই হাত দিয়ে চেহারায় মাসেহ করবেন। এবং দুই হাতের পিঠ কব্জি পর্যন্ত মাসেহ করবেন। একবার করেই করবেন। আর এটাই হলো তায়াম্মুমের সঠিক পদ্ধতি।
তায়াম্মুমের নিয়ত
আপনি কি তায়াম্মুমের নিয়ত সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আরটিকালের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে তায়াম্মুমের নিয়ত সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা তায়াম্মুমের আরবি ও বাংলা নিয়ত সম্পর্কে জেনে নেই। তাইয়াম্মুম করার পূর্বে নিয়ত করা ফরজ।
তবে আরবিতে নিয়ত করার কোন বাধ্যবাধকতা নেই। আপনি চাইলে মনে মনে বাংলাতেই তায়াম্মুমের নিয়ত করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনার তায়াম্মুমের নিয়ত হয়ে যাবে। তবুও চলুন আমরা তায়াম্মুমের আরবি ও বাংলা দুইটি নিয়ত সম্পর্কে জেনে নেই।
আরবি উচ্চারণ: নাওয়াতু আন আতাইয়াম্মামা, লিরাফ য়িল হাদাছি, ও ইসতিবা হাতিছ সালাতি। তাক্বার রুবান ইলাল্লাহি তায়ালা।
বাংলা উচ্চারণ: আমি নাপাকি দূর করবার, নামাজ শুদ্ধ রূপে পরিবার এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে তাইয়াম্মুম করছি।
তায়াম্মুমের নিয়ম
আপনি কি তায়াম্মুমের নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আরটিকালের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে তাইয়াম্মুমের নিয়ম সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা তায়াম্মুমের সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই।কোরআন মাজীদে আল্লাহ তায়ালা তাইয়াম্মুমের সুস্পষ্ট সমাধান দিয়ে বলেছেন,
শারীরিক পবিত্রতায় ওযু গোসলের বিকল্প মাধ্যম হচ্ছে তায়াম্মুম। আর তোমরা যদি অসুস্থ হও কিংবা সফরে থাকো অথবা যদি তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে আসে অথবা তোমরা যদি স্ত্রী সহবাস করো এরপর পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম কর। সুতরাং তোমাদের মুখ ও হাত তা দ্বারা মাসেহ করো। ( সূরা মায়েদা:আয়াত ৬)
এখন আমরা জানবো তাইয়াম্মুমের সঠিক নিয়ম সম্পর্কে:
সর্বপ্রথম তায়ামের নিয়ত করবেন অন্তরে। অর্থাৎ মুখে প্রকাশ করা যাবে না। অতঃপর বিসমিল্লাহ বলবেন। এরপর দুই হাত একসাথে জমিনে মারবেন। তারপর দুই হাত দিয়ে চেহারায় মাসেহ করবেন। এবং দুই হাতের পিঠ কব্জি পর্যন্ত মাসেহ করবেন। একবার করেই করবেন। আর এটাই হলো তায়াম্মুমের সঠিক পদ্ধতি।
তায়াম্মুমের ৩ ফরজ
আপনি কি তায়াম্মুমের ৩ ফরজ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেল এর এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে তাইয়াম্মুমের ৩ ফরজ সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা তায়াম্মুমের ৩ ফরজ সম্পর্কে জেনে নেই।
আমরা জানি তায়াম্মুমের তিনটি ফরজ রয়েছে। এই তিনটি ফরজ না মানলে তায়াম্মুম হবে না। তাই সকলের তায়াম্মুমের এই তিনটি ফরজ জেনে রাখা উচিত।তায়াম্মুমের ৩ টি ফরজ হলো:
- ১. নিয়ত করা
- ২. সমস্ত মুখ মাসেহ করা
- ৩. দুই হাতের কনুই পর্যন্ত মাসেহ করা
গাড়িতে তায়াম্মুমের নিয়ম
আপনি কি গাড়িতে তায়ামুমের নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে গাড়িতে তায়াম্মুমের নিয়ম সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই গাড়িতে তায়াম্মুমের নিয়ম সম্পর্কে।সাধারণত তায়াম্মুম করা বৈধ হলো যেখানে
পানির অনুপস্থিত,পানি থাকা সত্ত্বেও তা ব্যবহার করতে অপারগ হলে,পানি ব্যবহার করার ফলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকলে। এই তিনটি কারণ ছাড়া তায়াম্মুম চলবে না। আপনি যদি গাড়িতে থাকেন সেখানে কোথাও না কোথাও পানি আছে। অতএব সেই অবস্থায় আপনি তায়াম্মুম করতে পারবেন না।
যদি আপনার গাড়িতে কোন পানি না থাকে, আপনি যেখানে যাচ্ছেন তার আশেপাশে দীর্ঘ এলাকা জুড়ে কোথাও পানির কোন সন্ধান নেই আপনার জানামতে, এবং কারোর কাছে চেয়েও পানি পাবেন না অথবা কিনেও পানি পাবেন না এরকম পরিস্থিতিতে পড়লে তখন আপনি তায়াম্মুম করতে পারেন।
সে ক্ষেত্রে আপনি গাড়ি থামিয়ে মাটি জাতীয় কোন কিছু বা রাস্তার উপরে যা আছে সেখানে আপনি তায়াম্মুম করতে পারেন। তবে আপনি গাড়ির মধ্যে বা গাড়ির যে দেওয়াল বা বডি আছে সেখানে হাত দিয়ে আপনি তায়াম্মুম করতে পারবেন না। আপনাকে মাটি জাতীয় কোন দ্রব্যের উপরেই তায়াম্মুম করতে হবে। আশা করছি আপনি গাড়িতে তায়াম্মুমের নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
লেখকের মন্তব্য - তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনি হয়তো তায়াম্মুম অর্থ কি,তায়াম্মুমের সুন্নত কয়টি,তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি,তায়াম্মুমের নিয়ত,তায়াম্মুমের নিয়ম,তায়াম্মুমের ৩ ফরজ,গাড়িতে তায়াম্মুমের নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন।
চেষ্টা করব আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী আরো নতুন নতুন আর্টিকেল আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার। প্রতিদিন নিত্যনতুন ও তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখুন। আপনার কোন পরামর্শ বা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url