ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় - নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ
কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় জানুনএকটা মেয়ে গর্ভধারণের শুরু থেকেই বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে চায়। কারণ সবাই চায় একটা সুস্থ বাচ্চা নরমালে প্রসব করতে। কারণ নরমাল ডেলিভারি সবচেয়ে নিরাপদ। আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানবো ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় - নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে।
নরমাল ডেলিভারিতে অল্প কিছুক্ষণের জন্য তীব্র ব্যথা অনুভব হলেও বাচ্চা প্রসবের পর আর কোন ব্যথা অনুভব হয় না। তবে সিজার করলে সেই কষ্টটা সারা জীবন বহন করতে হয়।
পোস্ট সূচিপত্রঃচলুন তাহলে আর দেরি না করে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে নরমাল ডেলিভারি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় - ভূমিকা
সন্তান প্রসব একজন মায়ের স্বপ্ন। তবে একটা সন্তান প্রসব করার আগে নানান প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খায়। সন্তান গর্ভধারণের পর থেকেই বিভিন্ন ধরনের চিন্তা যেন মাথায় গেঁথে যায়। বিভিন্ন বিষয়ে একজন নতুন মায়ের জানার আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। একজন নতুন মা সন্তান প্রসবের আগে যে বিষয়গুলো জানতে চায় তা হল;
নরমাল ডেলিভারি কতদিনে হয়,ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায়, নরমাল ডেলিভারি ব্যথা কেমন, নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ, কত সপ্তাহে বাচ্চা প্রসব হয়, নরমাল ডেলিভারি হওয়ার ব্যায়াম, গর্ভাবস্থায় জরায়ু মুখ খোলার লক্ষণ, প্রসবের ব্যথা না হলে কি করনীয় সম্পর্কে। বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
নরমাল ডেলিভারি কত দিনে হয়
নরমাল ডেলিভারি কত দিনে হয় সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে নরমাল ডেলিভারি কতদিনে হয় সেই সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই নরমাল ডেলিভারি কতদিনে হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত।
সাধারণত একজন গর্ভবতী মায়ের ডেলিভারি সময় কালকে ধরা হয় ৪০ সপ্তাহ। নরমাল ডেলিভারির জন্য আদর্শ সময় হচ্ছে ৩৭ থেকে ৪২ সপ্তাহ। তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি ৩৭ থেকে ৪২ সপ্তাহের মধ্যেই ডেলিভারি পেইন ওঠে এবং প্রসব হয়ে যায়।
৪২ সপ্তাহ অর্থাৎ ৪১ ও ৪২ সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাইলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে থেকেই আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে ডেলিভারি পেইন ওঠার। অনেকের ৩৭ সপ্তাহের আগেও ডেলিভারি হয়ে যায়। এটি কে প্রি টার্ম ডেলিভারি বলা হয়ে থাকে। সময়ের আগে বাচ্চা প্রসব হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে মা ও শিশুর জীবনের ঝুঁকি থেকে যায়।
বাচ্চা কম ওজনের জন্ম হয় এবং বাচ্চাকে স্পেশাল কেয়ারে রাখতে হয়। সে ক্ষেত্রে কিছু কিছু বাচ্চার জীবন নাশের শঙ্কাও বেড়ে যায়। এবং ৪২ সপ্তাহের পরে ডেলিভারি হলেও কিছু কিছু সমস্যা দেখা যায়। এক্ষেত্রে বাচ্চা পেটের মধ্যে মলত্যাগ করতে পারে এবং সেই মল খেয়ে ফেলতে পারে।
শরীরে ইনফেকশন হতে পারে বা বাচ্চার পাকস্থলীতে মল ঢুকে যেতে পারে। এছাড়াও পানি কমে যেতে পারে। বাচ্চার অক্সিজেনের অভাব হতে পারে। তাই এই দুটো ডেলিভারি কেই রিস্ক হিসেবে ধরা হয়।
ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায়
আপনি কি ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে ডেলিভারি পেইন ওঠানোর উপায় সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই। সাধারণত গর্ভকালীন সময় নয় মাস বা ৪০ সপ্তাহ।
এই সময়ের মধ্যে বা শেষে সচরাচর প্রাকৃতিকভাবে প্রসব বেদনা শুরু হওয়ার কথা। যদি কোন কারণে লেবার পেইন না উঠে তখন ঔষধের মাধ্যমে বা কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে কৃত্তিমভাবে প্রসব বেদনা উঠানো হয়ে থাকে। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ইন্ডাকশন।
এই পদ্ধতি অবলম্বন করার অন্যতম কারণ হচ্ছে নরমালে প্রসব করানো। সাধারণত নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া ইন্ডাকশন করানোর কোন প্রয়োজন নেই। যদি স্বাভাবিক প্রসব বেদনা শুরু হতে অপেক্ষার থেকে বেশি সময় লাগে অর্থাৎ ডেলিভারি ডেট পার হওয়ার এক বা দুই সপ্তাহ পরেও যদি ডেলিভারি পেইন না ওঠে সে ক্ষেত্রে ইন্ডাকশনের মাধ্যমে কৃত্রিম প্রক্রিয়ায় ডেলিভারি পেইন উঠানো হয়।
তবে এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। আশা করছি আপনি ডেলিভারী পেইন উঠানোর উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
নরমাল ডেলিভারি ব্যাথা কেমন
নরমাল ডেলিভারি ব্যথা কেমন হয় সেই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর্টিকেলের এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে নরমাল ডেলিভারি ব্যথা কেমন হয় সেই সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই নরমাল ডেলিভারি ব্যথা কেমন হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত।
ছোটবেলা থেকেই আপনি হয়তো একটি কথা শুনে এসেছেন, কথাটি হল আমাদের মা ঠাকুমারা যখন আমাদের জন্ম দিয়েছে তখন অনেক কষ্ট , অনেক ধৈর্য ও তীব্র যন্ত্রণা সহ্য করে প্রসব ব্যথা পার করে আমাদেরকে জন্ম দিতে হয়েছে। সেই থেকে একটি কথা সবার মাথায় গেঁথে গেছে সন্তান জন্ম দেওয়া হয়তো অনেক কষ্টের।
অথচ আমরা মাথায় রাখি শুধুমাত্র কষ্টের কথাটি, ধৈর্য ও ধৈর্য শক্তির যে ব্যাপারটি উঠে এসেছে সেটি কিন্তু আমরা একবারও ভেবে দেখি না। সৃষ্টিকর্তা যখন আপনাকে নারী রূপে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছে তখনই আপনার মধ্যে এমন ধৈর্য ও সহ্য শক্তি দিয়ে দিয়েছে যে আপনি একটি শিশুকে নরমালে ভূমিষ্ঠ করতে পারবেন।
আপনার যদি প্রথমবার নরমাল ডেলিভারি হতে যায় অর্থাৎ এটি যদি আপনার প্রথম শিশু হয়ে থাকে বা এর আগে আপনার সিজার হয়েছে কিন্তু এবার আপনি নরমালে সন্তান জন্ম দিতে চাচ্ছেন তাহলে আপনার জরায়ুর মুখ খুলতে বেশ খানিকটা সময় লাগবে। অনেক ক্ষেত্রে তো ব্যথা দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত থেকে যায়।
আর যদি আগে একবার নরমালে সন্তান প্রসব করে থাকে তাহলে ১২ থেকে ২৪ ঘন্টা ব্যথা সহ্য করার পরেই সন্তান প্রসব হয়ে যায়। এখন আসল কথা হল আপনি কি ক্রমাগত ভাবে ১২ থেকে ২৪ ঘন্টা বা এক থেকে দুই দিন ব্যথাকে সহ্য করবেন? উত্তর হল না। ৩০০ টি হাড় ভেঙে যাওয়ার মত ব্যথা কিংবা কলিজা টেনে বের করে নেওয়ার মতো ব্যথা এই কথাগুলো আসলে পুরোপুরি ভাবে সত্য নয়।
কারণ ডেলিভারির ব্যথা ক্রমাগতভাবে সহ্য করতে হয় না ধীরে ধীরে এই ব্যথা সহ্য করতে হয় এবং কিছুক্ষণ পরপর সহ্য করতে হয়। এতে আপনি স্বাভাবিক হওয়ার এবং বিশ্রাম নেওয়ার যথেষ্ট পরিমাণ সময় পাবেন। সবচেয়ে বেশি পরিমাণে কষ্ট সহ্য করতে হয় শুধুমাত্র সন্তান বের করার সময় অর্থাৎ আপনার সন্তান যখন সার্ভিক্স এরিয়া দিয়ে বেরিয়ে আসবে তখন।
এই ব্যথা সর্বোচ্চ সহ্য করতে হয় ৫ মিনিট থেকে ১০ মিনিটের মত। এর আগে যে ব্যথা থাকে সেই ব্যথা কিন্তু মায়ের ক্ষমতার মধ্যে থাকে। যখন একজন মায়ের নরমাল ডেলিভারি হওয়ার জন্য ব্যথা উঠতে শুরু করে তখন কিন্তু সেটি টিভি সিরিয়ালের মত হঠাৎ করে ব্যথা উঠলো এবং ডেলিভারি হয়ে গেল এমন নয়।
সন্তান প্রসবের ব্যথা ধীরে ধীরে উঠবে ঠিক যেমন আপনার পিরিয়ডের ব্যথা হয় তেমনি কিছুটা। তবে এই ব্যথাটি কোমর থেকে শুরু হবে মেরুদন্ডের ঠিক মাঝামাঝি অংশ থেকে এবং আস্তে আস্তে করে ব্যথাটি আপনার পেটের চারপাশে ও থাইয়ের দিকে ছড়াতে থাকবে। প্রথম প্রথম যখন ব্যথা উঠবে তখন খুব হালকা ব্যথা হবে।
৫,৬ সেকেন্ড অথবা ১০, ২০ সেকেন্ড থেকে চলে যাবে এবং ব্যথাটি আপনার দুই তিন ঘন্টা পর পর হতে থাকবে। এতটাই হালকা ব্যথা থাকবে যে এই সময়টা পার করা আপনার জন্য কোন ব্যাপার নয়, এমন টিমটিমে ব্যাথা নিয়ে এক দুই দিন আপনি পার করে দিতে পারবেন।
দেখা গেল তিন দিনের দিন আপনার সন্তান হলো তখন বলা হবে তিন দিন প্রসব বেদনা সহ্য করার পর আপনি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। জরায়ুর মুখ তিন সেন্টিমিটার না খোলা পর্যন্ত সন্তান জন্ম দিতে পারবেন না। তাই আপনার জরায়ুর মুখ আস্তে আস্তে করে খুলতে থাকবে আর আপনার ব্যাথার তীব্রতা ও বাড়তে থাকবে। আর মাঝে যে সময়ের গ্যাপটা আছে সেটি কমতে থাকবে।
এভাবে ডেলিভারির সময় ঘনিয়ে আসবে। সবচেয়ে তীব্র ব্যথা সহ্য করতে হয় সন্তান ডেলিভারির সময়। অর্থাৎ সন্তান যখন আপনার একেবারে সার্ভিক্সের মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসবে। আপনার জরায়ুর মুখ ১০ সেন্টিমিটার খুলে গেলেই আপনাকে ডেলিভারি রুমে নিয়ে যাওয়া হবে। আর সেই সময়ই আপনার তীব্র ব্যথা হবে। আশা করছি নরমাল ডেলিভারির ব্যথা কেমন হবে বুঝতে পেরেছেন।
নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ
আপনি কি নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে জেনে নেই। গর্ভের মোট সময় কাল ধরা হয় সাধারণত ৪০ সপ্তাহ।
শেষ মাসিকের প্রথম দিনটিকে গর্ভধারণের প্রথম দিন হিসেবে ধরে প্রসবের তারিখ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে প্রতি মাসকে ৩০ দিন হিসেবে ধরা হয়। এই তারিখের দু সপ্তাহ আগে বা পরে যে কোন তারিখে বাচ্চা প্রসব হতে পারে। ৩৭ সপ্তাহ থেকে ৪২ সপ্তাহের মধ্যে যেকোনো সময় স্বাভাবিক প্রসব হতে পারে।
ডাক্তার আপনার ডেলিভারি যে সম্ভাব্য তারিখ ঠিক করে দিয়েছে, সেই তারিখ অনুযায়ী গর্ভাবস্থার শেষের দিনগুলোতে অথবা শেষ সপ্তাহে অথবা শেষ মাসের দিকে আপনি প্রসব পূর্ববর্তী লক্ষণ গুলো খেয়াল করা শুরু করবেন:
- এটা যদি আপনার প্রথম সন্তান হয়, তাহলে ডেলিভারির কয়েক সপ্তাহ আগে হয়তো আপনি লাইটেনিং বা হালকা লাগার ব্যাপারটা অনুভব করতে পারবেন। লাইটেনিং অর্থ আপনার শিশু এখন পেটের নিম্নভাগে অর্থাৎ পেলভিক অঞ্চলে চলে এসেছে।
- শিশু নিম্নভাগে চলে আশায় বুকের হাড়ের ঠিক নিচে যে চাপ এত দিন ধরে পড়তো, সেটা এখন কমে যাবে। যার ফলে আপনার নিঃশ্বাস নেওয়ার সহজ মনে হবে।
- এছাড়া গর্ভাবস্থায় যদি বুকে জ্বালাপোড়ার সমস্যা থাকে, সেটাও এই সময়ে এসে কিছুটা কমে যেতে পারে।
- ডেলিভারির কিছুদিন অথবা কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে সারভিক্সের কানেকটিভ টিস্যুর পরিবর্তনের ফলে সারভিক্স ধীরে ধীরে পাতলা ও প্রশস্ত হতে থাকে। সারভিক্সের পাতলা হয়ে যাওয়াকে বলে এফেসমেন্ট এবং এর মুখ খোলা কে বলে ডায়লেশন।
- আপনার যদি পুর্বে শিশু জন্ম দেওয়ার অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে প্রসব শুরু হওয়ার আগে সারভিক্স ১ থেকে ২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত প্রশস্ত হতে পারে।
- কিন্তু আপনার প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে মনে রাখবেন গর্ভাবস্থা যদি ৪০ সপ্তাহ হয়ে যায় এবং সারভিক্স এক সেন্টিমিটার এর মতো প্রশস্ত হয় তবুও এ কথা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয় যে প্রসব সন্নিকটে।
- ডেলিভারি সম্ভাব্য তারিখ যখন খুব কাছে চলে আসবে, আপনার ডাক্তার কিংবা যিনি ডেলিভারি করাবেন তিনি হয়তো যোনি পরীক্ষা করে দেখতে পারেন যে সারভিক্স এফেসমেন্ট এবং ডায়ালেশন প্রক্রিয়া শুরু করেছে কিনা।
- ডেলিভারির সময় যখন সন্নিকটে এবং সারভিক্স ঠিকঠাক ভাবে এফেস এবং ডায়ালেট হচ্ছে, তখন যোনি থেকে মিউকাস প্লাগ বের হতে পারে।
- মিউকাস প্লাগ হল এক ধরনের থকথকে পদার্থ যা গর্ভাবস্থায় সার্ভিকাল ক্যানেল জমাট করে রাখে এবং প্রসবের আগ মুহূর্তে বেরিয়ে আসে।
- মিউকাস প্লাগ একেবারে একসাথে দলার মত বেরিয়ে আসতে পারে, আবার অনেক বেশি যোনিস্রাব এর মত ধীরে ধীরে কয়েকদিন বের হতে পারে।
- সারভিক্স যখন কোমল এবং প্রশস্ত হতে থাকে, তখন হালকা রক্ত যুক্ত গোলাপী যোনি স্রাব বা উজ্জ্বল লাল বর্ণের রক্ত বের হতে পারে।
- যখন মিউকাস প্লাগ নিঃসৃত হয়, এর সাথেই যদি রক্ত বের হয়, তাহলে মিউকাসে রক্ত লেগে থাকতে পারে আবার এমনিতেও রক্তপাত হতে পারে।
- অনেক সময় যৌন মিলন অথবা যোনি পরীক্ষার সময় মিউকাস প্লাগ বাধাগ্রস্ত হয়, যার ফলে অতি নিকটে প্রসবের সম্ভাবনা না থাকলেও রক্তপাত ঘটতে পারে।
- মনে রাখবেন রক্তপাত যদি অনেক বেশি হয়, তাহলে অবশ্যই সাথে সাথে ডাক্তারকে তা জানান।
কত সপ্তাহে বাচ্চা প্রসব হয়
কত সপ্তাহে বাচ্চা প্রসব হয় সেই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে কত সপ্তাহে বাচ্চা প্রসব হয় সেই সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা জেনে নেই কত সপ্তাহে বাচ্চা প্রসব হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত।সাধারণত একজন গর্ভবতী মায়ের ডেলিভারি সময় কালকে ধরা হয় ৪০ সপ্তাহ। নরমাল ডেলিভারির জন্য আদর্শ সময় হচ্ছে ৩৭ থেকে ৪২ সপ্তাহ। তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি ৩৭ থেকে ৪২ সপ্তাহের মধ্যেই ডেলিভারি পেইন ওঠে এবং প্রসব হয়ে যায়।
৪২ সপ্তাহ অর্থাৎ ৪১ ও ৪২ সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাইলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে থেকেই আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে ডেলিভারি পেইন ওঠার।
নরমাল ডেলিভারি হওয়ার ব্যায়াম
নরমাল ডেলিভারি হওয়ার ব্যায়াম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে নরমাল ডেলিভারি হওয়ার ব্যায়াম সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা নরমাল ডেলিভারি হওয়ার ব্যায়াম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
প্রাকৃতিকভাবে নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ব্যায়াম করা। আপনি যদি প্রাকৃতিকভাবে নরমাল ডেলিভারির পেইন উঠাতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ব্যায়াম করতে হবে। এক্ষেত্রে বেশ কিছু ব্যায়াম রয়েছে যেগুলো করার মাধ্যমে আপনি খুব সহজে নরমাল ডেলিভারি করাতে পারবেন।
চেষ্টা করবেন গর্ভাবস্থার মাঝামাঝি সময় থেকে ব্যায়াম করতে। অন্ততপক্ষে সাত মাস থেকে করলে আরো ভালো হয়। যদি না পারেন তবে অবশ্যই ডেলিভারি হওয়ার আগে যদি পেইন না ওঠে তবে নিচে উল্লেখিত এই ব্যায়াম গুলো করতে পারেন।
স্কোয়ারট এক্সারসাইজ : পা দুটো ফাঁকা করে হাত দুটো সামনের দিকে হাত জোড় করে নিচের দিকে বসার চেষ্টা করবেন। যতটা সম্ভব বসবেন এবং উঠবেন। এভাবে ১০ বার করে দুটো স্টেপ করবেন। তবে যদি কেউ অসুবিধা অনুভব করেন বা বসতে না পারেন সে ক্ষেত্রে তাদের এই এক্সারসাইজ না করাই ভালো।
বাটারফ্লাই এক্সারসাইজ : পা দুটো জানু পেরে বসে তারপর পা দুটো উঠানো নামানোর চেষ্টা করতে হবে। অর্থাৎ দুই দিকে দুইটি পা একবার ফ্লোরের সাথে লাগানোর চেষ্টা করতে হবে একবার উপরের দিকে উঠানোর চেষ্টা করবেন। এভাবে পাঁচ থেকে দশ মিনিট এই ব্যায়ামটি করবেন।
উপরে উল্লেখিত দুইটা এক্সারসাইজই সারভিক্সের মুখ খুলতে সাহায্য করবে এবং আপনাকে নরমাল ডেলিভারিতে সাহায্য করবে।
গর্ভাবস্থায় জরায়ু মুখ খোলার লক্ষণ
গর্ভাবস্থায় জরায়ু মুখ খোলার লক্ষণ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আরটিকালের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে গর্ভাবস্থায় জরায়ু মুখ খোলা লক্ষণ সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ খোলা লক্ষণ সম্পর্কে জেনে নেই।
নরমাল ডেলিভারির জন্য শরীর আগে থেকেই প্রস্তুত হতে থাকে। আর এর জন্য কিছু লক্ষণ দেখে তা বোঝা যায়। নরমাল ডেলিভারির আগ দিয়ে সপ্তাহ গুলো যখন পরিপূর্ণ হয়ে যায় অর্থাৎ আপনি ডেলিভারির কাছাকাছি চলে আসেন তখন আপনার বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আসে যেমন;
- এটা যদি আপনার প্রথম সন্তান হয়, তাহলে ডেলিভারির কয়েক সপ্তাহ আগে হয়তো আপনি লাইটেনিং বা হালকা লাগার ব্যাপারটা অনুভব করতে পারবেন। লাইটেনিং অর্থ আপনার শিশু এখন পেটের নিম্নভাগে অর্থাৎ পেলভিক অঞ্চলে চলে এসেছে।
- শিশু নিম্নভাগে চলে আশায় বুকের হাড়ের ঠিক নিচে যে চাপ এত দিন ধরে পড়তো, সেটা এখন কমে যাবে। যার ফলে আপনার নিঃশ্বাস নেওয়ার সহজ মনে হবে।
- এছাড়া গর্ভাবস্থায় যদি বুকে জ্বালাপোড়ার সমস্যা থাকে, সেটাও এই সময়ে এসে কিছুটা কমে যেতে পারে।
- ডেলিভারির কিছুদিন অথবা কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে সারভিক্সের কানেকটিভ টিস্যুর পরিবর্তনের ফলে সারভিক্স ধীরে ধীরে পাতলা ও প্রশস্ত হতে থাকে। সারভিক্সের পাতলা হয়ে যাওয়াকে বলে এফেসমেন্ট এবং এর মুখ খোলা কে বলে ডায়লেশন।
- আপনার যদি পুর্বে শিশু জন্ম দেওয়ার অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে প্রসব শুরু হওয়ার আগে সারভিক্স ১ থেকে ২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত প্রশস্ত হতে পারে।
- কিন্তু আপনার প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে মনে রাখবেন গর্ভাবস্থা যদি ৪০ সপ্তাহ হয়ে যায় এবং সারভিক্স এক সেন্টিমিটার এর মতো প্রশস্ত হয় তবুও এ কথা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয় যে প্রসব সন্নিকটে।
- ডেলিভারি সম্ভাব্য তারিখ যখন খুব কাছে চলে আসবে, আপনার ডাক্তার কিংবা যিনি ডেলিভারি করাবেন তিনি হয়তো যোনি পরীক্ষা করে দেখতে পারেন যে সারভিক্স এফেসমেন্ট এবং ডায়ালেশন প্রক্রিয়া শুরু করেছে কিনা।
- ডেলিভারির সময় যখন সন্নিকটে এবং সারভিক্স ঠিকঠাক ভাবে এফেস এবং ডায়ালেট হচ্ছে, তখন যোনি থেকে মিউকাস প্লাগ বের হতে পারে।
- মিউকাস প্লাগ হল এক ধরনের থকথকে পদার্থ যা গর্ভাবস্থায় সার্ভিকাল ক্যানেল জমাট করে রাখে এবং প্রসবের আগ মুহূর্তে বেরিয়ে আসে।
- মিউকাস প্লাগ একেবারে একসাথে দলার মত বেরিয়ে আসতে পারে, আবার অনেক বেশি যোনিস্রাব এর মত ধীরে ধীরে কয়েকদিন বের হতে পারে।
- সারভিক্স যখন কোমল এবং প্রশস্ত হতে থাকে, তখন হালকা রক্ত যুক্ত গোলাপী যোনি স্রাব বা উজ্জ্বল লাল বর্ণের রক্ত বের হতে পারে।
- যখন মিউকাস প্লাগ নিঃসৃত হয়, এর সাথেই যদি রক্ত বের হয়, তাহলে মিউকাসে রক্ত লেগে থাকতে পারে আবার এমনিতেও রক্তপাত হতে পারে।
- অনেক সময় যৌন মিলন অথবা যোনি পরীক্ষার সময় মিউকাস প্লাগ বাধাগ্রস্ত হয়, যার ফলে অতি নিকটে প্রসবের সম্ভাবনা না থাকলেও রক্তপাত ঘটতে পারে।
- মনে রাখবেন রক্তপাত যদি অনেক বেশি হয়, তাহলে অবশ্যই সাথে সাথে ডাক্তারকে তা জানান।
প্রসবের ব্যাথা না হলে কি করনীয়
প্রসবের ব্যথা না হলে কি করনীয় সেই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আর্টিকালের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে প্রসবের ব্যথা না হলে কি করণীয় সে সম্পর্কে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে আমরা প্রসবের ব্যথা না হলে কি করণীয় সে সম্পর্কে জেনে নেই।
প্রাকৃতিকভাবে প্রসবের ব্যথা না উঠলে বেশ কিছু উপায় রয়েছে যেগুলো অবলম্বন করে প্রসবের ব্যথা উঠানো সম্ভব। নিচে উল্লেখিত পাঁচটি উপায় রয়েছে যে উপায়গুলো অবলম্বন করলে প্রসবের ব্যথা উঠানো যেতে পারে। চলুন তাহলে জেনে নেই উপায় গুলো সম্পর্কে।
১. গর্ভাবস্থায় মায়েদের কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম রয়েছে যেগুলো করলে খুব সহজেই ডেলিভারি পেইন উঠানো যায়। তাই গর্ভাবস্থার মাঝামাঝি থেকে নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।
২. এছাড়াও ডেলিভারি পেইন উঠাতে বেশি বেশি খেজুর খেতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই প্রতিদিন তিনটি করে খেজুর খেতে পারেন। এছাড়াও সপ্তম মাস থেকে নবম মাস পর্যন্ত ছয়টি করে খেজুর খাবেন। এই পদ্ধতি ও আপনাকে নরমাল ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত করবে।
জরায়ুকে শক্তিশালী করবে এবং সঠিক সময়ে সারভিক্স এর মুখ খুলতে সাহায্য করবে। এছাড়াও মায়ের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্ত সাপ্লাই করবে।
৩. খেজুর খাওয়ার পরে যে কাজটি করতে পারেন তা হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঝাল খাবার খাওয়া। যদি সময় অতিবাহিত হতে থাকে এবং আপনার ডেলিভারি পেইন না ওঠে তবে আপনি ঝাল জাতীয় খাবার বেশি করে খান। যেটুকু ঝাল আপনি সহ্য করতে পারেন তার চেয়ে বেশি পরিমাণে ঝাল খাবেন।
ঝাল জাতীয় খাবার জরায়ুর কন্ট্রাকশন সৃষ্টি করে। সম্প্রসারণ এবং সংকোচনকে সৃষ্টি করে। পাশাপাশি জরায়ুর মুখ হলে এবং প্রসব বেদনা উঠতে সাহায্য করে থাকে।
৪. চতুর্থ কাজটি হচ্ছে আপনার নিপলে স্পন্দন সৃষ্টি করা। নিরবে একাকিত্বে এই কাজটি করতে হবে। এর জন্য আপনি একটা ঘরে একা বসবেন। ঘর থেকে অন্ধকার করে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। চোখ বন্ধ করে আপনার নিপল দুটোতে আস্তে আস্তে করে হাত ঘুরাবেন।
এবং অনুভব করবেন যে আপনার সন্তান দুধ পান করছে। প্রয়োজনে আপনার নিপল দুটো একটু জোরে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে করে আপনার কন্ট্রাকশন সৃষ্টি হতে পারে। আস্তে আস্তে ব্যাথা উঠতে থাকবে এবং ব্যথার পরিমাণ বাড়ানোর জন্য আরো কয়েকবার এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন।
৫. পঞ্চম এবং সর্বশেষ কাজ হচ্ছে এই সময় স্বামী সহবাস করা। অনেকেই মনে করে থাকেন যে গর্ববস্থার এই সময় স্বামী সহবাস করা যাবে না। তবে সুস্থ ও গর্ববতী মহিলারা ডেলিভারির আগের দিনও স্বামী সহবাস করতে পারেন এতে কোন সমস্যা নেই।
স্বামী সহবাস করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন পেটে কোন বাড়তি চাপ না পরে এবং লিঙ্গ পূর্ণ প্রবেশ না করানো হয়। তবে স্বামীর বীর্যপাত অবশ্যই জরায়ুর ভেতর করতে হবে। এই বীর্যপাতের ফলে জরায়ুর কন্ট্রাকশন সৃষ্টি হবে জরায়ুর মুখ খুলতে শুরু করবে এবং ব্যথা উঠতে শুরু করবে।
লেখকের মন্তব্য - ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায়
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনি হয়তো ডেলিভারি পেইন ওঠানোর উপায়, নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন।
প্রতিদিন নিত্যনতুন ও তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখুন। আপনার কোন পরামর্শ বা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আয়াত ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url